বারুইপুর আদালত চত্বরে সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
শীর্ণকায় চেহারা। পায়ে শতচ্ছিদ্র হাওয়াই চটি। কাঁচাপাকা, প্রায় এক ফুট লম্বা দাড়ি। মুখের চামড়া কুঁচকে গিয়েছে। মুখে কালো মাস্ক। গায়ে রংচটা নীল রঙের পাতলা সোয়েটার। মাথায় বেশ কয়েক মাস না-কাটা চুল।
বুধবার সকালে প্রিজ়ন ভ্যান থেকে নামিয়ে বারুইপুর আদালতের এজলাসের দিকে তাঁকে নিয়ে যাওয়ার সময়ে চিনতে পেরে চমকে যান আইনজীবীরাও। সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেন।
আদালতে সুদীপ্তের তরফে কোনও আইনজীবী ছিলেন না। কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বিচারকের সামনে সুদীপ্ত নিজেই জামিনের আবেদন করেন। বিচারককে বলেন, ‘‘সব নথি আদালতে দেওয়া হয়েছে। ব্যাঙ্ক ও স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির সমস্ত হিসেব জমা দিয়েছি। আপনি আমার জামিনের আবেদন মঞ্জুর করবেন বলে আমি আশাবাদী।’’ যদিও বিচারক সুদীপ্তের জামিন মঞ্জুর করেননি। ফের শুনানির তারিখ ধার্য করেছেন।
সুদীপ্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বিষ্ণুপুরের পৈলান পার্কে সারদার আবাসন প্রকল্পে বাড়ি ও জমির দাম বাবদ প্রায় শতাধিক মানুষের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। কিন্তু, বাড়ি ও জমি হস্তান্তর করেননি। একাধিক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে আলিপুরের ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সম্প্রতি আলিপুর থেকে ওই মামলা বারুইপুর মহকুমা আদালতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। সেই মামলাতেই এ দিন সুদীপ্তকে বারুইপুরের ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে পেশ করা হয়।
আর্থিক প্রতারণার মামলায় সর্বোচ্চ শাস্তি সাত বছর জেল। কিন্তু ইতিমধ্যেই ৯ বছর জেল হেফাজতে রয়েছেন সুদীপ্ত। কেন মুক্তির আবেদন করছেন না? সুদীপ্ত বলেন, ‘‘আমার পাশে আর কেউ নেই। আমার টাকা নেই। কোনও উকিল নেই। আমার হয়ে আবেদন করবেন কে?’’
সুদীপ্তের হয়ে আগে মামলা লড়া আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী বলেন, ‘‘বিভিন্ন আদালতে মামলা রয়েছে। সব সময়ে উনি আমাদের খবর দেন না। সিবিআইয়ের একটি মামলায় ওঁর জামিন হয়নি। সে ক্ষেত্রেও আবেদন করা হয়েছে। সুদীপ্ত এখন আর কোনও মামলায় জামিনের বিষয়ে উৎসাহী নন। কোনও কথাই বলতে চান না। আমরাই জোর করে জামিনের আবেদন করে থাকি।’’
২০১৩ সালের ২৩ এপ্রিল সারদা-কাণ্ডে কাশ্মীর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল সুদীপ্তকে। তাঁর বিরুদ্ধে রাজ্য পুলিশ বিভিন্ন জেলায় প্রায় ১৯৪টি মামলা রুজু করে। পরে তদন্তভার হাতে নিয়ে সুদীপ্তের বিরুদ্ধে চারটি মামলা দায়ের করে সিবিআই। পাশাপাশি, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এবং সেবি-ও সুদীপ্তের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে। সিবিআইয়ের তিনটি মামলায় সুদীপ্তের জামিন হয়েছে। রাজ্য পুলিশের অধিকাংশ মামলাতেও তিনি জামিন পেয়েছেন। তবে আর্থিক অবস্থার কারণে বেশির ভাগ মামলাতেই ‘বেল বন্ড’ জমা দেননি সুদীপ্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy