অস্বাস্থ্যকর: ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের নিউ বঙ্গশ্রী পল্লি এলাকায় খালে জমেছে জঞ্জাল। (ইনসেটে) শোভন চট্টোপাধ্যায়। ছবি: অরুণ লোধ, ফাইল চিত্র
তিনি ভাইফোঁটায় যাচ্ছেন। যাচ্ছেন চলচ্চিত্র উৎসবেও। তবে নিজের ওয়ার্ডমুখো হচ্ছেন না। এমনকি, তাঁর ওয়ার্ডে ডেঙ্গি পরিস্থিতি খারাপ হওয়া সত্ত্বেও বা সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডকে কলকাতা পুরসভা ‘ডেঙ্গি-উপদ্রুত’ হিসেবে চিহ্নিত করার পরেও।
ব্যক্তিগত মনোমালিন্যের জন্য কেন প্রাক্তন মেয়র তথা ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শোভন চট্টোপাধ্যায় নিজের ওয়ার্ডকে ‘উপেক্ষা’ করছেন, ডেঙ্গির এই আপৎকালীন পরিস্থিতিতে সেই প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একটি অংশ। কলকাতা পুরকর্তাদের একটি অংশেরও অবশ্য একই প্রশ্ন।
শোভনবাবু এখনও ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলর। বিজেপি-তে যোগদানের পরে বেশ কিছু দিন হল তাঁকে ফের তৃণমূলের পুরনো বৃত্তে ঘোরাফেরা করতে দেখা যাচ্ছে। সকলের বক্তব্য, কালীঘাটে গিয়ে শোভনবাবু দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে ভাইফোঁটা নিয়েছেন, আবার চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও তিনি হাজির ছিলেন। কিন্তু নিজের ওয়ার্ডের ডেঙ্গি পরিস্থিতি জেনেও এক বারও তাঁর দেখা মেলেনি। এ দিকে ওই ওয়ার্ডের ফাঁকা জমিতে জমা জঞ্জাল বা অপরিষ্কার পুকুরে মশার আদর্শ পরিবেশ তৈরি হয়ে রয়েছে। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘এত দিন ধরে কাউন্সিলর হিসেবে কোনও কাজ করেননি তিনি। এ বছর ওয়ার্ডে ডেঙ্গি পরিস্থিতি এত খারাপ শুনেও শোভনবাবু এলেন না। ব্যক্তিগত সমস্যার জন্য জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব অস্বীকার করলেন!’’ আরও এক বাসিন্দার বক্তব্য, ‘‘শোভনবাবুর উচিত ছিল কাউন্সিলর পদ ছেড়ে দেওয়া। পদ আঁকড়ে রয়েছেন, ডেঙ্গি মরসুমে যে কাজ করার কথা তাও তিনি করছেন না! যার জেরে ভুগছেন বাসিন্দারা।’’
এ বিষয়ে জানতে শোভনবাবুকে একাধিক বার ফোন করলেও তিনি তা ধরেননি। উত্তর দেননি মেসেজেরও। শোভনবাবুর অনুপস্থিতিতে ওয়ার্ডের দেখভাল করছেন রত্না চট্টোপাধ্যায়। রত্নাদেবী বলছেন, ‘‘আমরা আমাদের মতো করে চেষ্টা করছি। কিন্তু নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকলে অসুবিধা তো হয়ই। সপ্তাহে অন্তত দু’দিন ওয়ার্ডের ডেঙ্গি পরিস্থিতি শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ঘুরে দেখা প্রয়োজন।’’
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে শাসক দলের কর্মীদের একটি অংশ আবার জানাচ্ছেন, মেয়র হওয়ার পর থেকেই নিজের ওয়ার্ডে ঠিক মতো সময় দিতে পারছিলেন না শোভনবাবু। সেটা ইচ্ছাকৃত নয়, কিন্তু মন্ত্রী-মেয়র হিসেবে তাঁকে এত দায়িত্ব পালন করতে হত যে কাউন্সিলর হিসেবে সময় বার করায় সমস্যা হচ্ছিল। ওয়ার্ডের কাজকর্ম দেখভালের জন্য প্রাক্তন মেয়র যাঁদের উপরে দায়িত্ব দিয়েছিলেন, তাঁরাও আর ঠিক মতো কাজ করছেন না বলে অভিযোগ অনেকের। স্থানীয় এক তৃণমূলকর্মীর কথায়, ‘‘ওয়ার্ডের ফাঁকা জমি বা পুকুর গত কয়েক বছর ধরে জঞ্জালে ভরাট হয়ে এসেছে। এ বছর তার ফল মিলছে।’’
এক পুরকর্তা আবার বলছেন, ‘‘যেখানে ডেঙ্গি সচেতনতা গড়ে তুলতে কাউন্সিলরদের ভূমিকাকে এত গুরুত্ব দিচ্ছে পুরসভা, সেখানে ১৩১ নম্বর ওয়ার্ড অভিভাবকহীন হয়ে পড়ে রয়েছে।’’ ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সইয়ের প্রয়োজন হলে তা করে দিচ্ছেন পাশের ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ (শিক্ষা) অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। অভিজিৎবাবু বলছেন, ‘‘১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের ডেঙ্গির পরিস্থিতি নিয়ে আমিও চিন্তিত। কারণ আমাদের ওয়ার্ডেও তার প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy