E-Paper

পথকুকুরের জন্ম নিয়ন্ত্রণে পরিষেবার বালাই নেই বিধাননগর, দমদমে 

স্থানীয় প্রশাসনের খাতায় কোথাও ওদের জন্মনিয়ন্ত্রণের ভাবনাই নেই, কোথাও আবার থাকলেও তা অপ্রতুল। ফলে বাড়ছে পথকুকুর। নিষ্ঠুরতার বলি হচ্ছে ওরা।

An image of Dog

সল্টলেকে ইডি-র অফিস চত্বরে পথকুকুর। —নিজস্ব চিত্র।

কাজল গুপ্ত ও প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৮:৩৫
Share
Save

বেশ কয়েক বছর আগে পুরসভা থেকে কর্পোরেশনে উন্নীত হয়েছে বিধাননগর। অনেকটাই বেড়েছে ওই পুর এলাকার পরিধি। কিন্তু এত বড় এলাকায় এখনও তৈরিই হয়নি ডগ পাউন্ড কিংবা পথকুকুরের জন্ম নিয়ন্ত্রণের উপযুক্ত পরিকাঠামো। সল্টলেক হোক কিংবা অপরিকল্পিত রাজারহাট এলাকা— পথকুকুরের বংশবিস্তারে সমস্যা বেড়েছে সর্বত্র। যার প্রমাণ মিলবে জলাতঙ্কের প্রতিষেধক গ্রহীতার দীর্ঘ তালিকায় নজর দিলেই।

বিধাননগর পুর এলাকার একমাত্র সরকারি হাসপাতালে রয়েছে কুকুর কামড়ালে জলাতঙ্কের প্রতিষেধক দেওয়ার ব্যবস্থা। অবোলা জীবদের জন্য পুর প্রশাসনের ইতিবাচক কাজ বলতে, একটি নির্মীয়মাণ প্রকল্প। সল্টলেকের তিন নম্বর সেক্টরে পোষ্যদের হাসপাতাল তৈরির বিধাননগর পুরসভার সেই প্রকল্প কবে বাস্তব রূপ পাবে, তার নির্দিষ্ট সময় জানা যায়নি। তবে আশার কথা শোনানো হয়েছে যে, সেখানে পথকুকুরদের নিয়েও কাজ হবে।

বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে জলাতঙ্কের প্রতিষেধক দেওয়া হয়। ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, কুকুর কামড়ানোর চিকিৎসায় ওই প্রতিষেধক নিতে দৈনিক ২০-২৫ জন আসেন। যাঁদের বড় অংশ বিধাননগর কিংবা তার সংলগ্ন এলাকার। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও মানছেন, বিধাননগর-সহ প্রতিবেশী পুরসভাগুলি কুকুরের নির্বীজকরণ প্রক্রিয়া চালু করে উঠতে না পারায় এই সমস্যা বাড়ছে।

এই সংখ্যা বৃদ্ধির স্রোতে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে হিংস্র হয়ে উঠছে ওরা। বাঁশদ্রোণীর বাসিন্দা অসীম দত্তের কথায়, ‘‘বইমেলায় যাব বলে ময়ূখ ভবনের ভিতরে বাইক রেখেছিলাম। রাতে বাইক আনতে গিয়ে দেখি,
ছ’-সাতটি কুকুর ঘুরছে। মোটরবাইক চালু করতেই তেড়ে আসে। স্থানীয় এক চা বিক্রেতা এসে আমাকে উদ্ধার করেন।’’ সরকারি আবাসনে নিরাপত্তাকর্মী থাকেন না। সেই ফাঁক গলে রাস্তার কুকুর বর্ষায় ঠাঁই নেয় আবাসনের সিঁড়িতে— বলছিলেন রাজ্য সরকারি কর্মীদের একটি আবাসনের বাসিন্দারা।

বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা সমস্যার সমাধানে পোষ্যদের একটি হাসপাতাল গড়ার পরিকল্পনা করেছি। সে জন্য কেএমডিএ তিন নম্বর সেক্টরে জায়গাও বরাদ্দ করেছে। ওই হাসপাতালে কুকুরকে প্রতিষেধক দেওয়া ও তাদের নির্বীজকরণের কাজ হবে।’’ এ ছাড়া, পথকুকুরের জন্ম নিয়ন্ত্রণে পরিকল্পিত ব্যবস্থা বিধাননগর পুরসভায় নেই বলেই জানা যাচ্ছে।

তথৈবচ পরিস্থিতি দক্ষিণ দমদম ও দমদম পুর এলাকাতেও। দুই পুর কর্তৃপক্ষই জানান, পথকুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে তাঁদের ভরসা কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। শুধু দক্ষিণ দমদম পুর হাসপাতালেই অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরে প্রায় ৬০০ জনকে জলাতঙ্কের প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে।

অভিযোগ, গত এক বছরে ওই দুই পুর এলাকায় পথকুকুরের সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে কেউ কেউ পথকুকুরের নির্বীজকরণের ব্যবস্থা করলেও প্রশাসনিক ভাবে কোনও ব্যবস্থা নেই। দমদম পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান বরুণ নট্টের কথায়, ‘‘এই পরিষেবা দেওয়ার মতো পরিকাঠামো আমাদের নেই। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির সাহায্যে কোথাও কোথাও পদক্ষেপ করা হলেও তা পর্যাপ্ত নয়।’’ একই কথা বলছেন দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) সঞ্জয় দাস। তিনি বলেন, ‘‘পুরসভার নিজস্ব পরিকাঠামো নেই। কয়েকটি সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হলেও কিছু প্রতিবন্ধকতায় সেই কাজ বন্ধ রয়েছে। ফের চালুর চেষ্টা হবে।’’

তবে নির্বীজকরণ হোক বা কুকুর ধরা— দু’টি কাজেই পুরসভার তরফে মানবিক পদক্ষেপের দাবি তুলছেন পশুপ্রেমী সংগঠন ও বাসিন্দারা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Street Dogs Birth Control Bidhannagar Dum Dum

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।