দক্ষিণ কলকাতার একটি স্কুলে জীবাণুনাশ। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।
যারা ষষ্ঠ শ্রেণিতে ছিল, এখন তারা অষ্টমে। যারা ছিল সপ্তমে, তারা উঠেছে নবম শ্রেণিতে। স্কুলের পোশাক ছোট হয়ে গিয়েছে। স্কুলের যে প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে দু’বছর আগে শেষ দেখা হয়েছিল, সে এখনও তেমনই আছে তো? প্রিয় শিক্ষক কি আগের মতোই হাসিখুশি আছেন? না কি বদলে গিয়েছেন?
আজ, বৃহস্পতিবার স্কুল খোলার আগে এমনই আশঙ্কায় ভুগছে পড়ুয়ারা। আশঙ্কায় অভিভাবকেরাও। ছেলেমেয়েরা মানিয়ে নিতে পারবে তো? সেই সঙ্গেই চিন্তা বাড়িয়েছে অষ্টম শ্রেণির অধিকাংশ পড়ুয়ার প্রতিষেধক না পাওয়ার বিষয়টি।
এর আগে অতিমারির মধ্যে যে দু’বার স্কুল খুলেছিল, সেই দু’বারই স্কুলে এসেছিল নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা। এ বার অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারাও স্কুলে আসবে। যোধপুর পার্ক বয়েজ় স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিত সেন মজুমদার বললেন, “মানিয়ে নিতে যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তার জন্য অভিভাবকদের বলেছি, সপ্তাহে এক দিন স্কুলে এসে পড়ুয়াদের সঙ্গে সময় কাটাতে। নাচ, গান আবৃত্তি, গল্প পাঠের আয়োজন করতে।” বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শাশ্বতী অধিকারী বলেন, “আমাদের কয়েক জন শিক্ষক-শিক্ষিকা অষ্টম ও নবম শ্রেণির পড়ুয়াদের সঙ্গে আলাদা করে বসবেন।”
মনোরোগ চিকিৎসক অনিরুদ্ধ দেব যদিও মনে করেন, মানিয়ে নিতে বেশি দিন সময় লাগবে না। তাঁর কথায়, “অভিভাবকদের চিন্তার কিছু নেই। স্কুলে গিয়ে ক্লাস করাটাই তো স্বাভাবিক ঘটনা। অনলাইন ক্লাস কিন্তু স্বাভাবিক নয়। ওদের স্বাভাবিক হতে বেশি সময় লাগবে না।” তবে অনিরুদ্ধবাবু জানান, এই সময়ে মা-বাবাদের বেশি করে পাশে থাকতে হবে। তিনি বলেন, “পড়ুয়াদের মোবাইলে আসক্তি ধীরে ধীরে কাটাতে হবে। তবে মোবাইল, ল্যাপটপও এখন পড়াশোনার উপকরণ। তাই সব কিছু পুরোপুরি বন্ধ করলেও চলবে না।” শিশুরোগ চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষও মনে করেন, “ভয় পাওয়ার কিছু নেই। বিধিনিষেধ মেনে স্কুলে যেতে হবে।”
কী কী বিধিনিষেধ? অপূর্ববাবুর মতে, ব্যক্তিগত গাড়ি না থাকলে স্কুলবাসে চড়াই ভাল। গণপরিবহণে গেলে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। হেঁটে বা রিকশাতেও যাওয়া যেতে পারে। স্কুলে গিয়ে হাত সাবান দিয়ে ধুতে হবে। সব সময়ে মাস্ক পরতে হবে। বন্ধুদের আলিঙ্গন না করাই ভাল। স্যানিটাইজ়ার সঙ্গে রাখতে হবে। টিফিন ভাগ করে খাওয়া চলবে না। স্কুল থেকে ফিরে পোশাক ধুয়ে ফেলতে হবে। অপূর্ববাবু বলেন, “মা-বাবাকেও সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ, তাঁদের থেকেও করোনা ছড়াতে পারে। যে সব বাচ্চা সংক্রামক কোনও রোগে ভুগছে, তাদের আরও বেশি সাবধান থাকতে হবে।” অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারা প্রতিষেধক পায়নি বলে কি ঝুঁকি বেশি? অপূর্ববাবুর মতে, “ওরা তো প্রতিষেধক না নিয়েই বাইরে বেড়াতে গিয়েছে, শপিং মলে গিয়েছে। তা হলে সাবধানতা অবলম্বন করে স্কুলে যেতে অসুবিধা কোথায়?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy