মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে হাজির করানো হল সন্দীপ ঘোষকে। ছবি: ভিডিয়ো থেকে।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তাতে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের আরও কিছু সহযোগীর ভূমিকা উঠে এসেছে! মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে এমনটাই দাবি করল সিবিআই। বিচারকের নির্দেশে সন্দীপ, সুমন হাজরা, বিপ্লব সিংহ এবং আফসর আলিকে মঙ্গলবার নিজ়াম প্যালেস থেকে সশরীরে আলিপুর আদালতে হাজির করায় সিবিআই। চার জনকেই ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। তাঁরা আপাতত জেলে থাকবেন। এখনই নিজেদের হেফাজতে চাইল না সিবিআই। আরও তথ্য-প্রমাণ পেলে তাঁরা ভবিষ্যতে আবার হেফাজতে চাইতে পারবে সন্দীপকে। সে জন্য সাত দিনের হেফাজত বাঁচিয়ে রেখেছে তারা।
মঙ্গলবার চার অভিযুক্তে আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক জানতে চান, জেল হেফাজতে তাঁদের কোনও সমস্যা হয়েছে কি না। তাঁরা জানিয়েছেন, সমস্যা হয়নি। শুনানিতে সিবিআইয়ের আইনজীবী দাবি করেছেন, সন্দীপের সহযোগী হিসাবে আরও লোকজনের ভূমিকা মিলেছে। তদন্তে মোবাইল, হার্ড ডিস্ক মিলেছে, যেগুলি পরখ করতে হবে। এতে সময় লাগবে। বৈদ্যুতিন সরঞ্জামের ‘ক্লোনিং’ এবং ‘ডিসিলিং’-এর আবেদন করেছে সিবিআই। তারা জানিয়েছে, মুখোমুখি জেরা করা হয়েছে সন্দীপদের। সিবিআইয়ের দাবি, ‘নিয়ম ভেঙে’ হাসপাতালে বিভিন্ন কাজের বরাত দিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই নিয়ে অভিযুক্তেরা মুখ খুলতে চাইছেন না। আরও সাত দিন তাঁদের হেফাজতে নেওয়া হতে পারে। সেই সাত দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে তার আগে আপাতত সন্দীপদের জেল হেফাজত চায় সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়, পরে নতুন কোনও তথ্য প্রকাশ্যে এলে, তদন্তকারী অফিসার যদি মনে করবেন যে, তার ভিত্তিতে জেরা করা প্রয়োজন, তখন সন্দীপকে আবার হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হবে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (বিএনএস)-এর আইন মেনে এই আবেদন করেছে সিবিআই।
এ দিকে, বিপ্লবের আইনজীবী তাঁর মক্কেলের কিছু জিনিস ফেরত চেয়ে আদালতে আবেদন করেছেন। কিন্তু সেই আবেদন পত্রে বিপ্লবের স্ত্রীর সই রয়েছে। এতে বিরক্ত হয়েছেন বিচারক। বিপ্লবের আইনজীবীর আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন তিনি। আফসরের আইনজীবী তাঁর মক্কেলের জামিনের আবেদন করেন। তিনি দাবি করেন, তাঁর মক্কেল অসুস্থ। তাঁর শারীরিক অবস্থা বিচার করে জামিন দেওয়া হোক। সেই আবেদনও খারিজ হয়ে গিয়েছে।
সন্দীপদের নিজ়াম প্যালেস থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে হাজির করানোর আবেদন জানানো হয়েছিল সিবিআইয়ের তরফে। সূত্রের খবর, প্রথমে মৌখিক ভাবে এবং পরে লিখিত ভাবে আবেদন করা হয়। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দেন বিচারক। তিনি জানান, সশরীরে আদালতে হাজির করাতে হবে সন্দীপ-সহ চার জনকে। গত ৩ সেপ্টেম্বর যখন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপকে আদালতে হাজির করেছিল সিবিআই, তখন আদালতের সামনে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সে দিনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সন্দীপদের ভার্চুয়াল শুনানির আবেদন করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তবে সেই আবেদন খারিজ করে দেয় আলিপুর আদালত।
সন্দীপের সঙ্গে মঙ্গলবার আদালতে হাজির করানো হয়েছে বিপ্লব, সুমন, আফসরকে। আফসর সন্দীপের নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন। বিপ্লব ওষুধের সরঞ্জাম সরবরাহের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং সুমন ছিলেন একটি ওষুধের দোকানের মালিক। অভিযোগ, ধৃত তিন জনকে বেআইনি ভাবে হাসপাতালে ক্যাফেটেরিয়া, পার্কিং লট-সহ নানা সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিলেন সন্দীপ। আট দিন সিবিআই হেফাজত শেষে মঙ্গলবার তাঁদের চার জনকে আদালতে হাজির করানো হয়। ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাঁদের জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy