প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দেখা মিলছে শেয়ালের। নিজস্ব চিত্র
লকডাউনের পর থেকে বন্ধ রয়েছে দক্ষিণ দমদম পুরসভার ৩৫টি ওয়ার্ডের পথকুকুরদের নির্বীজকরণ প্রকল্প। তবে পুরসভা ও বেলগাছিয়ার প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে শুরু হওয়া সেই প্রকল্পের কর্মীরা অবশ্য প্রাণীদের সাহায্যের পথ খোলাই রেখেছেন।
ওই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত জনা কুড়ি দমদমের বাসিন্দা লকডাউনের পর থেকে প্রতিদিন নিয়ম করে দক্ষিণ দমদম পুর এলাকার পথকুকুর, বেড়াল এবং প্রাণী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের কয়েকটি ষাঁড় এবং শেয়ালকে খাওয়ানোর দায়িত্ব নিয়েছেন। ওঁরা রোজ সন্ধ্যা সাতটার পরে গাড়িতে খাবার নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। কখনও পুর এলাকার বিভিন্ন এলাকা, কখনও বন্ধ হয়ে থাকা বাণিজ্যিক এলাকা বড়বাজারের পথকুকুর আর বেড়ালদের খাওয়াতে ছুটে যান ওঁরা।
পুরসভার অস্থায়ী কর্মী কুহেলি গোস্বামীর বাড়িতেই কুড়ি কেজি চাল আর পাঁচ কেজি মাংসের ছাঁট দিয়ে প্রতিদিন রান্না হচ্ছে ওদের জন্য। তাঁকে সহায়তা করছেন ডলি দত্ত, প্রীতম সামন্ত, সন্দীপ সাহা, সুনির্মল দত্তেরা। বাজার বন্ধ থাকায় প্রাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের কয়েকটি ষাঁড়ের জন্যও আনাজপাতি, ফল নিয়ে যান ওঁরা।
আরও পড়ুন: মা-মেয়ের দেহ উদ্ধার, আটক ৪
যদিও এই কর্মকাণ্ড কত দিন চালাতে পারবেন, এ নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন ওই কর্মীরা। কারণ, বাধা সেই আর্থিক টানাপড়েন। কুহেলির কথায়, “কয়েক জন বন্ধু একজোট হয়ে চাঁদা তুলে ওদের খাবারের ব্যবস্থা করছি। আমাদের পাশে পুরসভা বা যে কোনও সংস্থা অথবা ব্যক্তি দাঁড়ালে এই কাজটা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।”
আরও পড়ুন: সোমবার সকাল থেকে ৪ দিন বন্ধ থাকবে করুণাময়ী সেতু
শুধু কুকুর-বেড়াল বা ষাঁড় নয়, রাতে বেলগাছিয়ার প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢোকা মাত্রই ওই কর্মীদের দেখে অনেক শেয়াল বেরিয়ে আসে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য চঞ্চল গুহ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শেয়াল আছে এটা শুনেছিলাম। কিন্তু একসঙ্গে এত শেয়াল বেরোতে দেখার কথা ভাবাই যায় না। আসলে লকডাউনের পর থেকে চারদিক নিস্তব্ধ আর খাবারের অভাব হওয়ায় ওদের দেখা মিলছে।” দক্ষিণ দমদম পুরসভার পশু চিকিৎসক গৌতম সরখেল বলেন, “শেয়াল শহরে প্রায় দেখাই যায় না। বিশ্ববিদ্যালয় চালু থাকলে পশুর ব্যবচ্ছেদ করে ফেলে দেওয়া দেহ ওরা খায়। মাটি খুঁড়ে পোকামাকড় খায়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ওরাও তীব্র খাদ্য সঙ্কটে ভুগছে।”
দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান বলেন, “এই কঠিন সময়ে ওঁরা যে কাজটা করছেন তা খুবই ভাল। পশুর সেবায় পুরসভার কোনও তহবিল না থাকলেও ব্যক্তিগত ভাবে ওঁদের অর্থ সাহায্য করব।”
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy