Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Golf Green

গাছ চিনতে গল্ফ গ্রিনের পার্কে খুদে পড়ুয়ারা

পড়াশোনার পাশাপাশি পড়ুয়াদের গাছ লাগাতেও উৎসাহ দেন। এ বার গাছ চেনাতে রবিবার ওই শিক্ষিকা তাঁর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খুদে পড়ুয়াদের নিয়ে এলেন গল্ফ গ্রিন সেন্ট্রাল পার্কে।

পরিচয়: বিভিন্ন প্রজাতির গাছ দেখতে গল্ফ গ্রিন সেন্ট্রাল পার্কে খুদে পড়ুয়ারা।

পরিচয়: বিভিন্ন প্রজাতির গাছ দেখতে গল্ফ গ্রিন সেন্ট্রাল পার্কে খুদে পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:৪৬
Share: Save:

গাছের সঙ্গে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার সখ্য বরাবরের। স্কুল চত্বরে অনেক গাছও লাগিয়েছেন তিনি। পড়াশোনার পাশাপাশি পড়ুয়াদের গাছ লাগাতেও উৎসাহ দেন। এ বার গাছ চেনাতে রবিবার ওই শিক্ষিকা তাঁর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খুদে পড়ুয়াদের নিয়ে এলেন গল্ফ
গ্রিন সেন্ট্রাল পার্কে। কলকাতা পুরসভার ৯৫ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত সত্যরঞ্জন খাস্তগীর শিশু ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওই পড়ুয়াদের গাছ চেনাতে এ দিন সাহায্য করেন স্কটিশ চার্চ কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের দুই শিক্ষক ও বসু বিজ্ঞান মন্দিরের এক প্রাক্তন বিজ্ঞানী।

সত্যরঞ্জন খাস্তগীর শিশু ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৮ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন
প্রধান শিক্ষিকা মনীষা ভট্টাচার্য। তিনি নিজে উদ্ভিদবিদ্যার ছাত্রী। তাই নানা প্রজাতির গাছেদের সঙ্গে পরিচয় করতে তাঁর উদ্যোগেই গল্ফ গ্রিনের সেন্ট্রাল পার্কে ভিড়
জমিয়েছিল খুদে পড়ুয়ারা। ওই স্কুলের বেশির ভাগ পড়ুয়াই আর্থ-সামাজিক দিক থেকে পিছিয়ে থাকা পরিবার থেকে আসে। মনীষার কথায়, ‘‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর ‘বলাই’ ছোট গল্পে ভাইপো বলাইয়ের গাছপ্রীতির কথা অপূর্ব ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। এক জন শিক্ষিকা
হিসাবে মনে করি, সব শিশুর অন্তরেই ‘বলাই’-এর সত্তা রয়েছে। খুদে পড়ুয়াদের জারিত করার কাজটা শিক্ষকেরাই করতে পারেন।’’

মনীষা জানাচ্ছেন, কয়েক মাস আগে বিদ্যালয়ের খুদে পড়ুয়াদের গাছ চেনানোর ভাবনা তাঁর মাথায় আসে। স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি তপন দাশগুপ্ত এ বিষয়ে পাশে এসে দাঁড়ান। তাঁর কথায়, ‘‘কলকাতার একমাত্র জায়গা রবীন্দ্র সরোবর, যেখানে গাছেদের বিজ্ঞানসম্মত নাম লেখা রয়েছে। কিন্তু গল্ফ গ্রিন থেকে রবীন্দ্র সরোবর যাওয়া সময় এবং ব্যয়সাপেক্ষ। অথচ, স্কুলের পাশেই সেন্ট্রাল পার্কে বিভিন্ন প্রজাতির অজস্র গাছ রয়েছে। তাই ঠিক করি, সেই গাছগুলিই পড়ুয়াদের চেনালে কেমন হয়!’’

ওই ভাবনা থেকেই মনীষা সম্প্রতি চিঠি লেখেন স্কটিশ চার্চ কলেজের অধ্যক্ষকে, যাতে
সেখানকার উদ্ভিদবিদ্যার শিক্ষকদের সাহায্য মেলে। দ্বারস্থ হন বসু বিজ্ঞান মন্দিরের প্রাক্তন বিজ্ঞানী প্রবীরকুমার সাহার। অধ্যক্ষের সম্মতিক্রমে এ দিন স্কটিশ চার্চ কলেজের
উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের প্রধান অমিতাভ রায় ও সহকারী অধ্যাপক শুভদীপ মজুমদার আসেন গল্ফ গ্রিনের সেন্ট্রাল পার্কে, খুদে পড়ুয়াদের গাছেদের সঙ্গে পরিচয় করাতে।

অমিতাভ বলেন, ‘‘গল্ফ গ্রিন সেন্ট্রাল পার্কে ৫৫টি প্রজাতির গাছ পাওয়া গিয়েছে। আপাতত বৃক্ষ জাতীয় গাছেদের সমীক্ষার কাজ হয়েছে। পরে গুল্ম ও বীরুৎ জাতীয় গাছেদের সমীক্ষার কাজ হবে।’’

আর প্রাক্তন বিজ্ঞানী প্রবীর বলছেন, ‘‘অন্যান্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকারাও মনীষাকে আদর্শ করে এগিয়ে আসুন।’’ স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি জানান, প্রায় দু’বিঘা জমি জুড়ে থাকা সেন্ট্রাল পার্কের সমস্ত গাছের পাশে তাদের বৈজ্ঞানিক নামফলক বসানোর কাজ শীঘ্রই শুরু হবে।

কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, ‘‘শহরের সমস্ত ওয়ার্ডের উদ্যানে গাছেদের সমীক্ষা শুরু করতে
ওই প্রধান শিক্ষিকা-সহ স্কটিশ চার্চ কলেজ ও বসু বিজ্ঞান মন্দিরের প্রাক্তন বিজ্ঞানীর সহায়তা নেবে পুরসভা।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Golf Green Botanical Garden Children plants
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy