Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Fire in Anandapur

‘বাজার করে ফিরে দেখলাম ঘরটা জ্বলছে’! আনন্দপুরে সব হারানোর হাহাকার, ছাই পরীক্ষার্থীর বই, অ্যাডমিটও

সোমবার উচ্চ মাধ্যমিকের ইতিহাস, অঙ্ক, সাইকোলজি পরীক্ষা রয়েছে। ছাত্রী ইতিহাস পরীক্ষা দেবেন। সকালে ঘরে বসে পড়ছিলেন। আচমকাই আগুন গ্রাস করে গোটা বস্তি।

image of fire

জ্বলছে আনন্দপুরের বস্তি। ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৩:৩৫
Share: Save:

রবিবারের সকালে বাজার করতে গিয়েছিলেন স্বামী-স্ত্রী। ইচ্ছা ছিল, ভাল-মন্দ বাজার করবেন। সাধ্যমতো কেনাকাটাও করেছিলেন। ফিরে দেখেন, ঘরটাই নেই। পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। পুড়ে ছাই সামান্য সঞ্চয়ের টাকাটাও। রবিবার সকালে আনন্দপুরের বস্তিতে আগুন লাগার পর এই ছবিই ধরা পড়েছে।

সোমবার থেকে কী ভাবে চলবে সংসার, কোথায় থাকবেন, এখন সেটাই চিন্তা আনন্দপুরের ওই দম্পতি। তাঁরা বলেন, ‘‘বাজার করে ফিরে দেখলাম ঘরটাই জ্বলছে। জানি না কী হবে!’’ ওই দম্পতির মতোই বিপাকে এক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। সোমবার উচ্চ মাধ্যমিকের ইতিহাস, অঙ্ক, সাইকোলজি পরীক্ষা রয়েছে। ছাত্রী ইতিহাস পরীক্ষা দেবেন। সকালে ঘরে বসে পড়ছিলেন। আচমকাই আগুন গ্রাস করে গোটা বস্তি। কোনও মতে ঘর থেকে ছুটে বেরিয়ে আসেন। কিন্তু বই-খাতা আর বার করে আনা হয়নি। আগুনে পুড়ে ছাই অ্যাডমিট কার্ডও। কান্নায় ভেঙে পড়েন ছাত্রী। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘সোমবারের পরীক্ষা দেব কী করে? বই, অ্যাডমিট কার্ড পুড়ে গিয়েছে।’’

বস্তির অনেকেই খাবার, চায়ের দোকান চালাতেন। ঝুপড়িতে মজুত থাকত সিলিন্ডার, স্টোভ। আগুন লেগে সে সব সিলিন্ডারে বিস্ফোরণ হতে শুরু করে। দোকানের জিনিসপত্রও পুড়ে ছাই। দোকান রয়েছে এ রকমই এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘মাথার ছাদ তো গেলই। সঙ্গে রুজিও গেল। কাল থেকে কী ভাবে চলবে, জানি না।’’ যখন ঘর পুড়ছে, তখন অনেকেই নিজের শেষ সম্বলটুকু রক্ষার জন্য এগিয়ে যান। দমকল কর্মীরা কোনও মতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কান্নায় ভেঙে পড়েন বহু বাসিন্দা। এক মহিলা বলেন, ‘‘চোখের সামনে সব পুড়ে গেল। এক কাপড়ে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে এসেছি। কাল থেকে কী পরব, কী খাব, জানি না। ঘরে নগদও পুড়ে ছাই।’’ বহু মানুষেরই ঘরে সঞ্চিত কিছু নগদ ছিল। সে সবও বার করে আনতে পারেননি তাঁরা।

রবিবার সকালে আনন্দপুরের ঝুপড়িতে আগুন লাগে। হাওয়ার গতি বেশি থাকায় তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। অন্তত ৫০টি ঝুপড়ি ঘর, দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। হতাহতের খবর মেলেনি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের চারটি ইঞ্জিন। আগুন ছড়াতে থাকলে আরও ছ’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। দমকলের তরফে জানানো হয়, আর কোনও উদ্বেগের কারণ নেই। তবে আগুনের গ্রাসে ঘরছাড়া বহু মানুষ। কোথায় থাকবেন, কী ভাবে পেট চলবে, সেটাই বড় প্রশ্ন।

অন্য বিষয়গুলি:

Fire Slum
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy