প্রতীকী ছবি।
একটি বাড়ির দু’টি ঘর থেকে উদ্ধার হল এক শিশুকন্যা ও তার বাবার মৃতদেহ। সোমবার সকালে এই ঘটনা ঘটেছে হাওড়ার সালকিয়ার শোভন চৌধুরী লেনে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত শিশুটির নাম প্রীতি রায় (৮)। তার বাবার নাম অভিজিৎ রায় (৩৮)। ওই বাড়ির যে ঘরে প্রীতিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়, তার পাশের ঘরেই মেলে অভিজিতের ঝুলন্ত দেহ। তাঁর একটি সোনার গয়নার দোকান রয়েছে। তদন্তকারীরা জানান, মৃত অভিজিতের দাদা ক্ষুদিরাম রায়ের দাবি, মেয়েকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করার পরে আত্মঘাতী হয়েছেন অভিজিৎ। তাঁর অভিযোগ, সাংসারিক অশান্তির জেরেই এই ঘটনা। মৃতের ঘরে একটি সুইসাইড নোটও মিলেছে। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিজিতের স্ত্রী কুসুম রায়কে আটক করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিজিতের স্ত্রী প্রায় তিন মাস এখানে ছিলেন না। তিনি গিয়েছিলেন মেদিনীপুরের ঘাটালে, তাঁর বাবা-মায়ের বাড়িতে। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, অভিজিৎকে তাঁর স্ত্রী সন্দেহ করতেন। তা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই অশান্তি হত। এ নিয়ে গোলমালও চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, পারিবারিক অশান্তির কারণে অভিজিৎ মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন।
পুলিশ জানায়, সালকিয়ায় একটি সোনার গয়নার দোকান রয়েছে অভিজিতের। তিনি সাধারণত সকালেই দোকানে চলে যেতেন। কুসুম প্রায়ই একা মা-বাবার বাড়িতে চলে যেতেন। আট বছরের প্রীতি তখন একাই বাড়িতে থাকত। এ দিন সকালে অভিজিৎ দোকানে না যাওয়ায় এক কর্মচারী তাঁকে বার বার ফোন করছিলেন। কিন্তু ফোনটি প্রতিবারই বেজে যায়। শেষে ওই কর্মচারী আশপাশের পরিচিত লোকজনকে বিষয়টি জানান। বেলা বাড়ার পরেও অভিজিতের সাড়াশব্দ না মেলায় সন্দেহ হয় পরিচিতদের। তখন কর্মচারী ও প্রতিবেশীরা বাড়িতে এসে বার বার ডাকাডাকি করেও সাড়া না পেয়ে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে দেখে, প্রীতির মৃতদেহ বিছানার উপরে পড়ে রয়েছে। গলায় আঙুলের ছাপ স্পষ্ট। পাশের ঘরেই দেখা যায় গলায় ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত অভিজিৎকে। স্থানীয় মালিপাঁচঘরা থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, দেহ দু’টি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। অভিজিতের ঘরে একটি সুইসাইড নোট মিলেছে। তাতে লেখা, ‘আমার মৃত্যুর জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই দায়ী’।
এ দিন মৃত যুবকের দাদা ক্ষুদিরাম বলেন, ‘‘ওকে বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির লোকেরা জ্বালাতন করতেন। স্বামী-স্ত্রীর প্রায়ই অশান্তি হত। আমার ভাইকে ওরা আত্মঘাতী হতে বাধ্য করেছে। ওরা ওকে অনেক ভাবে মানসিক নির্যাতন করেছে।’’
পুলিশ জানায়, ক্ষুদিরামবাবু বিকেলে অভিজিতের শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ মৃতের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy