পরীক্ষা: বিস্ফোরণস্থলে তদন্তে ফরেন্সিক দলের এক সদস্য। সোমবার, ট্যাংরার পুলিন খটিক রোডে। নিজস্ব চিত্র।
গ্যাসের উপরে কড়াইয়ে রান্না বসিয়ে বাইরে গিয়েছিলেন গৃহকর্তা। কিছু ক্ষণ পরেই আচমকা বিস্ফোরণের কান ফাটানো শব্দে কেঁপে উঠল গোটা পাড়া। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আগুন ধরে গেল ঘরে। কিছুটা দূরে উড়ে গিয়ে পড়ল টালি এবং অ্যাসবেস্টসের চাল। বিস্ফোরণের অভিঘাতে ভেঙে পড়ল ঘরের দেওয়াল! আশপাশের চার-পাঁচটি বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হল।
সোমবার সকালে এই ঘটনা ঘটেছে কলকাতা পুরসভার ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডের ট্যাংরার পুলিন খটিক রোডে। বিস্ফোরণে কেউ আহত না হলেও আতঙ্কে সকলে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। প্রতিবেশীরাই জল ঢেলে আগুন নেভান। খবর পেয়ে যায় কলকাতা পুলিশ। দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদের অনুমান, এটি ভেপার ক্লাউড বিস্ফোরণ। গ্যাস সিলিন্ডারের রেগুলেটরে ত্রুটির কারণে এমন ঘটে থাকতে পারে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ৫১, পুলিন খটিক রোডে একাই থাকেন নিমাই দাস নামে এক ব্যক্তি। পাশে থাকেন তাঁর আত্মীয়েরা। নিমাইবাবু পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। তিনি জানান, এ দিন সেই সংক্রান্ত কাজের জন্য এক জনকে ডেকেছিলেন। ওই ব্যক্তি আসার পরে নিমাইবাবু গ্যাসে আঁচ কমিয়ে বাইরে যান। কিছু পরেই ঘটে বিস্ফোরণ। খবর পেয়ে নিমাইবাবু ফিরে এসে দেখেন, ঘর লন্ডভন্ড। তিনি বলেন, ‘‘কী ভাবে এমন হল, জানি না। রান্না চাপিয়ে সবে একটু সময়ের জন্য বাইরে গিয়েছিলাম। তার মধ্যেই এই ঘটনা।’’
নিমাইবাবুর এক আত্মীয় শম্পা দাস বলেন, ‘‘আমার ভাশুর রান্না করতে করতে আঁচ কমিয়ে বাইরে যান। ঘরের দরজা-জানলা বন্ধ ছিল। আচমকা ঘটে বিস্ফোরণ। আওয়াজ শুনে ভয়ে ছেলেমেয়েকে নিয়ে বেরিয়ে আসি।’’ নিমাইবাবুদের আর এক প্রতিবেশী জানান, বিস্ফোরণে তাঁর ঘরের অ্যাসবেস্টসের চাল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। রিনা মান্না নামে এক মহিলা বলেন, ‘‘সকালে ঘরে একাই ছিলাম। হঠাৎ দেখি, কোথা থেকে টালি এবং অ্যাসবেস্টস উড়ে এসে পড়ছে। সঙ্গে পোড়া গন্ধ। ভয়ে বাইরে বেরিয়ে আসি।’’ বাচ্চু গুহ নামে এক ব্যক্তি জানান, তাঁর শৌচাগারের টালি ভেঙে গিয়েছে।
দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করে ফরেন্সিক দল। প্রাথমিক ভাবে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের অনুমান, এটি ভেপার ক্লাউড বিস্ফোরণ। তার অভিঘাতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গ্যাস সিলিন্ডারের ত্রুটি মেলেনি। সমস্যা ছিল রেগুলেটরে। তার জন্যই ওই জ্বালানি বাইরের বাতাসের সংস্পর্শে এসে বিস্ফোরণ ঘটে বলে অনুমান।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডের কোঅর্ডিনেটর তথা কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য স্বপন সমাদ্দার। তিনি জানান, ওই পরিবারগুলিকে আপাতত ত্রিপল দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের আবেদন করতে বলা হয়েছে। তাঁরা যাতে ফের ঠিক মতো বসবাস করতে পারেন, তার ব্যবস্থা করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy