প্রতিবাদী: মঙ্গলবার বইমেলায় স্বরা ভাস্কর। নিজস্ব চিত্র
স্বৈরাচারের লক্ষণ ছোট ছোট সঙ্কেতে মালুম হয়। যেমন, গোড়ায় হয়তো এটা খাওয়া যাবে না, সেটাই খেতে হবে বলে নিষেধাজ্ঞা জারি হল। তার পরে মেয়েদের পোশাক-বিধি চাপানোর চেষ্টা হল। যেমন, কাশীর বিশ্বনাথ দর্শনে গেলে শাড়ি পরতেই হবে!
কোনওটাই গল্প নয়। তবু এ দেশে স্বৈরাচারের আখ্যানের টুকরো টুকরো গল্প শোনাচ্ছিলেন বলিউডের প্রতিবাদী মুখ স্বরা ভাস্কর। টুইটার-যোদ্ধা নামেই যিনি পরিচিত। নিজেও ঠাট্টা করেন, ‘‘সপ্তাহে অন্তত এক বার ‘গৈরিক ভক্তকুলের’ শাপান্তে টুইট-বৃষ্টি বিনা আমি বেঁচে আছি কি না, বুঝতেই পারি না।’’ মঙ্গলবার বইমেলার মাঠেও দেশের শাসকপক্ষকে দুরমুশ করলেন তিনি। সাহিত্য বা গল্পের শক্তি এবং সমসময় নিয়ে কথা বলছিলেন স্বরা। বললেন, ‘‘গল্পের শক্তি কম নয়। তাই তো সিএএ নিয়ে কর্নাটকে নাটক হলে স্কুলপড়ুয়াদেরও জেরায় জেরবার করতে ছাড়ে না পুলিশ।’’
বলিউডে গল্প বাছতে গিয়েও এখন হিমশিম দশা। ‘‘এ দেশে ১৩৭ কোটি কারণে লোকের ভাবাবেগে লাগে। ব্রিটিশ আমলের দেশদ্রোহ আইনের আতঙ্ক কিংবা ছবির গল্প সেন্সরে আটকে যাওয়ার ভয়ে বলিউড সদাই তটস্থ,’’ বলছিলেন স্বরা। তবু এই দম বন্ধ পরিস্থিতিতে দিল্লির শাহিনবাগ বা কলকাতার পার্ক সার্কাস বুঝিয়ে দিচ্ছে, দেশের মুসলিম মেয়েরা, ছাত্রসমাজ এবং সাধারণ শান্তিকামী নাগরিকেরাই আলোর দিশারী।
টুইটারে অষ্টপ্রহর ‘গেরুয়া বাহিনী’র নিশানা স্বরা বলছিলেন, ‘‘শুটিংয়ের ঝঞ্ঝাটে প্রতিবাদে যেতে পারি না! কিন্তু আমি কৃতজ্ঞ প্রতিবাদীদের কাছে। এখন মনে হয়, দেরি করেছি। গোমাংস রাখা নিয়ে সন্দেহে আখলাককে খুন করার পরেই সবার মাঠে নামা উচিত ছিল।’’ জেএনইউ-র প্রাক্তনী ক্ষুব্ধ দেশে ‘হোয়াটসঅ্যাপ বিশ্ববিদ্যালয়ের’ পরিচালনায় ইতিহাসের বিকৃতি নিয়েও। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘পরিকল্পিত ভাবে ছাত্র বা বিশিষ্টজনেদের উপরে হামলা চলছে।’’ বিভিন্ন ছবিতে লড়াকু মেয়ের চরিত্রে থাকা স্বরা এখন পার্ক সার্কাস বা শাহিনবাগে এই ধরনের প্রতিবাদী মেয়েদেরই দেখছেন। এ দিনই সংসদে এনআরসি নিয়ে কেন্দ্র
এখনই এগোবে না বলে অমিত শাহের মন্তব্য প্রসঙ্গে স্বরা বলেন, ‘‘এটা তো খুব ভাল কথা। তবে এনপিআর-ও আদতে এনআরসি-র নামান্তর। সেটাও বন্ধ হোক। সেই সঙ্গে সিএএ তুলে নিক সরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy