Advertisement
E-Paper

old buildings: বিপজ্জনক বাড়ির বিপদ মাথায় নিয়ে বসে থাকা আর কত দিন?

মঙ্গলবার শহরের তিন জায়গায় বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে পড়েছে। গত এক মাসে শহরে ২০টির বেশি এ ধরনের বাড়ি ভেঙেছে।

ভগ্নদশা: ভেঙে পড়েছে জরাজীর্ণ বাড়ির একাংশ। মঙ্গলবার, উত্তর কলকাতার হেমেন্দ্র সেন স্ট্রিটে।

ভগ্নদশা: ভেঙে পড়েছে জরাজীর্ণ বাড়ির একাংশ। মঙ্গলবার, উত্তর কলকাতার হেমেন্দ্র সেন স্ট্রিটে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২১ ০৫:৫৮
Share
Save

২০১৭ সালে কলকাতা পুরসভা (সংশোধিত) বিল বিধানসভায় পাশ হওয়ার সময়ে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ছিলেন ফিরহাদ হাকিম। বিলটি পাশের পরে সংবাদমাধ্যমের কাছে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি বলেছিলেন, ‘‘এই বিল পাশের মাধ্যমে কলকাতা পুরসভার কাছে অনুরোধ করব একটি কমিটি গঠন করে বিপজ্জনক বাড়িগুলি পরীক্ষা করার জন্য। তা হলে দ্রুত সংশ্লিষ্ট বাড়িগুলির মেরামতি সম্ভব হবে।’’ সেই বছর কলকাতা পুর আইনে যুক্ত হওয়া ৪১২ (এ) ধারায় বলা হয়েছিল, বিপজ্জনক বাড়ির মালিক বাড়িটি সারাতে রাজি না হলে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুরসভাই সংশ্লিষ্ট বাড়ির উন্নয়নের দায়িত্ব নেবে।

ফিরহাদ বর্তমানে পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন। মন্ত্রী থাকাকালীন বিপজ্জনক বাড়ির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য তাঁরই প্রস্তাবিত কমিটি গঠন করা হয়েছে কি না, সেই কমিটি শহরের বিপজ্জনক বাড়িগুলি পরিদর্শন করছে কি না, সে সম্পর্কে অবশ্য স্পষ্ট উত্তর পাওয়া যায়নি। এ দিকে, মঙ্গলবার শহরের তিন জায়গায় বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে পড়েছে। গত এক মাসে শহরে ২০টির বেশি এ ধরনের বাড়ি ভেঙেছে। ওই ঘটনায় প্রাণহানি হয়েছে, বাসিন্দারা আহত হয়েছেন।

এ বিষয়ে পুরসভা কোনও পদক্ষেপ করছে, না কি শুধুমাত্র ‘বিপজ্জনক বাড়ি’র হোর্ডিং লাগিয়েই দায়িত্ব সারছে, সেই সম্পর্কে জানতে ফিরহাদকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি
ধরেননি। উত্তর দেননি মেসেজেরও। যার পরিপ্রেক্ষিতে সংশয় তৈরি হয়েছে, যে প্রশাসক (বা মেয়র) পুর ইতিহাসে প্রথম বার নিজের মোবাইল নম্বর জনসাধারণের মধ্যে বিলিয়ে দেন বা তৃণমূলস্তরে গিয়ে নাগরিকদের সমস্যা তাঁদের মুখ থেকেই সরাসরি শোনার জন্য প্রতি সপ্তাহে ‘টক টু কেএমসি’তে (আগে যার নাম ছিল ‘টক টু মেয়র’) উপস্থিত থাকেন, তিনি এমন সংবেদনশীল বিষয়ে কেন প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন না!

এক প্রাক্তন পুরকর্তার বক্তব্য, হয়তো অস্বস্তিকর প্রশ্নের সম্মুখীন হতে চাইছেন না ফিরহাদ। পুরমন্ত্রী থাকাকালীন শহরের বিপজ্জনক বাড়ির দায়িত্ব সরাসরি তাঁর উপরে এসে পড়েনি। তার দায় ছিল তৎকালীন মেয়রের। প্রাক্তন ওই কর্তার কথায়, ‘‘আর এখন পুর প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম নিজেই। ফলে বিপজ্জনক বাড়ির দায়ও তাঁর।’’

বিরোধীরা এ ক্ষেত্রে নন্দরাম মার্কেটের প্রসঙ্গ মনে করিয়ে দিচ্ছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, ২০০৮ সালে অগ্নিকাণ্ডের পরে যখন পুরসভা ওই বাজারের বিপজ্জনক অংশ ভাঙতে উদ্যোগী হয়, তখন রাজ্যের বর্তমান ক্ষমতাসীন দল, যারা সেই সময়ে ছিল বিরোধী আসনে, তাদের নেতৃত্বেপ্রতিবাদ সংঘটিত হয়েছিল। কলকাতার প্রাক্তন মেয়র বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘তার জন্য রাজনৈতিক ভাবে তারা লাভবান হয়েছিল। ভোটও পেয়েছিল। ফলে সেই রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার বা রাজনৈতিক হিসাব-নিকেশের কারণেই বিপজ্জনক বাড়ির বিপদ জেনেও পুরসভা এখন নিষ্ক্রিয়।’’

জনসংযোগ বাড়ানোর জন্য ‘টক টু কেএমসি’ কর্মসূচি, অথচ বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে পড়লে পুর কর্তৃপক্ষের বাঁধাধরা বুলিরও কড়া সমালোচনা করেছেন বিকাশবাবু। তাঁর প্রশ্ন, মেয়র বা পুর প্রশাসককে কেন স্থানীয় স্তরের সমস্যা শুনতে হবে? তা হলে ওয়ার্ড কোঅর্ডিনেটর, বরো কোঅর্ডিনেটরেরা রয়েছেন কেন? তাঁরা কেন বিপজ্জনক বাড়ি বা এলাকা সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ বরো-বৈঠকে তুলছেন না? বিকাশবাবু বলছেন, ‘‘আসলে এ সবই হল রাজনৈতিক চমক।’’

যদিও বিরোধীদের সমালোচনা উড়িয়ে পুর প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা বলছেন, ‘‘শহরের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিচার করে বিপজ্জনক বাড়ির ক্ষেত্রে পুরসভা হঠকারী কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। কারণ, সেটা বাস্তবসম্মত হবে না। বিপজ্জনক বাড়ির সমস্যা মেটাতে পুরসভার যা যা করণীয়, তা করা হচ্ছে।’’

কিন্তু কী করা হচ্ছে, আগামী দিনেই বা কী করা হবে এ বিষয়ে, তার উত্তর শহরের বিপজ্জনক বাড়িগুলির ভবিষ্যতের মতোই অনিশ্চয়তায় ভরা!

Building KMC

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।