Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
Rain fall

Kolkata Rain: সামান্য বৃষ্টিতেও জল সার্ভিস রোডে, চিন্তায় বাসিন্দারা

আশঙ্কা এখনও পুরোপুরি বাস্তবে পরিণত না হলেও একেবারে চিন্তামুক্ত হতে পারছেন না এই সব এলাকার বাসিন্দারা।

অল্প বৃষ্টিতেও জল জমেছে বিধাননগরের হলদিরাম এলাকার সার্ভিস রোডে। রবিবার।

অল্প বৃষ্টিতেও জল জমেছে বিধাননগরের হলদিরাম এলাকার সার্ভিস রোডে। রবিবার। ছবি— আর্যভট্ট খান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:২০
Share: Save:

বর্ষায় ভোগান্তির আতঙ্কের স্মৃতি এখনও টাটকা। ডিসেম্বরের গোড়ায় ফের দুর্যোগের পূর্বাভাসের খবর জানার পর থেকেই সিঁদুরে মেঘ দেখেছিলেন বাগুইআটি, ভিআইপি রোডের হলদিরাম, চিনার পার্ক-সহ বিধাননগর পুরনিগমের বেশ কিছু এলাকার মানুষ। নিম্নচাপের জেরে আগামী দিনে আরও ভারি বৃষ্টি হলে ফের জলমগ্ন হয়ে যাবে না তো তাঁদের এলাকা?

আশঙ্কা এখনও পুরোপুরি বাস্তবে পরিণত না হলেও একেবারে চিন্তামুক্ত হতে পারছেন না এই সব এলাকার বাসিন্দারা। রবিবার বিকেল পর্যন্ত হাল্কা বৃষ্টিতেই ফের
ভিআইপি রোডের হলদিরাম এলাকার সার্ভিস রোড আংশিক জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের প্রশ্ন, নিম্নচাপের জেরে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সামান্য বৃষ্টিতেই কেন জল জমছে রাস্তায়? যদিও বিধাননগর পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত জল জমার কোনও খবর নেই। বৃষ্টি না বাড়লে আশা করা যায় সমস্যা হবে না।’’ এই আশ্বাসেও অবশ্য আতঙ্ক কাটছে না এলাকাবাসীর।

দু’-তিন মাস আগে বিবি ক্যানাল উপচে জলমগ্ন হয় শাস্ত্রীবাগান, জর্দাবাগান, বিদ্যাসাগর পল্লি, রবীন্দ্র পল্লি, শচীন্দ্রলাল সরণি-সহ বিভিন্ন এলাকা। বৃষ্টি কমার পরেও বেশ কয়েকটা দিন এলাকার মানুষজন জলবন্দি ছিলেন। অনেক একতলা বাড়ির ভিতরেও জল ঢুকে যায়। এ ছাড়া, সল্টলেকের কেষ্টপুর খালেও ইতিমধ্যে পলি এবং আবর্জনা জমে চর দেখা দিয়েছে। এই খালের নাব্যতাও উল্লেখযোগ্য ভাবে হ্রাস পাওয়ায় চলতি বর্ষায় খাল সংলগ্ন ব্লকগুলির একাধিক রাস্তা জলমগ্ন হয়ে যায়।

এই পরিস্থিতি যাতে আগামী বর্ষায় না হয়, তার জন্য সম্প্রতি মধ্যমগ্রামে প্রশাসনিক বৈঠকে খাল সংস্কারের প্রসঙ্গ তোলেন রাজারহাট-গোপালপুরের বিধায়ক অদিতি মুন্সী। মুখ্যমন্ত্রী অদিতিকে পরামর্শ দেন, এই সমস্যার কথা সেচ দফতরের কাছে লিখিত ভাবে জানাতে।

বিধাননগর পুরসভার রাজারহাট-গোপালপুর, রাজারহাট-নিউ টাউন এবং বিধাননগর— এই তিন বিধানসভা এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলেই একাধিক খাল রয়েছে। সেগুলির জলবহনের ক্ষমতা তলানিতে এসে ঠেকেছে বলেই অভিযোগ। রাজ্যের সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র জানিয়েছেন, খাল সংস্কারের মাস্টার প্ল্যান তৈরি হয়ে গিয়েছে।
আগামী বর্ষার আগে খালগুলির সংস্কার করা হবে।

কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, যত দিন না খালগুলো যথাযথ ভাবে খনন করে পলিমুক্ত না-হচ্ছে, তত দিন ভারী বৃষ্টিতে জল জমার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে, ডিসেম্বর মাস তো পড়ে গেল। খাল সংস্কার বা খালের পলি তোলার কাজ আর কবে থেকে শুরু হবে?

এলাকার বিধায়ক অদিতি মুন্সি জানিয়েছেন, বিধাননগর পুরনিগমের অন্তর্গত ৬, ৭, ১২, ১১, ৫ ও ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জল নিউ টাউনের ঘুনি খালের মধ্যে দিয়ে যায়। এই ঘুনি খালের জল গিয়ে পড়ে লোয়ার বাগজোলা খালে। এ ছাড়াও বিমানবন্দরের রানওয়ের একটি বড় অংশের জলও এই ওয়ার্ডগুলির উপর দিয়ে ঘুনি খালে গিয়ে পৌঁছয়। অদিতি বলেন, ‘‘এত দিন এই বিশাল পরিমাণ জল ঘুনি খালে ফেলার জন্য অস্থায়ী পাম্প ব্যবহার করা হত। হিডকোর সহযোগিতায় এক কোটি ৭০ লক্ষ টাকা খরচ করে একটি স্থায়ী পাম্পের ভিত্তিস্থাপন করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে এই কাজ দ্রুত গতিতে হবে। পরের বর্ষার আগে এই পাম্প কাজ করতে শুরু করলে এলাকার জল দ্রুত নেমে যাবে।’’

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, শুধু পাম্প বসালেই কি সমাধান হবে? খালগুলি যে ভাবে নাব্যতা হারিয়েছে, তাতে খালের পলি খনন না করে শুধু পাম্প বসালে সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে কী ভাবে? শাস্ত্রীবাগান, জর্দাবাগান, বিদ্যাসাগর পল্লি এলাকার বাসিন্দাদের প্রশ্ন, বিবি ক্যানালের ধার ঘেঁষে যে ভাবে দোকানপাট বসে গিয়েছে, বহুতল হয়ে গিয়েছে তাতে ওই খালের পুরোপুরি খননও কি আর আদৌ সম্ভব?

যদিও এলাকার বিধায়কের আশ্বাস, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে আগামী জানুয়ারি থেকেই খালের পলি খনন শুরু হবে। বিবি খাল লোয়ার বাগজোলা খালের সঙ্গে যেখানে মিশছে, সেখানেও একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পাম্প বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Rain fall flood Kolkata Street
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE