প্রস্তুতি: গরমের ছুটি কাটিয়ে স্কুল খোলার আগে ঝাড়পোঁছ। বুধবার, বাঙুরের একটি স্কুলে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
দীর্ঘায়িত হতে হতে প্রায় দেড় মাসের গরমের ছুটির পরে সরকারি, সরকার-পোষিত এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলি খুলতে চলেছে আজ, বৃহস্পতিবার। কিছু বেসরকারি স্কুল দিনকয়েক আগে খুলে গেলেও বেশির ভাগ বেসরকারি স্কুলই আজ খুলছে। তবে এখনও কমেনি গরমের তীব্রতা। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, গরম থাকলেও এ বার স্কুল খুলে যাওয়াই ভাল। তবে, সাবধানতা অবলম্বন করে পড়ুয়াদের স্কুলে যেতে হবে। শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, এত দিন পরে স্কুল খুলছে, তাই তাঁরা পড়ুয়াদের জন্য অতিরিক্ত ক্লাসেরও ব্যবস্থা করছেন।
বাঙুরের নারায়ণ দাস বাঙুর মেমোরিয়াল মাল্টিপারপাস স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া জানালেন, দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় স্কুলের বাগানে ঝোপঝাড় গজিয়ে গিয়েছিল। সে সব সাফ করা হচ্ছে। পরিষ্কার হচ্ছে ঘর। মিড-ডে মিলের বাসনপত্র মাজার কাজও শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ছুটি থাকার ফলে পাঠ্যক্রম শেষ করতে অসুবিধা হতে পারে। তার জন্য অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করেছি আমরা। টিফিনের সময় কিছুটা কমিয়ে অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়া হবে। শিক্ষকদের এখন আর খুব প্রয়োজন না হলে ছুটি নিতে বারণ করা হয়েছে।”
যোধপুর পার্ক বয়েজ় স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিত সেন মজুমদার জানান, পড়ুয়াদের স্বাগত জানানোর জন্য স্কুলের বাগান পরিষ্কার করে রাখা হয়েছে। ক্লাসঘর পরিষ্কার করার পাশাপাশি সব সিলিং পাখা ঠিক মতো কাজ করছে কি না, দেখা হয়েছে তা-ও। অমিত বলেন, “আমাদের স্কুলে গরমের ছুটিতে অনলাইন ক্লাস হয়েছে। স্কুল খুললে কিছু অতিরিক্ত অফলাইন ক্লাসও নেওয়া হবে। আমরা সেই মতো রুটিন তৈরি করছি।”
রোজ অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়া সম্ভব না হলে শনিবার অতিরিক্ত ক্লাসের পরিকল্পনা করা হয়েছে মিত্র ইনস্টিটিউশনের ভবানীপুর শাখায়। প্রধান শিক্ষক রাজা দে বললেন, “দৈনন্দিন রুটিনে স্কুল ছুটি হয় বিকেল ৪টে ৪০ মিনিটে। এর পরে অতিরিক্ত ক্লাস কখন হবে? তাই শনিবার অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়ার পরিকল্পনা করছি।”
মাঝেমধ্যে বৃষ্টির দেখা মিললেও গরম সে ভাবে কমেনি। তাই চিকিৎসক থেকে শুরু করে প্রধান শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, স্কুলে আসার এবং বাড়ি যাওয়ার সময়ে গরমের হাত থেকে বাঁচতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। শিশুরোগ চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ বলেন, “গরমের মধ্যেই স্কুল খুলে যাক। গরম সহ্য করেই ক্লাস করতে হবে। কোন পড়ুয়ার ভবিষ্যতে কী পেশা হবে, কেউ জানে না। এমন পেশাও তো কারও হতে পারে যে, তাঁকে কাজের জন্য বাইরে বেশি ঘুরতে হবে। তাই এখন থেকেই দরকার গরম সহ্য করে ক্লাস করা। তবে পড়ুয়ারা এখন যেন হালকা পোশাক পরে। বেশি করে জল খায়। স্কুল থেকে ফিরে এসে স্নান করলে ভাল হয়। স্নানের সময়ে কোনও ধরনের তেল না মাখাই ভাল। গরমে রোমকূপ পরিষ্কার থাকা জরুরি।” আর এক শিশুরোগ চিকিৎসক সুচন্দ্রা মুখোপাধ্যায় বলেন, “গরমে রোদের মধ্যে স্কুলের মাঠে ছোটাছুটি করে খেলা থেকে বিরত থাকা ভাল। স্কুল থেকে তীব্র রোদ মাথায় নিয়ে বাড়ি ফেরার পরে সঙ্গে সঙ্গে এসি চালানো যাবে না। তখন সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা জলও না খাওয়াই ভাল। প্রয়োজনে দিনে দু’-তিন বার স্নান চলতে পারে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy