Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪
Mass Resignation

নবান্নের উপর গণইস্তফার চাপ বাড়ছে! ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়ে পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি কলকাতা মেডিক্যালেও

আরজি করের সিনিয়র ডাক্তারেরা গণইস্তফা দেন মঙ্গলবার দুপুরে। কিছু ক্ষণ পরেই কলকাতা মেডিক্যালেও গণইস্তফার হুঁশিয়ারি সিনিয়র ডাক্তারদের। জুনিয়রদের দাবি পূরণের জন্য ২৪ ঘণ্টার সময় দিয়েছেন।

মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতা মেডিক্যালের সিনিয়র ডাক্তারদের সাংবাদিক বৈঠক।

মঙ্গলবার দুপুরে কলকাতা মেডিক্যালের সিনিয়র ডাক্তারদের সাংবাদিক বৈঠক। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:০৭
Share: Save:

জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের প্রতি সংহতিতে সিনিয়রদের গণইস্তফার আঁচ দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ছে। শুরু আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে। ৫০ জন সিনিয়র ডাক্তার গণইস্তফা দেন মঙ্গলবার দুপুরে। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই কলকাতা মেডিক্যালেও গণইস্তফার হুঁশিয়ারি সিনিয়র ডাক্তারদের। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জুনিয়রদের দাবি পূরণ না হলে, তাঁরাও গণইস্তফা দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কলকাতা মেডিক্যালের সিনিয়রেরা।

কলকাতা মেডিক্যালের সিনিয়র ডাক্তারেরা বলেন, “জুনিয়র ডাক্তারেরা বিচারের জন্য লড়াই করছেন। তাঁরা কর্মবিরতি থেকে ফিরে এসেছেন। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে তাঁরা রোগীদের পরিষেবা দিচ্ছেন। কিন্তু অনশনরত জুনিয়র ডাক্তারদের স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা চিন্তিত এবং উদ্বিগ্ন।” জুনিয়র ডাক্তারদের দাবিদাওয়ার সঙ্গে তাঁরা সম্পূর্ণ সহমত, সে কথাও জানিয়েছেন সিনিয়র ডাক্তারেরা। জুনিয়র ডাক্তারদের স্বাস্থ্যের অবনতির বিষয়টি সংবেদনশীলতার সঙ্গে বিবেচনা করারও অনুরোধ করেন তাঁরা। বুধবারের মধ্যে সরকার জুনিয়র ডাক্তারদের আলোচনার জন্য না ডাকলে, গণইস্তফারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কলকাতা মেডিক্যালের সিনিয়র ডাক্তারেরা।

‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট’-এর সাত জন প্রতিনিধি ১০ দফা দাবিতে আমরণ অনশন করছেন ধর্মতলায়। গত শনিবার থেকে শুরু হয়েছে আমরণ অনশন কর্মসূচি। প্রথমে ছ’জন অনশনে বসেছিলেন। পরে আরজি করের জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতোও যোগ দেন আমরণ অনশন কর্মসূচিতে। জুনিয়র ডাক্তারদের দাবিদাওয়াগুলিকে শুরু থেকেই সমর্থন জানিয়ে এসেছেন সিনিয়র ডাক্তারেরা। জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির সময়ে রোগীর চাপ সামাল দিয়েছেন তাঁরাই। প্রয়োজন অনুযায়ী অতিরিক্ত সময় কাজ করেছেন। সিনিয়রদের পরামর্শেই কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে আন্দোলনের অন্য পন্থা খুঁজতে আলোচনা করেছেন জুনিয়রেরা।

ধর্মতলায় অনশনকারীদের পাশেও প্রতীকী অনশনে বসতে দেখা গিয়েছে সিনিয়র ডাক্তারদের। ব্যক্তিগত উদ্যোগে বিভিন্ন সিনিয়র চিকিৎসক কেউ ১২ ঘণ্টা, কেউ ২৪ ঘণ্টার প্রতীকী অনশনে শামিল হয়েছেন। মঙ্গলেও তার অন্যথা হয়নি। এরই মধ্যে জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনে সংহতির বার্তা দিতে গণইস্তফার হুঙ্কার আরজি করের বাইরেও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে সিনিয়র ডাক্তারদের মধ্যে। প্রথম শুরু হয়েছিল আরজি কর থেকে। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে কলকাতা মেডিক্যালেও।

রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়ে গণইস্তফা দিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তাকে চিঠি পাঠিয়েছেন আরজি করের সিনিয়র ডাক্তারেরা। আন্দোলনকারীদের দাবিদাওয়ার ব্যাপারে সরকার যাতে দ্রুত পদক্ষেপ করে, সেই আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। আরজি করের এক সিনিয়র চিকিৎসক বলেন, ‘‘আমরণ অনশন হল একেবারে শেষ অস্ত্র। বাধ্য হয়েই জুনিয়র চিকিৎসকেরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।” সরকারের দ্রুত পদক্ষেপের দাবিতেই এই গণ ইস্তফার সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন তিনি। দাবি পূরণ না হলে পরবর্তী সময়ে ব্যক্তিগত স্তরেও ইস্তফার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।

প্রসঙ্গত, সোমবারই রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ আমরণ অনশনরত জুনিয়র ডাক্তারদের উদ্দেশে অনুরোধ করেছিলেন অনশন তুলে নেওয়ার জন্য। আগামী ১০ তারিখের মধ্যে রাজ্যের সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলির ৯০ শতাংশ উন্নয়নমূলক কাজ শেষ হয়ে যাবে বলেও আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি। যদিও কোনও মাসের কথা তিনি উল্লেখ করেননি। সে ক্ষেত্রে কাজের অগ্রগতির হার নিয়ে মুখ্যসচিব যে তথ্য দিয়েছেন, তাতে মনে করা হচ্ছে, আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হওয়ার কথা বলেছেন তিনি। মুখ্যসচিবের এই আশ্বাসের ঠিক পরের দিনই সিনিয়র ডাক্তারদের তরফে গণইস্তফার বার্তা।

অন্য বিষয়গুলি:

RG Kar Protest Doctors Protest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE