Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
KMC

Buildings: জীর্ণ বাড়ি নিয়ে কি ব্যবস্থা নেবে নয়া বোর্ড, অপেক্ষা

সেই ভয়াবহ স্মৃতি আঁকড়েই এখনও দাঁড়িয়ে রয়েছে ৯ নম্বর আহিরীটোলা স্ট্রিটের সেই বাড়িটি। আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ।

আহিরীটোলার সেই বিপজ্জনক বাড়ি।

আহিরীটোলার সেই বিপজ্জনক বাড়ি। নিজস্ব চিত্র।

কাজল গুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২১ ০৫:৪৬
Share: Save:

গলির ভিতরে সাউন্ড বক্সে বাজছে জয়ের গান। চার দিক দলীয় পতাকায় মোড়া। কর্মী-সমর্থকেরা একে অপরকে সবুজ আবিরে রাঙিয়ে দিচ্ছেন। চার দিকে উল্লাস। তারই মাঝে আতঙ্কের স্মৃতি নিয়ে নিশ্চুপ ঘোড়ুই পরিবার।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর সকালে, টানা বৃষ্টির মধ্যে আচমকাই বাড়ি ভেঙে ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়েছিলেন পরিবারের একাধিক সদস্য। সেই ঘটনায় মৃত্যু হয় তিন বছরের শিশু সৃজিতা ঘোড়ুই ও তার দিদিমা, বছর বাহান্নর চাঁপা গড়াইয়ের। আহত হয়েছিলেন সৃজিতার অন্তঃসত্ত্বা মা গঙ্গা এবং বাবা সুশান্ত ঘোড়ুইও। সে দিন বিকেলেই গঙ্গার পরিবারে আসে দ্বিতীয় কন্যা সৃজনী।

চার মাস পরে সেই ভয়াবহ স্মৃতি আঁকড়েই এখনও দাঁড়িয়ে রয়েছে ৯ নম্বর আহিরীটোলা স্ট্রিটের সেই বাড়িটি। যা নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। পুরসভা সূত্রের খবর, ওই বাড়িটিকে আগেই ‘বিপজ্জনক’ বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও কয়েকটি পরিবার থেকে যায় সেখানে।

সে দিন ওই বাড়ির যে অংশটি ভেঙে পড়ে, সেখানেই ছিল ঘোড়ুই পরিবারের বাস। তাদের গোটা ঘরই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। পুরসভা, পুলিশ ও দমকল মিলে কয়েক ঘণ্টা ধরে উদ্ধারকাজ চালিয়ে তাঁদের ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। বাঁচানো যায়নি সৃজিতা এবং তার দিদিমাকে।

সেই ঘটনার কথা মনে পড়লে হাজার উল্লাসের মাঝেও নীরবতা গ্রাস করে গোটা পরিবারকে। সুশান্ত ঘোড়ুইয়ের দাদা জয়ন্ত জানান, তাঁদের সঙ্গেই রয়েছেন সুশান্ত ও তাঁর পরিবার। সুশান্ত চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। তাঁর কন্যা সৃজনী ও স্ত্রী গঙ্গা এখন ভাল রয়েছেন। শোক পুরোপুরি না কাটলেও কোনও মতে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছেন তাঁরা। জয়ন্তবাবু বলেন, ‘‘নতুন পুরবোর্ড যদি ওই বাড়িটি ঘিরে দেওয়ার ব্যবস্থা করে, তা হলে ভাল হয়।’’ স্থানীয়দের অনেকেরই আশঙ্কা, ওই বাড়ির বাকি অংশটুকু যে কোনও সময়ে ভেঙে পড়তে পারে। তবে স্থানীয় ২০ নম্বর ওয়ার্ডের জয়ী তৃণমূল প্রার্থী বিজয় উপাধ্যায় জানালেন, বিপজ্জনক অংশটুকু ভেঙে ফেলা হয়েছে। তাঁর দাবি, ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে ছিলেন তাঁরা। আগামী দিনে পুরসভা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে।

ওই বাড়িটি ভেঙে পড়ায় পাশের একটি বাড়ির একাংশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেই বাড়ির বাসিন্দা সুনীল সাউ বললেন, ‘‘আমাদের বাড়ি আপাতত মেরামত করা হচ্ছে। কিন্তু পাশের বাড়ি এখনও ভাঙা হয়নি বলে সেটি বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। ভয় লাগে, আবার যদি ভেঙে পড়ে।’’

ওই একই গলির আরও একটি বাড়িতে ‘বিপজ্জনক’ নোটিস লাগানো রয়েছে। একই ছবি দেখা গেল বিডন স্ট্রিটেও। সেখানে আবার একটি বাড়ির এমনই অবস্থা, যে কোনও সময়ে ভেঙে পড়তে পারে। সেখানকার এক বাসিন্দা রাকেশ সিংহ জানান, ওই বাড়িটি যক্ষ্মা হাসপাতালের অফিস ছিল। তাঁর বাবা, প্রয়াত প্রদীপ সিংহ সেখানে কাজ করতেন। কিন্তু তাঁদের অন্যত্র যাওয়ার জায়গা নেই। বিপজ্জনক জেনেও তাঁরা সপরিবার সেখানে বসবাস করছেন। পুরসভার সহযোগিতার আশায় দিন গুনছেন তাঁরা।-

অন্য বিষয়গুলি:

KMC Building
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy