ভুয়ো টিকা-কাণ্ড নিয়ে বিতর্কের জেরে তালতলায় রবীন্দ্রমূর্তির ফলক তুলে ফেলা হল। রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে ওই ফলকে নাম ছিল অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেবের। নামের পাশে পরিচয় হিসেবে লেখা ছিল, তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যুগ্মসচিব। দেবাঞ্জনের একের পর এক কীর্তি সামনে আসার পরই ওই ফলকে নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে তাঁর নাম থাকা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। তাতেই শুক্রবার বিকেলে ফলকটি তুলে ফেলা হয়।
দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে যখন তোলপাড়, শুক্রবার সেই সময় তালতলায় রবীন্দ্রমূর্তির পাদদেশে হাজির হন এলাকার লোকজন। প্রথমে হাতুড়ি, ছেনি দিয়ে মূর্তির নীচ থেকে ফলকটি তুলে নেওয়া হয়। তার পর হাতুড়ি দিয়ে সেটি টুকরো টুকরো ভেঙে ফেলেন এক ব্যক্তি। শেষে বস্তায় ভরে ফেলে দেওয়া হয় ভাঙা টুকরোগুলো। তালতলার ত্রিপুরা শঙ্করসেন শাস্ত্রী স্মৃতি গ্রন্থাগারের সদস্যরা জানিয়েছেন, সেখানে যাতায়াত ছিল দেবাঞ্জনের। অন্যদের মতো তাঁরাও প্রতারণার শিকার।
কলকাতা পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য অতীন ঘোষ এবং ইন্দ্রাণী সাহা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তদারকিতেই ফলকটি সরিয়ে ফেলা হল। তাঁরা জানিয়েছেন, অনুষ্ঠানের দিন রাজ্যের কোনও মন্ত্রী-বিধায়ক সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। বিষয়টি নিয়ে নজরদারি রাখা উচিত ছিল বলে স্বীকার করলেও, অতীনের দাবি, মূর্তি উন্মোচনে তাঁকে আমন্ত্রণই জানানো হয়নি।
যদিও এই ফলক সরানো নিয়েও বিজেপি-র থেকে কটাক্ষ উড়ে এসেছে। রাজ্যে দলের মিডিয়া সেলের প্রধান সপ্তর্ষি চৌধুরীর অভিযোগ, স্থানীয় সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রী তথা প্রাক্তন মেয়র ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে ওই ফলকে উজ্জ্বল উপস্থিতি ছিল টিকা কেলেঙ্কারির নায়কের। ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে আসছে, তাই ফলক ভেঙে প্রমাণ লোপাট করা হচ্ছে বলে দাবি সপ্তর্ষির।
ভেঙে ফেলা হলো তালতলায় রবীন্দ্রনাথের মূর্তি উন্মোচনের ফলক।
— Saptarshi Chowdhury (@saptarshiOFC) June 25, 2021
স্থানীয় সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রী, মেয়র জনাব ফিরাদ হাকিম সাহেবদের সাথে উজ্জ্বল উপস্থিতি ছিল ভ্যাকসিন কেলেঙ্কারির নায়কের।
এই ফলক ভাঙার অর্থ তথ্য প্রমাণ লোপাট করা।ঝুলি থেকে বেড়াল বেরিয়ে আসছে??@AITCofficial pic.twitter.com/Zm3ZNhDk2g
গত ২৬ ফেব্রুয়ারি তালতলার ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডে শীতলামন্দিরের কাছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ওই মূর্তিটির উন্মোচন হয়। তার নীচে বসানো ফলকে ফিরহাদ হাকিম, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবাশিষ কুমার, নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়, তাপস রায় এবং অতীন ঘোষের সঙ্গে দেবাঞ্জনের নাম উল্লেখ ছিল। ভুয়ো টিকা-কাণ্ডের পর্দাফাঁস হতে নয়নাই বিষয়টি নিয়ে তালতলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। জানান, তাঁদের না জানিয়েই ফলকে নাম লেখা হয়েছে। অনুষ্ঠানে তাঁরা কেউ উপস্থিতই ছিলেন না।