শহরে বিভিন্ন অপরাধের ঘটনায় রহস্য উদ্ঘাটিত হয়নি। প্রতীকী ছবি
শহরে বিভিন্ন সময়ে ঘটা অপরাধের তালিকায় এমন ঘটনার নজির রয়েছে, যেখানে কোনও প্রমাণ না মেলায় এক বছর পরেও সেই ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটিত হয়নি। মেলেনি একাধিক প্রশ্নের উত্তর। যেমন, বৌবাজারের ফিয়ার্স লেনে এক বৃদ্ধকে খুনের ঘটনা। ঠিক এর উল্টো পিঠে, ভবানীপুরের স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে একাধিক প্রমাণ পেয়েছেন গোয়েন্দারা। রাস্তার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে আততায়ীর মুখের ছবি ধরা পড়েছে। যে গেস্ট হাউস থেকে ওই ব্যবসায়ীর দেহ উদ্ধার হয়েছিল, সেখানকার রেজিস্টারে মিলেছে তার পরিচয়। এমনকি যে হলুদ ট্যাক্সিটিতে করে আততায়ী শহর ছেড়েছে, সেই ট্যাক্সিচালকের বয়ানও রয়েছে পুলিশের হাতে। এত কিছু সত্ত্বেও এই খুনের ঘটনায় ধরা পড়েনি কেউ। ঘটনার এক সপ্তাহ পরেও। কার্যত বাধ্য হয়েই পুলিশকে লুক আউট নোটিস জারি করে অভিযুক্তের সন্ধানে নামতে হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, কোন দিকে মোড় নিচ্ছে তদন্তের গতিপ্রকৃতি?
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভবানীপুর থানা এলাকার এলগিন রোডের একটি গেস্ট হাউস থেকে উদ্ধার হয় স্বর্ণ ব্যবসায়ী শান্তিলাল বেদের দেহ। তার পরে কেটে গিয়েছে আট দিন। এখনও কার্যত দিশাহারা তদন্তকারীরা। যা মনে করাচ্ছে ২০২১ সালে বৌবাজারের ফিয়ার্স লেনে এক বৃদ্ধ খুনের ঘটনাকে। ওই বছরের জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি ফিয়ার্স লেনের একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বছর ৭৫-এর আয়ুব ফিদা আলি খানের দেহ। তাঁর পুত্রবধূ চা দিতে এসে ঘরে শ্বশুরমশাইকে পড়ে থাকতে দেখেছিলেন। বৃদ্ধের গলায় এমন ভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল যে, রক্তে ভেসে গিয়েছিল গোটা ঘর। মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাতের চিহ্নও মিলেছিল। ওই ঘটনার তদন্তে নেমে নাজেহাল হয়েছিলেন লালবাজারের দুঁদে গোয়েন্দারাও। ঘটনাস্থল থেকে ছুরি মিললেও সেটিতে আততায়ীর হাতের ছাপ পাওয়া যায়নি। লুটপাটের জন্য, না কি ব্যবসায়িক শত্রুতা থেকে এই খুন, এক বছর পরেও উত্তর মেলেনি। সামনে আসেনি গ্রেফতারির খবরও।
অন্য দিকে, শান্তিলালকে খুনের ঘটনার কিছু প্রমাণ হাতে পেতে সেই অর্থে ঝক্কি পোহাতে হয়নি পুলিশকে। ট্যাক্সিচালকের বয়ান, আততায়ীর পরিচয় থেকে শুরু করে তার ছবি ছাড়াও সে যে এর আগে একাধিক বার এই শহরে এসেছিল, তার প্রমাণ পেয়েছেন গোয়েন্দারা। এখানেই শেষ নয়। ওড়িশার কটক এবং ভুবনেশ্বরে অভিযুক্তের অবস্থান জানা গেলেও তাকে ধরা যায়নি। একাধিক দলে ভাগ হয়ে বার বার অভিযান চালালেও খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে গোয়েন্দাদের।
কার্যত বাধ্য হয়েই আততায়ীর ছবি দিয়ে প্রচার শুরু করেছে ওড়িশা পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ। বলা হয়েছে, আততায়ী সম্পর্কে যিনি খোঁজ দিতে পারবেন, তাঁকে কলকাতা পুলিশের তরফে পুরস্কৃত করা হবে। কিন্তু সব প্রচেষ্টা সত্ত্বেও অভিযুক্তের নাগাল পেতে এখনও অন্ধকারে পুলিশ। তবে লালবাজারের কর্তারা মুখে কুলুপ আঁটলেও তদন্তকারীদের একাংশের বক্তব্য, আততায়ী সম্ভবত নিজের নামে কোনও সিম কার্ড ব্যবহার করছে না। এ জন্য তার অবস্থান জানতে বেগ পেতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে ব্যবসায়ীকে খুনের ঘটনার পরম্পরা ফিরিয়ে আনছে বৌবাজারের বৃদ্ধ খুনের স্মৃতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy