Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

দশ বছরেও চালু হল না পশুদের হাসপাতাল

বেলগাছিয়ায় পশুদের জন্য একটি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল গড়তে প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতরের কাছে প্রস্তাব পাঠান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যেখানে ইন্ডোর, আউটডোর-সহ পশুদের চিকিৎসার যাবতীয় সুবিধা থাকবে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মেহবুব কাদের চৌধুরী 
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৯ ০১:১০
Share: Save:

বেলগাছিয়ায় পশুদের জন্য সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল গড়তে সরকারি অনুমোদন মিলেছিল ২০০৯ সালে। প্রকল্পের খরচ বাবদ প্রায় দশ কোটি টাকা বরাদ্দও করেছিল প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতর। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই হাসপাতাল চালু হল না। প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল চালু না হওয়ার জন্য দফতরের গড়িমসিকেই দায়ী করছেন। এই অভিযোগ প্রসঙ্গে দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের দাবি, ‘‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না। তবে পশু হাসপাতালটি যাতে শীঘ্রই চালু করা যায়, সেই চেষ্টা করব।’’

বেলগাছিয়ায় পশুদের জন্য একটি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল গড়তে প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতরের কাছে প্রস্তাব পাঠান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যেখানে ইন্ডোর, আউটডোর-সহ পশুদের চিকিৎসার যাবতীয় সুবিধা থাকবে। সেই প্রস্তাব মেনে নিয়ে ২০০৯ সালে দফতর প্রায় দশ কোটি টাকা ব্যয়ে চারতলা ওই হাসপাতাল গড়ার অনুমোদন দেয়। কিন্তু অভিযোগ, হাসপাতালের ভবনটি তৈরি হয়ে গেলেও বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সাব স্টেশন বসানোর অনুমোদন আজ পর্যন্ত মেলেনি। বাড়িটি তৈরি করেছে পূর্ত দফতর। ওই দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘সাব স্টেশন তৈরির জন্য প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতর আমাদের টাকা দিলেই আমরা কাজ শুরু করে দেব।’’

কিন্তু দশ বছর পার হয়ে গেলেও পশুদের হাসপাতাল এখনও চালু হল না কেন?

প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, বেলগাছিয়ায় ওই হাসপাতাল নির্মাণের অনুমোদন ২০০৯ সালে মিললেও ২০১৪ সালে ফের বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে চারতলার বদলে দোতলা নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘পশু হাসপাতাল গড়ার জন্য ২০০৯ সালে সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০১৪ সালে একই প্রকল্পের খরচ কমিয়ে নতুন করে প্রস্তাব পাঠায়।’’ ওই আধিকারিকের কথায়, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বারবার সিদ্ধান্ত বদলানোর জন্য হাসপাতাল গড়তে বিলম্ব হচ্ছে।’’ এই অভিযোগ নস্যাৎ করে প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তা বলেন, ‘‘২০১৪ সালে দ্বিতীয় প্রস্তাব পাঠানোর পরেও পাঁচ বছর কেটে গিয়েছে। প্রকল্পের খরচও কমেছে। পাঁচ বছরে কেবল পূর্ত দফতর ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন দফতরের মধ্যে ফাইলে নোট লেখালেখি হয়েছে। বাস্তবে কিছুই হয়নি।’’

বর্তমানে পোষ্যপ্রেমীদের সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্রিটিশ আমল থেকেই পশুদের চিকিৎসার জন্য একটি ছোট ক্লিনিক রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পূর্ণেন্দু বিশ্বাস বলেন, ‘‘এই ক্লিনিকে দূরদূরান্ত থেকে পোষ্যদের নিয়ে আসেন অনেকে। এখন ভিড় দিনে দিনে বাড়ছে। আধুনিক মানের পশু হাসপাতাল হলে অনেকেই উপকৃত হবেন।’’ রাজ্যের প্রাণিকল্যাণ বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান তথা পশুদের নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার ও বিধায়ক দেবশ্রী রায় বলেন, ‘‘কলকাতায় পশুদের জন্য বড় হাসপাতাল ভীষণ জরুরি। দশ বছর আগে অনুমোদন পাওয়া হাসপাতাল গড়ার কাজ কেনই বা এখনও শেষ হল না, তা জানতে বিভাগীয় কর্তাদের সঙ্গে কথা বলব।’’

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের জুনে এসএসকেএমে কুকুরের ডায়ালিসিস করতে উদ্যোগী হয়ে চরম বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন মন্ত্রী নির্মল মাজি। নির্মলবাবু বলেন, ‘‘সেই সময়ে বেলগাছিয়ায় খোঁজ করেও সেই কুকুরের ডায়ালিসিস করাতে পারিনি। তাই এসএসকেএমে গিয়েছিলাম। সেই ঘটনার পরেই দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) ঘোষণা করেছিলেন, আমাদের রাজ্যেও পশুদের একটি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল তৈরি হবে।’’ তাঁর আক্ষেপ, ‘‘দিদি বলার পরেও সেই কাজ কেন এখনও শেষ হল না, সে বিষয়ে দফতরের মন্ত্রীর সঙ্গে

কথা বলব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

veterinary hospital Animals
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy