সন্দীপ ঘোষ। — ফাইল চিত্র।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় এ বার ওই হাসপাতালের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্রে’ যুক্ত থাকার সম্ভাবনার কথা জানাল সিবিআই। তদন্তকারী সংস্থার তরফে মঙ্গলবার শিয়ালদহ আদালতে যে রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে তাতে এমনই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার দিন সন্দীপ সকালেই আরজি করে এলেও ঘটনাস্থল অর্থাৎ সেমিনার রুমে যাননি। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষের এই পদক্ষেপকে সরাসরি ‘ইচ্ছাকৃত’ বলেছে সিবিআই। সেই সঙ্গে আদালতে লিখিত রিপোর্টে আরজি কর কর্তৃপক্ষের তরফে পুলিশে দায়ের হওয়া অভিযোগের বয়ান এবং পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তদন্তকারীরা। গত ৯ অগস্ট সকালে চিকিৎসকের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধারের অনেক পরে দুপুর ২টো ৫৫ নাগাদ একটি জিডি অর্থাৎ জেনারেল ডায়েরি নথিভুক্ত হয়েছিল টালা থানায়। সেই ৫৪২ নং জিডিতে লেখা হয়েছে, ‘‘আরজি কর হাসপাতালের চেস্ট মেডিসিন বিভাগের সেমিনার রুমে সেখানকারই এক পড়ুয়া চিকিৎসকের অচেতন দেহ পাওয়া গিয়েছে।’’
অথচ ওই চিকিৎসককে যে মৃত অবস্থাতেই উদ্ধার করা হয়, তত ক্ষণে তা কারও অজানা নয়। তা হলে ‘অচেতন দেহ পাওয়া গিয়েছে’ লেখা হল কেন? এ কি নিছক ভুল? না কি ইচ্ছাকৃত ভাবে ভুল তথ্য দিয়ে তদন্তকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা? প্রশ্ন তুলছেন সিবিআই আধিকারিকেরা। রিপোর্টে বলা হয়েছে, সন্দীপের উচিত ছিল, ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দ্রুত পুলিশে এফআইআর দায়েরের ব্যবস্থা করা। কিন্তু তা তিনি করেননি। তা ছাড়া, টালা থানায় দায়ের করা কয়েক লাইনের অভিযোগে সম্পূর্ণ তথ্য ছিল না এবং অনেক ফাঁকফোকর ছিল বলেও সিবিআইয়ের অভিযোগ।
সিবিআই রিপোর্টে স্পষ্ট ভাষায় লেখা হয়েছে, ‘‘চিকিৎসক সন্দীপ ঘোষ সে দিন আইনের সঠিক ধারায় এফআইআর করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। অন্য কারও নির্দেশে, বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশীদার হিসাবে এমন কাজ তিনি করছিলেন কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ প্রসঙ্গত, ঘটনার দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ মৃতার পরিবার খুনের অভিযোগ করে। কিন্তু অভিযোগ পাওয়ার অনেক পরে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। অভিযোগ, এর পরেই পুলিশের তৎপরতায় তড়িঘড়ি দাহ করে ফেলা হয় দেহ। এমনই নানা প্রশ্নে আগেও পুলিশের গাফিলতির কথা তুলে ধরেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। কর্তব্যে গাফিলতি এবং তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগে গত শনিবার গ্রেফতার করেছে টালা থানার তৎকালীন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে। আরজি করে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে আগেই গ্রেফতার হয়েছিলেন সন্দীপ। বর্তমানে সেই মামলাতেই প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে ছিলেন তিনি। শনিবার রাতে চিকিৎসক খুনের ঘটনাতেও তাঁকে গ্রেফতার করে হেফাজতে নেয় সিবিআই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy