এই পুকুরেই এসে মেশে নিকাশির জল। উল্টোডাঙায়। নিজস্ব চিত্র
শৌচাগারের বর্জ্য জল ঢুকছে পুকুরে। আর সেই পুকুরের জল ব্যবহারও করছেন এলাকার বাসিন্দারা। খাস কলকাতায়, উল্টোডাঙা স্টেশনের পাশে একটা বড় জলাশয়ে বছরের পর বছর ধরে ঢুকছে ওই নোংরা জল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বারবার জানানো হয়েছে পুর প্রশাসনকে। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পুরসভার এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, এলাকায় নিকাশি নালার পাইপ বসানোয় ত্রুটির জেরেই খেসারত দিতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।
শৌচাগারের বর্জ্য পুকুরে মিশলে কী হতে পারে?
‘‘এ তো ভয়ঙ্কর ব্যাপার!’’ বললেন রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র। তিনি জানান, শৌচাগারের বর্জ্য মিশে থাকলে জলের মূল ধর্মই বদলে যাবে। জলের কোনও গুণাগুণ থাকবে না। জলে দ্রবীভূত থাকা অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাবে। কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া বাড়বে। পুকুরপাড়ে থাকা একাধিক বাসিন্দার কথায়, ‘‘৩০-৩৫ বছর হতে চলল। এ ভাবেই আমরা রয়েছি। এই পুকুরের জল খাই না ঠিকই। তবে স্নান, কাপড় কাচা, বাসন মাজা— সবই করতে হয়।’’
পরিবেশবিদদের কথায়, ‘‘ওই জল একটা সময়ে বিষাক্ত হয়ে যাবে। যা হাতে-পায়ে লাগলে চর্মরোগ হবে।’’ এমনটা কয়েক জনের হয়েছে বলেও জানালেন বাসিন্দারা। এ ব্যাপারে আগেই পুর প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল বলে মনে করেন পরিবেশবিদেরা।
কিন্তু কেন এমন হল?
এলাকাটি কলকাতা পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে। দীর্ঘকাল বামেদের হাতে থাকা ওই ওয়ার্ড গত পুর নির্বাচনে তৃণমূলের হাতে এসেছে। পুরসভার নিকাশি বিভাগের এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, ২৫ বছরেরও বেশি আগে তৈরি ওই নিকাশি নালা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি মেনে গঠিত নয়। নিকাশির পাইপলাইন বসানোর কাজও নিয়ম মেনে হয়নি।
জল বেরোনোর রাস্তা উঁচু হওয়ায় সমস্যা ছিল। তাতে নিকাশির জল আটকে থাকত। পরে ওই সমস্যা মেটাতে তা যোগ করে দেওয়া হয় পুকুরের সঙ্গে। তা থেকেই এই বিপত্তি। তিনি জানান, ওই কাজ যাঁরা করেছিলেন, তাঁরা অনেক আগেই অবসর নিয়েছেন।
এখন কী হবে?
স্থানীয় কাউন্সিলর অনিন্দ্য রাউত ওই বরোর চেয়ারম্যানও। তাঁর দাবি, গত বছরই স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টি তাঁকে জানিয়েছেন। এলাকার নিকাশি লাইন বদলানোর জন্য পুর প্রশাসনকে জানানোও হয়। কিন্তু আর্থিক অসুবিধায় গত বার করা যায়নি। এ বার সেটি অনুমোদন পেয়েছে। ইতিমধ্যেই পাইপ বসানোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। পুরসভার তিন নম্বর বরোর ইঞ্জিনিয়ার জানান, কাল, সোমবার থেকে কাজ শুরু হবে। প্রায় আট লক্ষ টাকা খরচ হবে পাইপ বসাতে। আগামী দেড় মাসের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy