রাজভবনের সামনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি শোভন-বৈশাখী।—নিজস্ব চিত্র।
বিদায়ী মেয়রের উদ্দেশে প্রবল তোপ প্রাক্তন মেয়রের। সঙ্গী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মিল্লি আল আমিন কলেজের অচলাবস্থাকে হাতিয়ার করে বৈশাখীর বিরুদ্ধে বিপজ্জনক ‘উস্কানি’ দিচ্ছেন ফিরহাদ হাকিম, অভিযোগ শোভন চট্টোপাধ্যায়ের। আরও এক ধাপ এগিয়ে বৈশাখীর মন্তব্য, ‘সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ’ ছড়াচ্ছেন ফিরহাদ। রাজ্যপালের সঙ্গে ঘণ্টাখানেকের বৈঠকে ফিরহাদের বিরুদ্ধে এ দিন বিশদে অভিযোগ জানিয়েছেন শোভন-বৈশাখী। তার পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েই তোপ দেগেছেন তাঁরা।
বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় যে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছিলেন, সেই মিল্লি আল আমিন কলেজের পরিচালন সমিতিকে ঘিরে টানাপড়েন চলছে অনেক দিন ধরেই। তার জেরে কলেজটির স্বাভাবিক কাজকর্মও দীর্ঘ দিন ধরেই ব্যহত হচ্ছিল। জুন মাসে নিজের পদে ইস্তফা দিয়ে বৈশাখী জানিয়েছিলেন, বার বার শিক্ষামন্ত্রীর কাছে দরবার করা সত্ত্বেও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় তিনি পদত্যাগে বাধ্য হলেন।
বৈশাখীর সেই পদত্যাগ নিয়েও কিন্তু জটিলতা রয়েছে যথেষ্ট। তিনি জুন মাসে পদত্যাগ করেন। কিন্তু তাঁর পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে কি না, শিক্ষা দফতর বৈশাখীকে তা স্পষ্ট করে জানায়নি বলে অভিযোগ। ইস্তফার পর থেকে বৈশাখী আর কলেজে যাচ্ছেন না। কিন্তু কলেজটির অচলাবস্থা ঘিরে সম্প্রতি বিক্ষোভ শুরু হয়েছে মিল্লি আল আমিনের সামনে। বিক্ষোভকারীরা তাঁর উপরেই অচলাবস্থার দায় চাপাচ্ছেন বলে বৈশাখীর অভিযোগ। রাজনৈতিক অভিসন্ধি নিয়েই এ সব করা হচ্ছে বলে তাঁর দাবি। এর নেপথ্যে ফিরহাদ হাকিম (ববি) এবং স্থানীয় কাউন্সিলর আমিরুদ্দিন ববি রয়েছেন বলেও এ দিন তিনি মন্তব্য করেছেন।
আরও পড়ুন: থাকলে থাকুন, নইলে লুটেরাদের দলে যান, নাম না করে শুভেন্দুকে বার্তা মমতার
মিল্লি আল আমিন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে কলেজ থেকে উপড়ে ফেলে দিতে হবে বলে ববি সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন। সেই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করে শোভন ও বৈশাখী শুক্রবার ক্ষোভে ফেটে পড়েন। মিল্লি আল আমিনের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতেই তাঁরা রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। প্রায় ঘণ্টা দেড়েক রাজভবনে কাটিয়ে বাইরে বেরোন তাঁরা। রাজভনের গেটের সামনে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শোভন বলেন, ‘‘উনি যে শব্দ বলেছেন, তা কলকাতা পৌরসভার ঐতিহ্য, সরকারি পদে মন্ত্রিত্বের ঐতিহ্য, রাজনৈতিকভাবে কাজ করার ঐতিহ্য হিসেবে সম্পূর্ণ পরিপন্থী। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। একটা কলেজকে সামনে রেখে এই ধরনের মন্তব্য ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।’’
আর বৈশাখীর কথায়, ‘‘একটা তীব্র সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ থেকে ওই মন্তব্য করেছেন। বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলে যদি ওখানে অন্য কোনও খাতুন হতেন, এটা বলতে পারতেন না। তা হলে ওঁদের মুসলিম ভোট ব্যাঙ্কটা কমজোর হয়ে যেত।’’ একইসঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘উনি কি হিসেবে এ কথা বলছেন? কেন উনি বারংবার এই ধরনের কথা বলে মানুষকে উত্তেজিত করছেন? উনি সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন, আমি ওই এলাকায় গেলে যে আক্রান্ত হব না, সেই গ্যারান্টি কি আমাকে দিতে পারবেন?’’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও আর্জি জানান বৈশাখী। তিনি বলেন, ‘‘আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছি, ওঁর মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে উনি (ববি) যে মন্তব্য করেছেন তার জন্য মানুষের কাছে ক্ষমা চান।’’
আরও পড়ুন: বিধায়ক পদে শুভেন্দুর ইস্তফার দিকেই এখন তাকিয়ে বিজেপি
গোটা বিষয়টি বিশদে রাজ্যপালকে জানান শোভন। তবে রাজ্যপাল কি বলেছেন সে বিষয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি। এ প্রসঙ্গে শোভন বলেন, ‘‘যেহে তু রাজ্যপালের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাই এ বিষয়ে বিশদে কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে তাঁর অভিব্যক্তি দেখে মনে হয়েছে, তিনি পুরো বিষয়টি মনযোগ সহকারে শুনেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy