সেই এলইডি বাল্ব। নিজস্ব চিত্র।
পেটের মধ্যে গেঁথে রয়েছে ছোট এলইডি বাল্ব! একরত্তির পেট কেটে শেষমেশ ক্ষুদ্রান্ত্র থেকে সেই বাল্ব বার করে তাকে বাঁচাল এসএসকেএম। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, বছর দেড়েকের ওই শিশুটির অবস্থা এখন স্থিতিশীল। তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা ঋক গোলদার কয়েক দিন আগে খেলতে খেলতে আচমকাই ছোট এলইডি বাল্বটি খেয়ে ফেলে। বিষয়টি জানতে পেরে ছেলেকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান মা-বাবা। তিনি ওষুধ দিয়ে অপেক্ষা করেন, যাতে মলত্যাগের সময়ে বাল্বটি বেরিয়ে যায়। কিন্তু পাঁচ-ছ’দিন কেটে গেলেও শিশুটির অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। উল্টে পেট ব্যথা বাড়তে থাকে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ওই কয়েক দিনের মধ্যে তিন বার ঋকের পেটের এক্স-রে করে দেখা যায়, ক্ষুদ্রান্ত্রে একই জায়গায় রয়েছে বাল্বটি।
এর পরে ঋককে নিয়ে এসএসকেএমে আসেন পরিজনেরা। শিশু শল্য বিভাগে ভর্তি করে শুরু হয় চিকিৎসা। সেই সময়ে গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি বিভাগের চিকিৎসকেরা এক বার চেষ্টাও করেন ক্ষুদ্রান্ত্র থেকে এলইডি বাল্বটি বার করতে। কিন্তু সেই চেষ্টা বিফলে
যায়। তখন শিশু শল্য বিভাগের শিক্ষক-চিকিৎসক সুজয় পাল সিদ্ধান্ত নেন, পেট কেটেই ওই বাল্ব বার করতে হবে।
তিনি জানাচ্ছেন, ক্ষুদ্রান্ত্রের প্রথম অংশ, অর্থাৎ ডিওডেনামে আটকে ছিল এলইডি বাল্বটি।সেটির দু’টি সূক্ষ্ম তারের একটি ক্ষুদ্রান্ত্রে গেঁথে গিয়েছিল। পেটের পিছনে (রেট্রোপেরিটোনিয়া), যেখানে রক্তের বড় শিরা থাকে, ঠিক তার পাশ দিয়ে ফুঁড়ে বেরিয়ে ছিল ওই তারটি। যে কারণে কোনও ভাবেই বাল্বটি বার করা যাচ্ছিল না।
সুজয়ের নেতৃত্বে শিশু শল্য বিভাগের চিকিৎসক অনীক রায়চৌধুরী, সাবির আহমেদ, সমৃদ্ধি পোদ্দার এবং অ্যানাস্থেটিস্ট মোহন মণ্ডলের দল আড়াই ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করে ঋকের। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, পেট কেটে পৌঁছনো হয় ডিওডেনামে। সেখান থেকে খুব সাবধানে তুলে আনা হয় গেঁথে থাকা এলইডি বাল্বটি। পাশাপাশি, ক্ষুদ্রান্ত্রের আর এক অংশ ‘জেজুনাম’-এর সঙ্গে যুক্ত করা হয় ডিওডেনামকে।
সুজয় বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে বাল্বটি ওই জায়গায় থাকলে খাবারের অংশ ওই ফুটো দিয়ে পেটের ভিতরে
জমে মারাত্মক সংক্রমণ (পেরিটোনাইটিস) হয়ে শিশুটির জীবন সংশয় হতে পারত।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘এই শিশুটির প্রাণ বাঁচানো গিয়েছে ঠিকই। কিন্তু
বাবা-মায়েদের আরও সতর্ক থাকতে হবে, যাতে এমন ধরনের কোনও জিনিস বাচ্চারা
মুখে দিতে না পারে এবং হাতের নাগালে না পায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy