বিধিভঙ্গ: রবীন্দ্র সরোবর চত্বরে ফ্লাডলাইট জ্বালিয়ে, সাউন্ড বক্স (চিহ্নিত) বাজিয়ে চলছে ফুটবল খেলা। রবিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর আগের দিন এক দিকে শাসকদলের নেতাদের উপস্থিতিতে তীব্র শব্দে মাইক বাজিয়ে অনুষ্ঠান করার অভিযোগ উঠল হাওড়ার চ্যাটার্জিপাড়ায়। অন্য দিকে, কলকাতায় খাস রবীন্দ্র সরোবর তল্লাটে জাতীয় পরিবেশ আদালত এবং হাই কোর্টের নির্দেশ উড়িয়ে লাউডস্পিকারে ঘোষণা করে বা সূর্যাস্তের পরে ফ্লাডলাইট জ্বালিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলল বাঙালির ফুটবল-চর্চা। সচিত্র ও সগর্ব ঘোষণায় যে আয়োজনের নেপথ্যে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর ভাই তথা ক্রীড়াজগতের কর্মকর্তা স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের (বাবুন) উপস্থিতি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন চ্যাটার্জিপাড়ার টি৮ বাসস্ট্যান্ডে স্থানীয় ২২ নম্বর ওয়ার্ডে স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করেছিল তৃণমূল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন হাওড়া জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান লগনদেও সিংহ, জেলা সভাপতি কল্যাণ ঘোষ-সহ দলের জেলা নেতৃত্ব। এই অনুষ্ঠানের জন্য সকাল ৯টা থেকে মাইক বাজিয়ে প্রচার শুরু হয়। এর পরে জেলা নেতৃত্ব বক্তৃতা দেন। এলাকার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের থেকে অভিযোগ পেয়ে পুলিশ দু’বার গিয়ে মাইক বন্ধ করে দিলেও অনুষ্ঠান বন্ধ হয়নি।
অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা, তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি ম্যানেজার মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই স্বাস্থ্য শিবির পূর্ব নির্ধারিত থাকায় তা বন্ধ করা যায়নি। তবে পুলিশ এসে বলার পরেই মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।’’ আর লগনদেওয়ের দাবি, ‘‘আমরা কেউ বেশি বক্তৃতা দিইনি। স্বাস্থ্য শিবিরের উদ্বোধন করে চলে আসার আগে বলে এসেছিলাম, মাধ্যমিকের আগে মাইক বাজানো যাবে না। ওঁরা বন্ধ করে দিয়েছিলেন।’’
অন্য দিকে, হাই কোর্টের বেঁধে দেওয়া পরিবেশ-বিধি ভেঙে এ দিন দেদার খেলা চলল রবীন্দ্র সরোবরেও। কয়েক বছর আগেই রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামে ফ্লাডলাইট জ্বেলে আইএসএল-এর একটি খেলা ভেস্তে গিয়েছিল আদালতের হস্তক্ষেপে। কিন্তু এ দিন নিয়ম উড়িয়েই চলেছে স্থানীয় ক্লাবের ‘ফাইভ আ সাইড’ ফুটবল। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে দায় এড়িয়ে গিয়েছে রবীন্দ্র সরোবর থানার পুলিশও।
তবে গোটা ঘটনায় ক্ষুব্ধ, মুদার পাথেরিয়া নামে এক বাসিন্দা বলেন, “আমি বারণ করলেও কেউ শোনেননি। মাইকে খেলার ধারাবিবরণীও হয়েছে।’’ আয়োজক ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বাবুনবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে আমার সহযোগী আশিস গঙ্গোপাধ্যায় যা বলার বলবেন।’’ আশিসবাবুর দাবি, “লেকে মাইকে ছোটখাটো ঘোষণা হলেও গান-বাজনা হয়নি। ফ্লাডলাইটটি তো পুরসভার আলোর চেয়েও নিচু। আর স্টেডিয়ামে কন্যাশ্রী কাপের জন্য কিছু গাড়ি ঢুকতে পারে।’’
পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, “প্রায়ই শুনি, সরোবর তল্লাটে গাড়ি ঢোকানো বা পার্কিংয়ের নিয়ম ভাঙা হয়। তবে লাউডস্পিকার চালিয়ে ফুটবল খেলার অভিযোগ মারাত্মক। সন্ধ্যায় ওখানে আলো জ্বলার কথা নয়।’’ নিয়ম অনুযায়ী, সন্ধ্যা ৬টার পরে সরোবর চত্বরে প্রবেশ নিষিদ্ধ। তবু কোন যুক্তিতে সন্ধ্যায় ফুটবল খেলা চলল, কারও কাছে সদুত্তর মেলেনি। আশিসবাবু বলেন, “এমন খেলা কালেভদ্রেই হয়! আগামী রবিবার, ১৩ মার্চও লেকে খেলা হবে!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy