n নজরে: বোর্ডে টাঙানো একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নিয়মাবলীতে চোখ বোলাচ্ছেন পড়ুয়া ও অভিভাবকেরা। মঙ্গলবার, টাকি গার্লস স্কুলে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
অতিমারি পরিস্থিতিতে বাতিল হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। তার বদলে নবম শ্রেণির পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে মাধ্যমিকের ফল। পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তে বিষয়টি নিয়ে যেমন চর্চা শুরু হয়েছিল, ফল প্রকাশের পরেও তা চলছে। তবে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা যারা দিতে পারল না, সেই সদ্য মাধ্যমিক-উত্তীর্ণেরা কী ভাবছে?
পরীক্ষার্থীরা জানাচ্ছে, ভাল ফল হয়েছে বেশির ভাগেরই। কিন্তু পরীক্ষা দিতে পারলে আরও ভাল ফল হত বলে মনে করছে অনেকেই। কারণ, নবম শ্রেণির মূল্যায়ন যে পরে এতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে, সেটা তারা বুঝতে পারেনি।
৯০ শতাংশ নম্বর নিয়ে পাশ করেছে টালিগঞ্জের বাসিন্দা সপ্তর্ষি রায়। কিন্তু মন ভাল নেই তার। সে জানাচ্ছে, পরীক্ষা হলে হয়তো আরও ভাল ফল হত তার। সপ্তর্ষির কথায়, ‘‘পরীক্ষা যে বাতিল হবে, তা জানলাম জুন মাসে। মাধ্যমিক পরীক্ষা হবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিল। কিন্তু প্রস্তুতি তো নিচ্ছিলাম। সেই সব প্রস্তুতি কিছুই কাজে এল না।’’
বেলতলা গার্লস স্কুলের ছাত্রী স্বর্ণালী ভৌমিক যেমন জানাচ্ছে, পরীক্ষা হলে সে আরও বেশি নম্বর পেত। স্বর্ণালীর কথায়, ‘‘আমি ৯৪ শতাংশ নম্বর পেয়েছি। কিন্তু পরীক্ষা হলে আরও বেশি নম্বর পেতাম। আমার নবম শ্রেণির পরীক্ষার প্রস্তুতি তেমন ভাল ছিল না। তখন তো বুঝিনি যে নবম শ্রেণির পরীক্ষার ফলই এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। আমি মাধ্যমিক পরীক্ষা হওয়ার পক্ষে ছিলাম।’’ নবম শ্রেণির ফল কেন ভাল হয়নি, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে স্বর্ণালী জানায়, স্কুলের একশো বছর পূর্তি উপলক্ষে নানা কাজে ও বিভিন্ন রকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিল সে। সেই সব নিয়ে ব্যস্ত থাকায় নবম শ্রেণির প্রস্তুতি ভাল হয়নি। স্বর্ণালী জানায়, পরীক্ষার আগে পড়ার সময় অনেক বাড়িয়ে
দেয় সে। এ বার সে সব কোনও কাজেই এল না।
সায়নী দেবনাথ নামে আর এক পরীক্ষার্থী বলল, ‘‘আমি ৯৬ শতাংশ নম্বর পেয়েছি। এই পদ্ধতিতে যে নম্বর পেয়েছি, তাতে আমি খুশি। তবে পরীক্ষা হলে হয়তো আর একটু বেশি নম্বর পেতাম। বড় পরীক্ষার আগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি অন্য রকম থাকে। তার জন্য ফলও ভাল হয়।’’
উত্তরপাড়া গভর্নমেন্ট হাইস্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কিঞ্জল চৌধুরী ভাল ফল করলেও পরীক্ষা না দিয়ে একাদশ শ্রেণিতে উঠে যাওয়াটা মন থেকে মেনে নিতে পারছে না। কিঞ্জল বলে, ‘‘নবম শ্রেণির মূল্যায়ন এত গুরুত্বপূর্ণ হবে বুঝিনি। নবম শ্রেণির পরীক্ষার প্রস্তুতি আর মাধ্যমিকের প্রস্তুতিতে তফাৎ থাকে। তবে করোনা অতিমারির পরিস্থিতি বিবেচনা করে এই বিশেষ পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করতেই হত।’’
শিক্ষকদের একাংশ মনে করেন, নিম্ন বা মধ্য মেধার পড়ুয়ারা এই মূল্যায়নে বঞ্চিত হয়নি। তাদের লাভই হয়েছে। কিন্তু উচ্চ মেধার পড়ুয়ারা নিজেদের বঞ্চিত মনে করতে পারে। পশ্চিমবঙ্গ
সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসুর মতে, ‘‘আমরা আগেই বলেছি, এই মূল্যায়ন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে হচ্ছে না। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে কোনও একটা পদ্ধতি স্থির করতেই হত। তবে উচ্চ মেধার পড়ুয়ারা সন্তুষ্ট না-ও হতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy