Advertisement
২১ নভেম্বর ২০২৪
RG Kar Medical College and Hospital Incident

কালো কাচে ঢাকা গাড়িতে ‘ধর্ষক-খুনি’কে আদালতে নিয়ে গেল পুলিশ! দু’দিনের চিৎকারেই বাড়তি সতর্কতা

আরজি কর-কাণ্ডের বিচার শুরু হওয়ার পর বিতর্কের শেষ নেই। চার্জ গঠনের পর সোমবার অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার আদালত চত্বরে যে দাবি করেছেন, সেটাই এখন আন্দোলনকারীদের হাতিয়ার।

RG Kar

শিয়ালদহ কোর্টে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারকে নিয়ে যাওয়া হয় একটি সাদা রঙের গাড়িতে। ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৪ ২০:৩২
Share: Save:

আদালত থেকে প্রিজ়ন ভ্যানে করে বেরোনোর সময়েই চিৎকার শুরু করছিলেন আরজি কর-কাণ্ডে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার। দাবি করছিলেন তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। চার্জ গঠনের দিন গত ৪ নভেম্বর এবং বিচার শুরুর দিন ১১ নভেম্বর— দু’দিনের একই ঘটনাক্রমের পর সতর্ক হল কলকাতা পুলিশ। মঙ্গলবার ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারকে নিয়ে শিয়ালদহ আদালতে ঢোকা এবং বেরোনোর সময় ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ারের চিৎকার আর কারও কানে পৌঁছয়নি। বস্তুত, কোন গাড়ি করে ধৃতকে আদালতে নিয়ে আসা হবে তা নিয়েও ‘বিভ্রম’ তৈরি করে পুলিশ।

আরজি কর-কাণ্ডের বিচারের দ্বিতীয় দিন, মঙ্গলবার দুপুরে শিয়ালদহ চত্বরে একটি বড় প্রিজ়ন ভ্যান ঢোকে। কিন্তু পরে জানা যায়, ওই ভ্যানে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার ছিলেন না। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কালো ‘টিন্টেট’ কাচে ঢাকা সাদা রঙের একটি এসইউভি-তে। ঘণ্টা তিনেক বাদে আদালত থেকে যখন অভিযুক্তকে বার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তখনও একই ‘পন্থা’ নেয় পুলিশ। যে গাড়ি সাধারণত এসটিএফ (বিশেষ টাস্ক ফোর্স) ব্যবহার করে, তাতে নিয়ে যাওয়া হয় সিভিক ভলান্টিয়ারকে।

আরজি কর-কাণ্ডের বিচার শুরু হওয়ার পরেও বিতর্কের শেষ নেই। চার্জ গঠনের পর গত ৪ নভেম্বর, অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার আদালত চত্বরে যে দাবি করেছেন, সেটাই এখন হাতিয়ার করেছেন আন্দোলনকারীরা। প্রিজ়ন ভ্যানের ভিতর থেকে চিৎকার করে ধৃত দাবি করেন, তিনি নির্দোষ। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। আঙুল তোলেন সরকারের দিকে। প্রিজ়ন ভ্যানের জানলা দিয়ে তিনি বলেছিলেন, “আমি এত দিন চুপচাপ ছিলাম। আমি কিন্তু রেপ (ধর্ষণ) অ্যান্ড (এবং) মার্ডার (খুন) করিনি। আমার কথা শুনছে না। সরকারই আমাকে ফাঁসাচ্ছে।” তাঁর দাবি ছিল, ‘আসল’ অভিযুক্তদের বাঁচানোর জন্য তাঁকে ‘ফাঁসানো’ হচ্ছে। এক সপ্তাহ পরে ১১ নভেম্বর, সোমবার বিচারের দ্বিতীয় দিন নিম্ন আদালত থেকে বেরোনোর সময় আবারও একই কাজ করেন অভিযুক্ত। আদালত থেকে বেরোনোর সময় একদম প্রথমে মুখ না-খুললেও প্রিজ়ন ভ্যান চলতে শুরু করলে জানলা থেকে চিৎকার করে বলতে থাকেন, “আমি নাম বলে দিচ্ছি…বড় বড় অফিসার রয়েছে…বিনীত গোয়েল, ডিসি ডিডি স্পেশ্যাল চক্রান্ত করে ফাঁসিয়েছে আমায়।” তবে মঙ্গলবার আর সেই সুযোগ পাননি ধৃত।

আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় সোমবার থেকে ‘ইন ক্যামেরা’ বিচার শুরু হয়েছে। প্রথম দিন সাক্ষ্য দিয়েছেন নির্যাতিতার বাবা। ওই মামলায় অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারকে প্রিজ়ন ভ্যানে নিয়ে যাওয়া হয় আদালতে। মঙ্গলবার বিচারের দ্বিতীয় দিন দেখা যায় লোহার জাল দেওয়া কালো কাচে ঘেরা গাড়িতে অভিযুক্তকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে শিয়ালদহ আদালতে। যার ফলে অভিযুক্তের মুখ স্পষ্ট করে দেখা যায়নি। পুলিশের ঘেরাটোপের জন্য গত দু’দিনের মতো ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার আর মুখ বাড়িয়ে সংবাদমাধ্যমকে কিছু বলার সুযোগ পাননি।

উল্লেখ্য, আরজি কর-কাণ্ডের চার্জশিটে একমাত্র অভিযুক্ত হিসাবে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারের নাম থাকার পর থেকে বার বার মুখ খোলার চেষ্টা করছেন তিনি। কখনও ভরা এজলাসে ধৃত দাবি করেছেন, তাঁকে বলতে দেওয়া হচ্ছে না। কখনও আবার প্রিজ়ন ভ্যান থেকে চেঁচিয়ে দাবি করেছেন, তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। সোমবার বিচার প্রক্রিয়া শুরুর দিন কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার এবং ডিসি ডিডি (স্পেশ্যাল)-র নাম বলেছিলেন তিনি। অভিযোগ করেছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাকে ফাঁসিয়েছেন। তার পরই আরও ‘সতর্ক’ হল কলকাতা পুলিশ।

মঙ্গলবার দুই জুনিয়র ডাক্তার সাক্ষ্য দিয়েছেন আদালতে। সংশ্লিষ্ট মামলায় মোট ১২৮ জন সাক্ষী রয়েছেন। এঁদের মধ্যে রয়েছেন জুনিয়র ডাক্তার, কলকাতা পুলিশ, ফরেন্সিক বিভাগের আধিকারিকেরা। ধাপে ধাপে প্রত্যেকেরই বয়ান নথিবদ্ধ করা হবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy