প্রতীকী চিত্র
কর্মসূত্রে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের সঙ্গে দীর্ঘ দিন জড়িত ছিলেন তিনি। সেই তিনিও অনলাইনে ধোঁকা খেলেন প্রতারকের কাছে। খোয়ালেন ২৩ লক্ষ টাকা!
গোটা বিষয়টি জানিয়ে লালবাজারের সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই মহিলা। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এই ঘটনার সঙ্গে বিদেশি জালিয়াতেরা যুক্ত। যার ডালপালা দিল্লিতে ছড়িয়ে রয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ষাটোর্ধ্ব ওই অভিযোগকারিণী লেক এলাকায় একাই থাকেন। ভারতীয় নাগরিক হলেও কাজের জন্য দীর্ঘ দিন ব্রিটেনে বসবাস করেছেন তিনি। স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডে দোভাষীর কাজ করতেন। মহিলা পুলিশকে জানিয়েছেন, নিঃসঙ্গতা কাটাতে তিনি অনলাইনে বিভিন্ন গেম খেলেন। গত জুলাইয়ে অনলাইনে এমনই একটি গেম খেলতে গিয়ে মার্ক অ্যান্ডারসন নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। মার্ক নিজেকে আমেরিকার বাসিন্দা বলে পরিচয় দেন এবং দাবি করেন, তিনি একটি বেসরকারি তৈল উৎপাদন সংস্থার উচ্চপদে চাকরিরত।
পুলিশের কাছে ওই প্রৌঢ়া জানান, খেলার মাঝেই তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ায় নম্বর আদানপ্রদান করেন তাঁরা। তাঁর দাবি, মার্ক তাঁকে জানান, তাঁর স্ত্রী ভারতীয় ছিলেন। এক মেয়েও ছিল তাঁদের। বছর পাঁচেক আগে দুর্ঘটনায় স্ত্রী ও কন্যা মারা গিয়েছেন। বর্তমানে দুই নাতি-নাতনির দেখভাল করেন তিনি। ঘনিষ্ঠতা বাড়ায় মার্ক প্রৌঢ়াকে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং মার্কিন মুলুকে চলে আসার কথা জানান। ভিসার ব্যবস্থা করার আশ্বাসও দেন বলে দাবি প্রৌঢ়ার।
তদন্তকারীরা জানান, কিছু দিন পরে মার্ক মহিলাকে জানান, অফিসের কাজে তিনি মেক্সিকো উপসাগরে যাচ্ছেন। সেখানকার ছবিও পাঠান। অগস্টে মার্ক হোয়াটসঅ্যাপে মহিলাকে জানান, তাঁর জাহাজে আগুন লেগে এক সহকর্মী আহত হয়েছেন। চিকিৎসা না করালে মার্কের জেল হতে পারে। এ জন্য মার্ক মহিলার কাছ থেকে ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা নেন। টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্যও নেন। তার পরেও কয়েক দফায় বেশ কয়েক লক্ষ টাকা মার্ক নেন বলে জানান প্রৌঢ়া। সব মিলিয়ে মোট প্রতারণার অর্থ দাঁড়ায় প্রায় ২৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা।
তদন্তকারীরা জানান, নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনের একটি অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করেছিলেন অভিযোগকারিণী। টাকা অ্যাকাউন্টে জমা পড়তেই প্রতারকেরা দিল্লি থেকে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিয়েছিল।
সাইবার বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, অনলাইন গেমে এখন ‘চ্যাটিং’-এর সুবিধা থাকছে। সেখানেই ফাঁদ পাতছে প্রতারকেরা। পরিচয় ভাঁড়িয়ে নিঃসঙ্গ এবং দুর্বল মনের মানুষদের ঠকাচ্ছে তারা। বহু ক্ষেত্রে এই ধরনের প্রতারণার পিছনে আফ্রিকা এবং পূর্ব ইউরোপের নাগরিকেরা জড়িত দেখা যাচ্ছে। সাইবার বিশেষজ্ঞদের একটি অংশের মতে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিঃসঙ্গতা এড়াতে মানুষ সাইবার দুনিয়ার ‘বন্ধু’দের চোখ বুজে বিশ্বাস করছেন। তার খেসারত দিতে হচ্ছে এ ভাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy