প্রতীকী ছবি
লুটপাটের উদ্দেশ্যেই খুন করা হয়েছে শেক্সপিয়র সরণি থানা এলাকার বাসিন্দা, ৯১ বছরের রেণুকা চৌধুরীকে। ফ্ল্যাটে লুকিয়ে থেকে বৃদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে খুন করার পরে সোমবার রাত ১২টা ৯ মিনিট নাগাদ সম্ভবত আবাসনের পিছনের পাঁচিল টপকে বেরিয়ে গিয়েছিল প্রাক্তন গাড়িচালক দুধকুমার ঢাল। সারা রাত ঘোরাঘুরি করার পরে ভোরে ডানকুনিতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয় সে। আবাসনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে এবং ধৃত দুধকুমারকে জেরা করে এমনই তথ্য মিলেছে বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন।
ওই খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে বুধবার দুধকুমারকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। ঘটনার রাতে সে কোথায় ছিল এবং কী কী ঘটেছিল, তা পুলিশকে দেখায় অভিযুক্ত। এ দিন ঘটনাস্থলে যায় কলকাতা পুলিশের ফরেন্সিক দলও। তারা বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করে। এই খুনের ঘটনায় আর কেউ যুক্ত আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। এ জন্য দুধকুমারকে আরও জেরা করা হবে। বুধবার তাকে
ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়। সরকারি কৌঁসুলি অভিজিৎ ভট্টাচার্য আদালতে জানান, ধৃত ঘটনার মূল অভিযুক্ত। তার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না, তা জানতে দুধকুমারকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছিল। আদালত ১১ নভেম্বর পর্যন্ত তার পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনার আগের দিন অর্থাৎ রবিবার শেক্সপিয়র সরণির ওই আবাসনে দেখা গিয়েছিল দুধকুমারকে। তাকে দেখেছিলেন বৃদ্ধার বড় ছেলে অভয় চৌধুরী। সোমবার বিকেলে ফের দুধকুমার ওই আবাসনে আসে।
অভয়বাবুকে সে জানায়, রেণুকাদেবী তাকে ডেকেছেন। যা বিশ্বাস করেছিলেন অভয়বাবু। মঙ্গলবার সকালে তিনিই মাকে তাঁর নিজের বিছানায় মৃত অবস্থায় দেখতে পান। প্রশ্ন উঠেছে, সোমবার সন্ধ্যায় যদি অভয়বাবুদের ফ্ল্যাটে ঢুকে থাকে দুধকুমার, সারা রাত কোথায় ও কী ভাবে লুকিয়ে ছিল সে? ফ্ল্যাটের ভিতরেই সে লুকিয়ে ছিল বলে পুলিশের অনুমান। রাতে রেণুকাদেবীকে খুন করার পরে লুটপাট চালিয়ে সুযোগ বুঝে দুধকুমার বেরিয়ে যায় বলে তদন্তকারীদের দাবি। রেণুকাদেবী ছাড়াও ওই ফ্ল্যাটে থাকেন অভয়বাবু এবং পরিচারক। কিন্তু কেউই কিছু টের পেলেন না কেন, সেটাই ভাবাচ্ছে পুলিশকে। পরিচারকের ভূমিকাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
তদন্তে জানা গিয়েছে, আবাসনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দুধকুমারকে একাধিক বার দেখা গিয়েছে। শেষ বার তাকে দেখা গিয়েছিল সোমবার রাত ১২টা ৯ মিনিট নাগাদ আবাসনের পিছনে। কিন্তু মূল গেট দিয়ে অভিযুক্তের বেরিয়ে যাওয়ার ছবি ক্যামেরায় ধরা
পড়েনি। তদন্তকারীদের অনুমান, পিছন দিক দিয়েই আবাসনের বাইরে চলে যায় দুধকুমার। আদতে বজবজের বাসিন্দা দুধকুমারকে মঙ্গলবার ডানকুনির গড়াইগাছা বিধানপল্লি থেকে ধরা হয়। তার কাছে মিলেছে দু’টি মোবাইল।
পুলিশ জানাচ্ছে, ধৃতের বিরুদ্ধে আগেও ওই ফ্ল্যাট থেকে চুরির অভিযোগ উঠেছিল। দু’বছর গাড়িচালক হিসাবে কাজ করার পরে ২০১৯-এ গয়না চুরির অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। এর পরই তাকে ছাড়িয়ে দেন ওই পরিবারের সদস্যেরা। কিছু দিন আগে ফের কাজে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে সে এসেছিল। রাজি হননি রেণুকাদেবী। এক পুলিশকর্তার দাবি, দুধকুমারের টাকার দরকার ছিল। এ দিকে তাকে কেউ কাজে নিচ্ছিল না। তখনই ওই ফ্ল্যাটে লুটের পরিকল্পনা করে সে। ফ্ল্যাটের একটি ঘরে লুকিয়ে থেকে বৃদ্ধাকে খুন করে গয়না ও মোবাইল নিয়ে পালায়। কিন্তু শুধু লুট, না কি এর পিছনে পুরনো আক্রোশ রয়েছে, তা দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy