—প্রতীকী ছবি।
করোনা-কালে ছাত্রছাত্রীদের পাশেই দাঁড়াতে চাইছে শহরের বেশির ভাগ স্কুল।
বেসরকারি স্কুলের অভিভাবকদের দায়ের করা ফি সংক্রান্ত মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ফি-এর ৮০ শতাংশ মিটিয়ে না-দিলে ৮ ডিসেম্বরের পরে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াকে অনলাইন ক্লাস থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে স্কুল। শহরের বেশির ভাগ স্কুলই জানাচ্ছে, ৮০ শতাংশ ফি ৩০ নভেম্বরের মধ্যে না মেটাতে পারলেও তারা এখনই অনলাইন ক্লাস থেকে পড়ুয়ার নাম কাটছে না। বরং তারা আরও সময় নিচ্ছে। ওই সব স্কুলের কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, হাইকোর্টের নির্দেশের পরে অধিকাংশ অভিভাবকই ফি মিটিয়ে দিচ্ছেন।
শহরের কয়েকটি স্কুল জানিয়েছে, সব থেকে অসুবিধায় পড়েছে তাদের মতো বেসরকারি স্কুল যাদের ফি সাধারণের নাগালের মধ্যে। একেই তাঁদের ফি কম, তার মধ্যে অভিভাবকদের একটি বড় অংশ ফি না দিলে স্কুল কী ভাবে পরিচালনা করবেন, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষেরা।
দক্ষিণ কলকাতার রামমোহন মিশন স্কুলের অধ্যক্ষ সুজয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমরা ফি দেওয়ার সময়সীমা বাড়িয়েছি। ৮ ডিসেম্বরের পর থেকে আমরা অনলাইন ক্লাস থেকে কাউকে বাদ দিচ্ছি না। তবে অভিভাবকদের জানিয়েছি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফি দিয়ে দিলে ভাল হয়। কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে কিছু সময় অবশ্যই দেওয়া হচ্ছে অভিভাবকদের আর্থিক অসুবিধার কথা ভেবে। তবে ফি না দিলে স্কুলগুলি যে অসুবিধার মধ্যে পড়বে, সে কথাও তাঁদের বলা হচ্ছে। অনেক অভিভাবক ফি মিটিয়েও দিচ্ছেন।’’
বাগুইআটির একটি স্কুলের অধ্যক্ষ মৌসুমী সাহা বলেন, ‘‘আমরা ফি মেটানোর বিষয়টি মানবিকতার সঙ্গে বিবেচনা করছি। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে যে সব অভিভাবক ফি মেটাননি, আমরা ৮ ডিসেম্বরের পরে সেই সব অভিভাবকের ছেলেমেয়েদের অনলাইন ক্লাস থেকে বাদ দিইনি। এই বছরটা তাঁদের ফি মেটানোর জন্য সময় দিয়েছি। তার পরেও না মেটাতে পারলে তখন বিবেচনা করে দেখা হবে। তবে অভিভাবকেরা সহযোগিতাও করছেন।’’
ফি দেওয়ার সময়সীমা ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছে ডিপিএস নর্থ কলকাতা। ওই স্কুলের অধ্যক্ষা সুজাতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা অনলাইন ক্লাস থেকে কাউকেই বাদ দিচ্ছি না। আমরা বলেছি ৩১ মার্চের মধ্যে ফি মিটিয়ে দিতে। কোনও অভিভাবকের কোথাও অসুবিধা থাকলে নির্দ্বিধায় জানাতে বলেছি। অভিভাবকের ফি না মেটানোর জন্য পড়ুয়ার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাক, তা আমরা কখনও চাই না।’’
মহাদেবী বিড়লা ওয়ার্ল্ড অ্যাকাডেমির অধ্যক্ষা অঞ্জনা সাহা বলেন, ‘‘আমরা কোনও সময়সীমা দিইনি। ফি না মেটালে অনলাইন ক্লাস বন্ধ করে দেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। করোনা-কালে অনেকেই চাকরির ক্ষেত্রে অসুবিধার মধ্যে পড়েছেন। অনেক অভিভাবকের ব্যবসা প্রায় বন্ধের মুখে। তাই আমরা এটা মানবিকতার সঙ্গে বিচার করছি। কারও কোথাও অসুবিধা থাকলে চিঠি লিখে জানাতে বলেছি।’’
এ দিকে দক্ষিণ কলকাতার রানিকুঠির একটি বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকদের অভিযোগ, ৮০ শতাংশ ফি যে সব অভিভাবক মেটাতে পারেননি, তাঁদের সন্তানদের অনলাইন ক্লাস ইতিমধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই নিয়ে বিক্ষোভও দেখিয়েছেন ওই স্কুলের অভিভাবকেরা। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষ এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
অভিভাবকদের সংগঠন ইউনাইটেড গার্ডিয়ানস অ্যাসোসিয়েশনের তরফে সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘৮০ শতাংশ ফি মেটাতে না পারলেও বেশির ভাগ স্কুলই অনলাইন ক্লাস করতে দিচ্ছে। আমাদের এই নিয়ে দীর্ঘদিনের আন্দোলনের জন্যই এটা সম্ভব হয়েছে। তবে কিছু স্কুল হাইকোর্টের নির্দেশ মানছে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy