বন্ধ হওয়া তো দূর, বরং বিবাদ কমার কোনও লক্ষণই নেই! মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানেই সিন্ডিকেট-বিবাদের জেরে এ বার উত্তপ্ত হয়ে উঠল গড়িয়াহাট এলাকা। শুক্রবার রাতের ওই ঘটনায় কয়েক রাউন্ড গুলি চলে বলেও অভিযোগ। তবে কেউ গুলিবিদ্ধ হননি। ওই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের নাম চন্দন যাদব এবং রাম দাস।
পুলিশি সূত্রের খবর, ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডের পালপাড়ায় একটি জমি দখলকে কেন্দ্র করে বিবাদের সূত্রপাত। আর তার জেরেই শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ উত্তপ্ত হয়ে উঠে রাইফেল রেঞ্জ রোড। এলাকার দখল নিয়ে চন্দন ওরফে বিট্টুর গোষ্ঠীর সঙ্গে সুরজ দাস এবং তাঁর ভাই রামের বিবাদ দীর্ঘ দিনের। স্থানীয় সূত্রের খবর, আগে এলাকার দখল বিট্টুর গোষ্ঠীর হাতে থাকলেও ইদানীং সেখানে সুরজ-রামের দাপট বাড়ছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই রাতে নিজের এলাকাতেই ছিলেন চন্দন। সেই সময়ে দলবল নিয়ে তাঁর উপরে চড়াও হন সুরজ এবং রাম। আচমকা মারধর শুরু করেন তাঁরা। লাঠি, বাঁশের আঘাতে মাথা ফাটে চন্দনের। খবর পেয়ে চন্দনের দলবল ঘটনাস্থলে চলে আসে। অভিযোগ, এর পরেই আচমকা বন্দুক বার করে গুলি চালান চন্দন। তবে অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় সেই গুলি। পরে খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। পাশাপাশি, রাতেই গ্রেফতার করা হয় দু’জনকে।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘রাতে খাওয়াদাওয়ার পরে রাস্তায় হাঁটতে বেরিয়েছিলাম। হঠাৎ শুনি, চিৎকার-চেঁচামেচির আওয়াজ। এর পরেই গুলির আওয়াজ পাই।’’
জানা গিয়েছে, এক সময়ে গোটা এলাকার সিন্ডিকেট ব্যবসা থেকে শুরু করে জমি-বাড়ি বিক্রি— সবই ছিল চন্দনের নিয়ন্ত্রণে। ২০১৮ সালে তাঁর মায়ের আচমকা মৃত্যুর পর থেকে বেশির ভাগ সময়ে ঘরেই থাকতেন তিনি। সেই সুযোগে এলাকায় দাপট বাড়াতে থাকে সুরজ এবং রাম। এমনকি, এর আগেও একাধিক ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছিল ওই দুই ভাইকে। তাঁরা শাসকদলের ঘনিষ্ঠ বলেই স্থানীয়দের দাবি।
তৃণমূলের দক্ষিণ কলকাতা জেলা সভাপতি দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘দু’দলের মধ্যে গন্ডগোল। নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য এই ঝামেলা। এর সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক যোগ নেই। আমাদের দল কোনও ভাবেই কোনও রকম সমাজবিরোধী কাজকর্ম সমর্থন করে না। ওখানে যদি এমন কিছু ঘটে থাকে, তা হলে দোষীদের শাস্তি হওয়া উচিত।’’
প্রসঙ্গত, মাসকয়েক আগে এই সিন্ডিকেট-বিবাদের জেরেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল বেহালা। দু’গোষ্ঠীর সংঘর্ষে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল গোটা এলাকা। মাসখানেক আগে এন্টালি এলাকায় গুলি চালানোর ঘটনাতেও সামনে এসেছিল সিন্ডিকেট-বিবাদ। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে ফের শহরে সিন্ডিকেট-বিবাদের জেরে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটল।