Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪

রেল কাজ শেষ করলেই ভাঙা হবে টালা সেতু

সিদ্ধান্ত হয়েছে, গঙ্গার কাছাকাছি কাশীপুর রেলসেতুর পশ্চিম দিকে ভারী এবং সব ধরনের পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলের জন্য একটি লেভেল ক্রসিং তৈরি করা হবে।

যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করে বড়জোর অতিরিক্ত দু’মাস সেতু ব্যবহার করা হল।

যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করে বড়জোর অতিরিক্ত দু’মাস সেতু ব্যবহার করা হল।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২০ ০৯:০০
Share: Save:

টালা সেতুর আয়ু ফুরিয়েছে আগেই। তার পরেও পরিস্থিতিগত কারণে যান নিয়ন্ত্রণ করে অন্তত দু’মাস ওই সেতু ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেই সময়সীমাও ফুরিয়েছে ডিসেম্বরে। সেটা মনে করিয়ে দিয়ে রেলকে বকেয়া কাজ শেষ করার আবেদন জানাল রাজ্য সরকার। ভাঙার কাজের জন্য দরপত্রের মাধ্যমে ইতিমধ্যে নির্বাচিত সংস্থাকে ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ দিয়েছে পূর্ত দফতর। এ বার রেলের সহযোগিতা পেলেই সেতু ভাঙার কাজ শুরু করে দেবে রাজ্য।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, পরিদর্শন ও পরীক্ষার পরে সেতু-বিশেষজ্ঞ ভিকে রায়না গত অক্টোবরেই নিজের চূড়ান্ত রিপোর্টে জানিয়ে দিয়েছিলেন, যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করে বড়জোর অতিরিক্ত দু’মাস ওই সেতু ব্যবহার করা যেতে পারে। পূর্ত-বিশেষজ্ঞেরাও সেই রিপোর্টের পক্ষে মত দেন। সেই বর্ধিত সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে ডিসেম্বরে। এখন সেতু ভাঙার কাজ শুরু না-করলে যে-কোনও সময়েই বিপদ ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পূর্তকর্তারা। রেল-কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তাঁদের ‘অসমাপ্ত’ কাজ শেষ করার আর্জি জানিয়েছে রাজ্য। কী কী কাজ বাকি আছে, তা-ও জানানো হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রের দাবি। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘বিভিন্ন ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করে অতিরিক্ত সময়েও সেতু ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু আর সেটা করা যুক্তিযুক্ত নয়। মাঝেরহাট সেতুর মতো কোনও বিপর্যয় ঘটলে সমস্যা বাড়বে বই কমবে না।’’

সিদ্ধান্ত হয়েছে, গঙ্গার কাছাকাছি কাশীপুর রেলসেতুর পশ্চিম দিকে ভারী এবং সব ধরনের পণ্যবাহী গাড়ি চলাচলের জন্য একটি লেভেল ক্রসিং তৈরি করা হবে। সেখানে রেললাইনের উপরের অংশের কাজ করবে রেল এবং রাস্তা-সহ বাকি সব কাজের দায়িত্ব রাজ্যের। ইতিমধ্যে ওই খাতে ১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য। এ বার রেলকে তাদের অংশের কাজ দ্রুত করার আর্জি জানিয়েছে তারা।

টালা সেতু ভাঙতে হলে আগে মাটির তলায় তারের মতো ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন ধরনের ‘ইউটিলিটি সার্ভিস’ বা জরুরি পরিষেবার স্থান পরিবর্তন করতে হবে। স্থির হয়েছে, ৫০০ মিলিমিটার ব্যাসের পাইপের মধ্যে সেগুলি ভরে ‘মাইক্রো টানেলিং’ ব্যবস্থায় তা মাটির দু’-আড়াই মিটার নীচে দিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। তার পরে সেতু ভাঙা শুরু করা যাবে।

প্রশাসনের এক কর্তা জানান, সেতু ভাঙার জন্য রাজ্য সরকার দরপত্রের মাধ্যমে সংস্থা বেছে নিয়েছে। কাজের বরাতও দেওয়া হয়েছে তাদের। এ বার এই সব কাজে রেলের সহযোগিতা পেলে দ্রুত কাজ শুরু করা যায়। সব ঠিক থাকলে ডিসেম্বরেই কাজ শুরু করা যেত। সেটা হয়নি। তাই যত দ্রুত সম্ভব ভাঙার কাজ শুরু করতে রেলের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। রাজ্য কাজ শুরু করতে প্রস্তুত।

রেলের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রয়োজনীয় সব তথ্য ও প্রশ্নের উত্তর জানিয়ে রেল বোর্ডে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, দ্রুত উত্তর পাওয়া যাবে।’’

রেল-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা বৃহস্পতিবারেই বৈঠক করেছেন। দু’পক্ষের সমন্বয়ের জন্য তৈরি করা হয়েছে একটি কমিটিও। রেলও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। পূর্ত দফতরের কর্তাদের আশা, এ বার বাকি সব কাজ দ্রুত শেষ করা যাবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Tala Bridge Indian Railway KMDA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE