Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Air pollution

মাঠের ঘাসজমিতে আগুন, ধোঁয়ার দূষণে অতিষ্ঠ নিউ টাউনবাসী

বাসিন্দারা জানালেন, সোমবার পেঁচার মোড়, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আগুনের ধোঁয়া এমনপর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ে যে, রাস্তায় গাড়ি চালাতে সমস্যায় পড়েন চালকদের অনেকেই।

An image shows fire broke out in New Town which is another reason of air pollution

অনিয়ম: ঘাসের জঙ্গলে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে আগুন। নিউ টাউনে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:২৫
Share: Save:

সবুজ শহরের বুকে যেন দাবানল!

বিস্তীর্ণ মাঠের বিভিন্ন জায়গায় দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে যাচ্ছে আকাশ। আশপাশের উঁচু উঁচু আবাসনের ভিতরে সেই ধোঁয়া ঢুকে যাওয়ায় প্রাণান্তকর অবস্থা বাসিন্দাদের। দিনের পর দিন এমন ঘটনায় নাভিশ্বাস উঠছে নিউ টাউনের বাসিন্দাদের অনেকেরই। অভিযোগ, এনকেডিএ-র কাছে একাধিক বার সমস্যার সমাধানের দাবি জানিয়েও লাভ হয়নি। অথচ, জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ রয়েছে, নিউ টাউনের এই সমস্যার উপরে নজর রাখতে হবে সরকারের শীর্ষ কর্তাদের।

‘গ্রিন সিটি’, অর্থাৎ সবুজ শহর নিউ টাউন। এই শহরকে দূষণমুক্তরাখতে বিভিন্ন সময়ে এনকেডিএ-র তরফে নানা ধরনের পদক্ষেপ করা হয়। কিন্তু, মাঠের জঙ্গল পোড়ার জেরে যে বিপুল পরিমাণ কার্বন-ডাইঅক্সাইড বাতাসে মিশছে, তা আটকাতে এনকেডিএ-র সক্রিয় পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না বলেই অভিযোগ বাসিন্দাদের। আগুন থেকে যাতে দুর্ঘটনা না ঘটে, তার জন্য এনকেডিএ-র তরফে দমকলের ইঞ্জিনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। কোথাও মাঠে আগুন লেগেছে খবর পেলেই ইঞ্জিন গিয়ে জল দিয়ে সেই আগুন নিভিয়ে দিচ্ছে।

বাসিন্দারা জানালেন, সোমবার পেঁচার মোড়, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আগুনের ধোঁয়া এমনপর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ে যে, রাস্তায় গাড়ি চালাতে সমস্যায় পড়েন চালকদের অনেকেই। স্থানীয় সূত্রে এই ধরনের আগুনের পিছনে বিভিন্ন রকম জল্পনা শোনা যায়। অনেকেরই অভিযোগ, এনকেডিএ-র তরফে জঙ্গল পরিষ্কারের বরাত পাওয়া ঠিকাদার সংস্থা প্রায়ই জঙ্গলকিংবা ঘাস কাটার কাজের ক্ষেত্রে শ্রমিক ও যন্ত্রপাতি বাবদ খরচ বাঁচাতে নিজেরাই মাঠে আগুনধরিয়ে দেয়। তার পরে পোড়া ঘাসপাতা জেসিবি দিয়ে কেটেউঠিয়ে নেয়। গত বছর পুলিশও এমন দু’একটি ঘটনা হাতেনাতে ধরেছিল। আবার বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, এনকেডিএ-র বর্জ্য সাফাই বিভাগের লোকজনই মাঠে জঞ্জাল ফেলে তাতে আগুন ধরিয়ে দেন।

কারণ যা-ই হোক, এর ফলে চার দিকে যে বিপুল পরিমাণ দূষণ ছড়িয়ে পড়ে, তা নিয়ে আতঙ্কিত পরিবেশকর্মীরা। এ নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতে দু’টি মামলা করেছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। সে কথা জানিয়ে সুভাষবাবুর ক্ষোভ, ‘‘দায়ের করা মামলা দু’টির একটির ক্ষেত্রে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে বিষয়টির উপরে নজরদারির নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, এখনও সেই সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি। ওই ভাবে আগুন ও ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়লে দূষণ ছড়ানোর পাশাপাশি স্থানীয় এলাকার জীববৈচিত্রও সাংঘাতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’’

ভুক্তভোগী আবাসিকেরা জানাচ্ছেন, মাঠের আগুনের ধোঁয়ার দুর্গন্ধে এক প্রবল অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। আবাসিকদের একটি সংগঠন ‘নিউ টাউন সিটিজ়েন’স ওয়েলফেয়ার ফ্রেটার্নিটি’র সম্পাদক সমীর গুপ্ত বললেন, ‘‘অনেক বার এনকেডিএ-কে অনুরোধ করেছি, কী ভাবে মাঠে আগুন লাগছে, সে দিকে নজরদারি বাড়াতে। ওরা গত বছর আগুন নেভাতে জলের গাড়িরও ব্যবস্থা করেছে। আগুন জ্বলা ঠেকানো না গেলে দূষণ থেকে রক্ষা নেই।’’

যদিও এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কোনও ধরনের মন্তব্য তিনি করবেন না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন এনকেডিএ-র চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy