সমস্যা: জলের সঙ্গে উঠে আসা বালি হাতে নিয়ে পড়ুয়ারা। (ডান দিকে) স্কুলে পানীয় জলের জন্য ভরসা এই নলকূপটিই। নিজস্ব চিত্র
এমনিতেই আর্সেনিকপ্রবণ এলাকা। প্রায় সব কলের জলেই রয়েছে সহনমাত্রার চেয়ে বেশি আর্সেনিক। তার উপরে স্কুল চত্বরে শিক্ষক ও পড়ুয়াদের জলের উৎস বলতে একটি মাত্র নলকূপ। সেই নলকূপে চাপ দিলেই জলের সঙ্গে অনবরত বেরোচ্ছে বালি। এমনই চিত্র দেগঙ্গার সোহা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এর জেরে ছ’মাস ধরে ওই জল খেতে পারছে না প্রায় শ’দেড়েক পড়ুয়া। বন্ধ হতে বসেছে মিড-ডে মিলের রান্নাও।
স্কুল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, এত দিন ধরে চলতে থাকা পানীয় জলের সমস্যা থেকে রেহাই পেতে বহু বার স্থানীয় বিডিও থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত দফতরে নতুন কল বসানোর জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু সুরাহা হয়নি। বাধ্য হয়ে পড়ুয়ারা বাড়ি থেকে জল আনছে। স্কুলের আশপাশের বাড়ি থেকে জল এনে চলছে মিড-ডে মিলের রান্না। কিন্তু, প্রতিদিন স্কুলের জন্য এত জল দেওয়া যাবে না বলে বেঁকে বসেছেন ওই সব বাড়ির লোকজন। তাই রান্নার কাজে যুক্ত মহিলারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, পরিস্রুত পানীয় জল না পেলে তাঁরা রান্না বন্ধ করে দেবেন। কারণ, বাইরে থেকে রান্নার জন্য এত জল বয়ে আনতে সমস্যা হচ্ছে। আবার স্কুলের কল থেকে বালি ভরা জলে রান্না করে বাচ্চাদের ক্ষতি চাইছেন না কেউই।
জল খেলেই পেটে বালি ঢুকে যাচ্ছে বলে ভয়ে কলতলায় যাচ্ছে না সঞ্জীব হালদার, সুজাউদ্দিন, আনিশা পরভিনরা। তারা জানাচ্ছে, কল পাম্প করে হাত পাতলেই বালিতে ভরে যাচ্ছে। পাশাপাশি অভিভাবকেরা জানিয়েছেন, এই অবস্থায় বাড়ি থেকে বোতলে জল দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তা ফুরিয়ে গেলে তেষ্টা পেলেও আর জল খেতে পারছে না বাচ্চারা। এ বিষয়ে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিজামুল করিম বলেন, ‘‘জলের সঙ্গে এত বালি বেরোচ্ছে যে, কলের নীচে মোটা আস্তরণ পড়ে যাচ্ছে। প্রশাসনকে বারবার জানিয়েও লাভ হয়নি। এই জল খেয়ে পড়ুয়ারা অসুস্থ হয়ে পড়লে তার দায় কে নেবে?’’
স্কুলে মিড-ডে মিল রান্না করেন মঞ্জুরা বিবি। তিনি বলেন, ‘‘ছ’মাস ধরে এই অবস্থা চলছে। কল পাম্প করলেই বেরোচ্ছে বালি। ওই জল দিয়ে কি বাচ্চাদের রান্না করা যায়?’’ তিনি জানান, এত দিন অন্যের বাড়ি থেকে জল এনে রান্না চলছিল। এখন তাঁরাও জল দিতে চাইছেন না। মঞ্জুরার কথায়, ‘‘বাধ্য হয়ে আমরা রান্না বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওই জলে রান্না করতে আমরা পারব না।’’
কেন কলটি ঠিক করা হচ্ছে না? কেনই বা বসানো যাচ্ছে না নতুন নলকূপ? উত্তরে দেগঙ্গা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মিন্টু সাহাজি বলেন, ‘‘নতুন করে নলকূপ বসানোর ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে স্কুলের কলটি শীঘ্রই ঠিক করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy