Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Waste Management

বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সাড়ে তিন হাজার কোটির তহবিল গড়ছে রাজ্য

রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘সব দিক দেখেই তহবিল গঠন করা হচ্ছে। আগামী চার মাসের মধ্যে এই সংক্রান্ত প্রোগ্রেস রিপোর্টও আদালতে জমা দেওয়া হবে।’’

তরল বর্জ্যের ক্ষেত্রেও দুরবস্থা বলে জানিয়েছিল পরিবেশ আদালত।

তরল বর্জ্যের ক্ষেত্রেও দুরবস্থা বলে জানিয়েছিল পরিবেশ আদালত। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:৪১
Share: Save:

কঠিন ও তরল বর্জ্যের ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থতার কারণে গত সেপ্টেম্বরে রাজ্য সরকারের সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ ধার্য করেছিল জাতীয় পরিবেশ আদালত। নির্দেশ দিয়েছিল, ওই পরিমাণ টাকা সরকারকে পৃথক তহবিল তৈরি করে জমা রাখতে হবে। দু’মাসের মধ্যে সেই তহবিল গড়ার নির্দেশও দিয়েছিল আদালত। রাজ্যের মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে ওই তহবিল থেকে কঠিন ও তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় খামতি দূর করার জন্য অর্থ খরচ করতে বলা হয়েছিল। রাজ্য প্রশাসন সূত্রের খবর, সেই তহবিল অবশেষে তৈরি হচ্ছে। রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের এক শীর্ষ কর্তা বলছেন, ‘‘জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মতো ওই তহবিল আমরা তৈরি করছি।’’

প্রসঙ্গত, তাদের কাছে দাখিল করা তথ্যের ভিত্তিতে পরিবেশ আদালত জানিয়েছিল, রাজ্যের ১২৫টি পুর এলাকা মিলিয়ে দৈনিক ১৩৪৬৯.১৯ টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়। তার মধ্যে সংগ্রহ ও ভাগাড়ে নিয়ে যাওয়া জঞ্জালের পরিমাণ দৈনিক ১৩৩৭২.৩২ টন। কিন্তু ভাগাড়ে নিয়ে যাওয়া আবর্জনা পরে কী করা হয়, সেটা স্পষ্ট করে রাজ্য জানায়নি। তবে তার বেশির ভাগেরই প্রক্রিয়াকরণ করা হয় না বলে আদালত মন্তব্য করেছিল। কারণ, রাজ্যের তথ্যই জানিয়েছে, দৈনিক উৎপন্ন হওয়া মোট জঞ্জালের মধ্যে মাত্র ৩০৪৭ টনের প্রক্রিয়াকরণ হয়। বাকি ১০৪২২.১৯ টনের প্রক্রিয়াকরণ হয় না। সেই বর্জ্য বায়ু, জল ও মাটির দূষণের কারণ হয়। তরল বর্জ্যের ক্ষেত্রেও এই দুরবস্থা বলে জানিয়েছিল পরিবেশ আদালত। দৈনিক ১৪৯ কোটি লিটার তরল বর্জ্যের প্রক্রিয়াকরণ হয় না পশ্চিমবঙ্গে।

আর এই দুইয়ের উপরে ভিত্তি করেই পরিবেশ আদালত ক্ষতিপূরণ ধার্য করেছিল। ২০১৮ সালে উত্তরপ্রদেশে তরল বর্জ্যের প্রক্রিয়াকরণ সংক্রান্ত একটি মামলা দায়ের হয়েছিল। তাতে নয়ডা এবং মামলায় যুক্ত অন্য পক্ষের থেকে দৈনিক প্রতি ১০ লক্ষ লিটার প্রক্রিয়াকরণ না হওয়া তরল বর্জ্যের উপরে দু’কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ ধার্য করা হয়েছিল। ওই মামলার প্রসঙ্গে টেনে পরিবেশ আদালতের বক্তব্য, যে হেতু পশ্চিমবঙ্গে প্রক্রিয়াকরণ না হওয়া তরল বর্জ্যের পরিমাণ ১৪৯ কোটি লিটার, তাই এ ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের অঙ্ক ২৯৮০ কোটি টাকা। ধারাবাহিক ভাবে পরিবেশের ক্ষতির জন্য ওই টাকার পরিমাণ ৩০০০ কোটি টাকা ধরা হয়েছিল। আবার, লুধিয়ানায় কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত একটি মামলায় প্রক্রিয়াকরণ না হওয়া বর্জ্যের টনপিছু জরিমানা ৩০০ টাকা ধার্য করেছিল পরিবেশ আদালত। সেই মামলার প্রসঙ্গ টেনে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে এই জরিমানা ধরা হয়েছিল ৫০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ, সব মিলিয়ে পরিবেশগত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ ছিল সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা।

রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘সব দিক দেখেই তহবিল গঠন করা হচ্ছে। আগামী চার মাসের মধ্যে এই সংক্রান্ত প্রোগ্রেস রিপোর্টও আদালতে জমা দেওয়া হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy