Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪
Fire Accident

বন্ধ ছিল স্মোক ডিটেক্টর ও স্প্রিঙ্কলার, পরিদর্শনে গিয়ে সন্দেহ দমকলের

দমকলের বক্তব্য, এই ধরনের শপিং মলে কোনও কাজ করতে গেলে স্থানীয় থানা ও দমকলকে জানিয়ে অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু ঝালাইয়ের কাজের আগে থানা বা দমকল, কারও অনুমতি নেওয়া হয়নি।

ভিতরের ধোঁয়া বার করার জন্য ভেঙে দিতে হয়েছিল অ্যাক্রোপলিস মলের কাচ। শনিবার।

ভিতরের ধোঁয়া বার করার জন্য ভেঙে দিতে হয়েছিল অ্যাক্রোপলিস মলের কাচ। শনিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২৪ ০৭:১৫
Share: Save:

অগ্নিকাণ্ডের পরেই শুক্রবার কসবার অ্যাক্রোপলিস মলের অগ্নি-সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। শনিবার সকালে দমকলের কর্তারা ওই মলে আগুনের উৎসস্থল পরিদর্শন করতে যান। সেই পরিদর্শনে অগ্নি-সুরক্ষায় খামতির বিষয়টিই উঠে এসেছে। দমকলকর্তারা জানিয়েছেন, শুক্রবার সকাল থেকে ওই শপিং মলের চারতলা ও পাঁচতলার মাঝের এক জায়গায় একটি বইয়ের দোকানের এসি-র কাজ চলছিল ঝালাই যন্ত্র ব্যবহার করে। তাঁদের অনুমান, ওই কাজ চলাকালীন গোটা শপিং মলের ওয়াটার স্প্রিঙ্কলার, স্মোক ডিটেক্টর এবং হিট ডিটেক্টর ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়েছিল।

দমকলের কর্তারা আগুনের উৎসস্থল পরিদর্শনে গিয়ে দেখেন, সেখানে অন্তত ১৫টি স্প্রিঙ্কলারের সব ক’টিই তাপে গলে গিয়েছে। দমকলের এক আধিকারিকের পর্যবেক্ষণ, ‘‘ওয়াটার স্প্রিঙ্কলারগুলি চালু অবস্থায় থাকলে পুরোপুরি গলে যেত না। সেগুলি গলে যাওয়ার অর্থ, আগুন লাগার সময়ে স্প্রিঙ্কলার ঠিকঠাক কাজ করেনি।’’ যদিও মলের তরফে পাল্টা দাবি করা হয়েছে, ‘‘অগ্নিকাণ্ডের সময়ে শপিং মলের ফায়ার অ্যালার্ম ঠিকঠাক বেজেছে। ওয়াটার স্প্রিঙ্কলার, ফায়ার অ্যান্ড ও স্মোক ডিটেক্টরও কাজ করেছিল। দমকলকে দেওয়া সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ঝালাইয়ের কাজ হচ্ছিল না। অন্য এক মিস্ত্রি কাজ করছিলেন।’’

দমকলের বক্তব্য, এই ধরনের শপিং মলে কোনও কাজ করতে গেলে স্থানীয় থানা ও দমকলকে জানিয়ে অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু ঝালাইয়ের কাজের আগে থানা বা দমকল, কারও অনুমতি নেওয়া হয়নি। এ দিন সকালে দমকলের ডিজি জগমোহন আধিকারিকদের নিয়ে মলের ভিতরে পরিদর্শন করেন।

মল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক শেষে জগমোহন বলেন, ‘‘অগ্নিকাণ্ডের আগের ২৪ ঘণ্টার সিসিটিভি ফুটেজ মল কর্তৃপক্ষের কাছে চাওয়া হয়েছে। আগুনের নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ আছে কি না, তা জানতে গোটা মলের সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ চেয়েছি। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত চতুর্থ তলটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। দমকলের অনুমতি ছাড়া সেখানে ঢোকা যাবে না।’’ তবে, ঝালাইয়ের কাজের সঙ্গে অগ্নিকাণ্ডের সরাসরি যোগ রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান জগমোহন।

এ দিন দমকলের ডিজি বলেন, ‘‘ওই শপিং মলের অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা খতিয়ে দেখছেন দমকলের আধিকারিকেরা। শপিং মল ও বহুতলগুলির অগ্নি-সুরক্ষার রিপোর্ট নির্দিষ্ট সময় অন্তর দমকলের কাছে জমা দেওয়ার কথা। সেই সংক্রান্ত রিপোর্টও মল কর্তৃপক্ষের কাছে চাওয়া হয়েছে।’’ জগমোহন জানান, ফরেন্সিক দল ইতিমধ্যেই নমুনা সংগ্রহ করেছে। সেই রিপোর্ট এলে তা খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি, মল কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাওয়া প্রশ্নগুলির উত্তর খতিয়ে দেখে আগুনের ঘটনায় মামলা রুজু করা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

শপিং মল কবে চালু হবে? দমকলের ডিজি জানান, দমকল ছাড়পত্র দিলে তবেই মল আবার চালু হবে। পুলিশ জানতে পেরেছে, আপৎকালীন পরিস্থিতিতে নামার জন্য যে সিঁড়ি রয়েছে, সেখানে একাধিক বস্তা ফেলে রাখা হয়েছিল। মল কর্তৃপক্ষের কাছে এর কারণ জানতে চেয়েছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি, আদৌ আগুন নেভানোর মহড়া হত কি না, অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থার রক্ষণাবেক্ষণ শেষ কবে হয়েছিল, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কত জন কর্মী ছিলেন, তাঁদের কী প্রশিক্ষণ ছিল—কর্তৃপক্ষের কাছে এমন একাধিক প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়েছেন তদন্তকারীরা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy