প্রজাতন্ত্র দিবসে ‘বাবু’কে দেখতে। আলিপুর চিড়িয়াখানায়। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
শীতের অলস রোদে গা এলিয়ে শুয়ে ছিল সে। দূরে দাঁড়ানো খুদেদের হই-হুল্লোড় যেন কিছুই কানে যাচ্ছিল না। এর পর ধীরে ধীরে পাশ ফিরল। তার পর অনেকক্ষণ নড়ন চড়ন নেই। বেশ কিছুক্ষণ পরে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আড়মোড়া ভেঙে এগিয়ে চলল নিজের গুহায়। বাঘের এই আলসেমি দেখে এক দর্শক হতাশ হয়ে বলে, ‘‘দূর! একটু হালুম, হুলুম করবে। তা না, এ নিশ্চয়ই বুড়ো বাঘ।’’ তবে বুড়ো হাড়ে যে ভেল্কি দেখানো যায় তা দেখাল ‘বাবু’। বৃহস্পতিবার প্রজাতন্ত্র দিবসে এই বাবুই ছিল আলিপুর চিড়িয়াখানার প্রধান আকর্ষণ।
প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে অধিকাংশ অফিস-কাছারি ছুটি। এ দিন সকালে রেড রোডের প্যারেড থেকে শুরু করে বইমেলা, যোধপুর পার্কের ‘খাইবার পাস’, চিড়িয়াখানা, ভিক্টোরিয়া, নিকো এবং ইকো পার্কের পাশাপাশি গঙ্গার পাড়ের পার্কে বসে জমিয়ে আড্ডার আসরে উপচে পড়ল ভিড়। একসঙ্গে রথ দেখা এবং কলা বেচার সুযোগ হাতছাড়া করতে পারেননি শহরের এবং পার্শ্ববর্তী জেলার সাধারণ মানুষেরা।
সকাল দশটা থেকে শুরু হয় রেড রোডের কুচকাওয়াজ। তার আগে থেকেই গোটা এলাকায় থিক থিক করছিল ভি়ড়। এগারোটার পরে কুচকাওয়াজের শেষে গন্তব্যের তালিকায় চলে আসে ভিক্টোরিয়া এবং চিড়িয়াখানা। সেখানে শুধু শিম্পাঞ্জির খেলা দেখতেই নয়, মাটিতে বসে এক সঙ্গে চুটিয়ে খাওয়া-দাওয়ার পর্বও চলে। আশেপাশের জেলা থেকে আসা বহু পরিবার এক সঙ্গে গোটা দিন কাটান শুধু চিড়িয়খানাতেই।
এ দিন বেলা এগারোটার পর থেকে রেড রোড সংলগ্ন রাস্তায় ছড়িয়ে যেতে থাকে ভিড়। হাওড়া থেকে আসা একদল যুবক প্যারেড দেখে সোজা চলে যান এলিয়ট পার্কে। তাঁদের কয়েক জনের গন্তব্য হয় ভিক্টোরিয়া।
আর কয়েক দিন পরেই সরস্বতী পুজো। তার পরে ভ্যালেন্টাইনস্ ডে। কিন্তু ২৬ জানুয়ারি ছুটির দিনটিও নষ্ট করতে চান না অনেক যুগলই। তাই পড়ন্ত বিকেলে মিলেনিয়াম পার্ক, এলিয়ট পার্কে এক সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন বহুক্ষণ। ‘খাইবার পাস’–এর কথা ইতিমধ্যে লোকের মুখে মুখে ঘুরতে শুরু করেছিল। যে কারণে স্ট্রবেরি রসগোল্লার রসে চুমুক দিয়ে ছুটির দিনকে উপভোগ করতে সেখানে সপরিবার হাজির হয়েছিলেন শহরের বহু বাসিন্দা। কাবাবের হরেক রকমের চেহারা, নানা রঙের রসগোল্লা দেখে তাক লেগে যায়। তাই রোদ উধাও হলেও ছুটির আমেজ বজায় ছিল সন্ধ্যা পর্যন্তও। গড়িয়াহাট থেকে সপরিবার এসেছিলেন বাবলু নস্কর। তাঁর ছোট্ট মেয়ে বিরিয়ানির দোকানের সামনে থেকে নড়তেই চাইছিল না।
মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সন্ধ্যে পর্যন্ত সাড়ে তিন লক্ষ টিকিট বিক্রি হয়েছে। চিড়িয়াখানায় সেই সংখ্যা সত্তর হাজার। নিক্কো পার্কে এ বারও টিকিট বিক্রি হয়েছে পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy