Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
SSKM Hospital

SSKM Hospital: ফুসফুসে সাত বছর গেঁথে থাকা সুচ বার করল পিজি

এমব্রয়ডারির কাজ শিখতে মুম্বই পাড়ি দিয়েছিলেন আব্বাস। তিনি জানাচ্ছেন, সেলাই যন্ত্রে সুচ লাগাবেন বলে সেটি মুখে রেখেছিলেন।

আব্বাস আলি খান।

আব্বাস আলি খান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২২ ০৮:২০
Share: Save:

ঠোঁট দিয়ে চেপে ধরে মুখে রাখা ছিল সুচ। কিন্তু অজানতেই তা চলে গিয়েছিল কিশোরের শ্বাসনালিতে। প্রথমে কিছু বোঝা না গেলেও কয়েক বছর পর থেকে শুরু হয় সমস্যা। সাত বছর পরে ফুসফুসে গেঁথে থাকা সেই সুচ বার করে রোগীর প্রাণ বাঁচাল এসএসকেএম হাসপাতাল।

২০১৫ সালে সেই দুর্ঘটনাটি যখন ঘটে, তখন আব্বাস আলি খান ছিলেন কিশোর। এখন তিনি যুবক। সম্প্রতি পিজির কার্ডিয়োথোরাসিক অ্যান্ড ভাস্কুলার সার্জারি (সিটিভিএস) বিভাগে অস্ত্রোপচারের পরে কাটোয়ার বাড়িতে ফিরে গিয়েছেন তিনি। শনিবার বলেন, ‘‘প্রথমে বুঝতেই পারিনি সুচ ভিতরে ঢুকে গিয়েছে। কয়েক বছর পরে সমস্যা শুরু হতে ডাক্তার দেখিয়ে জানতে পারি ওই অবস্থা। কিন্তু কোথাও কোনও কিছু হয়নি। শেষে পিজি-তে আসায় সুচ বার করলেন ডাক্তারবাবুরা।’’

এমব্রয়ডারির কাজ শিখতে মুম্বই পাড়ি দিয়েছিলেন আব্বাস। তিনি জানাচ্ছেন, সেলাই যন্ত্রে সুচ লাগাবেন বলে সেটি মুখে রেখেছিলেন। তখন এক পরিচিত মজা করে তাঁকে পিছন থেকে মাথায় ধাক্কা দেন। সুচ মাটিতে পড়ে গিয়েছে ভেবে খুঁজতে শুরু করেন আব্বাস। কিন্তু কোথাও সেটি পাননি। কোনও সমস্যা না হওয়ায় কিছু মনেও হয়নি তাঁর। আব্বাস বলেন, ‘‘বছর দুয়েক পর থেকে কাশির সঙ্গে রক্ত উঠত, শুতে গেলে মুখেও রক্ত চলে আসত, বুকে ব্যথা হত। যক্ষ্মা পরীক্ষা করালেও তা মিলল না। শেষে এক্স-রে করে দেখা গেল ,ফুসফুসে সুচ গেঁথে রয়েছে।’’ মুম্বইয়ে ফিরে একটি হাসপাতালে এক মাস ভর্তি থাকলেও সুচ বার করা যায়নি বলে জানাচ্ছেন বাইশ বছরের ওই যুবক।

বছর দুয়েক আগে বেঙ্গালুরুর একটি বেসরকারি হাসপাতালে যান। আব্বাস বলেন, ‘‘ওখানে প্রায় তিন লক্ষ টাকা খরচ হবে বলে জানায়। এত টাকা ছিল না। ফের মুম্বইয়ে কাজে যাই।’’ সমস্যা বাড়তে থাকায় মাস তিনেক আগে বাড়ি ফিরে পিজির বক্ষরোগ বিভাগে যান আব্বাস। তাঁকে সিটিভিএস বিভাগে পাঠানো হয়। সেখানকার শিক্ষক চিকিৎসক শিল্পা বসু রায় জানাচ্ছেন, সিটি স্ক্যানে দেখা যায় ওই যুবকের ডান দিকের ফুসফুসের নীচের অংশে গেঁথে রয়েছে সুচটি। তিনি বলেন, ‘‘ধাক্কা লাগতেই মুখের ভিতরে রাখা সুচটি বাইরে পড়ে যাওয়ার বদলে শ্বাসনালিতে ঢুকে যায়। পরে নীচে নেমে ফুসফুসে গেঁথে যায়। দীর্ঘ দিন ওই সুচ থাকায় সংক্রমণ ছড়িয়ে বড় বিপদ হতে পারত।’’

সিটিভিএসের ওই চিকিৎসক-সহ সৌরভ পাইক, সৌমি দাসের দল প্রায় দেড় ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে আব্বাসের বুক কেটে ফুসফুস থেকে সুচ বার করে। আব্বাসের কথায়, ‘‘আর রক্ত উঠছে না। কিছু দিনের মধ্যেই কাজে ফিরব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

SSKM Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy