—প্রতীকী চিত্র।
তিন মাস আগে ইন্টারভিউ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। বিশেষ কারণবশত তা স্থগিত রেখেছিলেন তৎকালীন স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা। তার পর থেকে আজ পর্যন্ত কেউ এখনও জানেন না, কবে বিভাগীয় পদোন্নতির সেই ইন্টারভিউ নেওয়া হবে! তার জেরেই বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিক্ষক-চিকিৎসকের বহু পদ ফাঁকা পড়ে রয়েছে।
অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে তেমন হেলদোল নেই স্বাস্থ্য ভবনেও। তবে অন্দরের খবর, স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা পদে স্থায়ী ভাবে কেউ না থাকার কারণেই বিষয়টি আটকে আছে। আগের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা অবসর নেওয়ার পরে এখন অবসরপ্রাপ্ত আর এক কর্তাকে ওই পদের দায়িত্ব দেওয়া রয়েছে। যদিও স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘কিছু সমস্যার জন্য প্রক্রিয়াটি স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে শীঘ্রই পদক্ষেপ করা হবে।’’ কিন্তু কবে? সেই প্রশ্নই তুলছেন বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের বিভাগীয় প্রধানেরা। শহরের একটি হাসপাতালের এক বিভাগীয় প্রধানের কথায়, ‘‘আমার দফতরে আমি ছাড়া আর মাত্র এক জন প্রফেসর। আরও দু’টি পদ ফাঁকা। লোক দেবে কোথা থেকে? বিভাগীয় পদোন্নতি আটকে থাকায় অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর থেকে প্রফেসর, কোনও পদোন্নতিই হচ্ছে না।’’ তিনি আরও জানাচ্ছেন, এর ফলে বিভিন্ন হাসপাতালে সিনিয়র চিকিৎসকের ঘাটতি প্রকট হচ্ছে।
গত ৩১ জুলাই স্বাস্থ্য দফতর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, মোট ১১২৭টি শূন্য পদ বিভাগীয় পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ করা হবে। এর মধ্যে প্রফেসরের ২৮০টি, অ্যাসোসিয়েট প্রফেসরের ৪২৮টি এবং সহকারী (অ্যাসিস্ট্যান্ট) প্রফেসরের ৪১৯টি পদ ফাঁকা রয়েছে। জানানো হয়, গবেষণাপত্র প্রকাশ, চাকরির সময়সীমা-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করে দেওয়া যোগ্যতামান যাঁরা পয়লা জুলাইয়ের মধ্যে সম্পন্ন করেছেন, তাঁরাই পদোন্নতির জন্য আবেদন করতে পারবেন। সেই মতো অনেকেই আবেদন করেছেন। বিভাগীয় পদোন্নতির জন্য কমিটিও গড়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
সূত্রের খবর, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, শিক্ষক স্তরে পদোন্নতির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীর শিক্ষকতায় বিশেষ প্রশিক্ষণ থাকতে হবে। কিন্তু রাজ্যের একাধিক মেডিক্যাল কলেজের কর্তৃপক্ষের দাবি, সেই প্রশিক্ষণ অনিয়মিত। বহু সময়েই এনএমসি-র তরফে প্রশিক্ষণের অনুমতি মিলছে না। এ হেন পরিস্থিতিতে কমিটি মত দেয়, ইন্টারভিউয়ে পাশ করা প্রার্থীদের মধ্যে যাঁদের প্রশিক্ষণ আছে, তাঁরা পদোন্নতি পাবেন। আর যাঁদের নেই, তাঁদের পদোন্নতি হবে প্রশিক্ষণ হওয়ার পরে। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত কোনওটিই হয়নি। বদলে, গত ১৯ সেপ্টেম্বর তৎকালীন স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য স্থগিতাদেশ জারি করেন।
বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে চিকিৎসক সংগঠনগুলিও। ‘অ্যাসোসিয়েশন অব হেল্থ সার্ভিস ডক্টর্স’-এর সাধারণ সম্পাদক মানস গুমটা বলেন, ‘‘সময় মতো প্রোমোশন না হওয়ায় শিক্ষক-চিকিৎসকদের মধ্যে যেমন তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে, তেমনই এনএমসি-র পরিদর্শন হলে বহু মেডিক্যাল কলেজের ফেল করার আশঙ্কা বাড়ছে। কোনও মেডিক্যাল কলেজের বা কোনও স্নাতকোত্তর পাঠক্রমের স্বীকৃতি বাতিল হলে সেই দায় স্বাস্থ্য দফতর নেবে তো?’’ পাশাপাশি এ-ও অভিযোগ, প্রতি বছর দু’বার পদোন্নতির ইন্টারভিউ হওয়ার কথা। এখন তা দু’বছরে এক বার হয়েছে। সেটাও সময় মতো হচ্ছে না। স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ঘরে তালা। দীর্ঘ দু’মাস অচলাবস্থা চলছে। স্বাস্থ্য-শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ কাজ চালাচ্ছেন অবসরপ্রাপ্ত প্রশাসক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy