Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

মিছিল-সভা-অবস্থান, ত্রিফলায় অবরুদ্ধ শহর

একই দিনে একাধিক মিছিল, সভা আর অবস্থান। তার ধাক্কায় কার্যত স্তব্ধ হয়ে রইল গোটা মধ্য কলকাতা। ঘড়ির কাঁটা বেলা ১২টা ছাড়াতেই শুরু হয় যানজট।

যানজটে বেহাল ধর্মতলা। মঙ্গলবার। — নিজস্ব চিত্র

যানজটে বেহাল ধর্মতলা। মঙ্গলবার। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৬ ০২:২০
Share: Save:

একই দিনে একাধিক মিছিল, সভা আর অবস্থান। তার ধাক্কায় কার্যত স্তব্ধ হয়ে রইল গোটা মধ্য কলকাতা। ঘড়ির কাঁটা বেলা ১২টা ছাড়াতেই শুরু হয় যানজট। দুপুর একটা-দেড়টা নাগাদ চরমে পৌঁছয় শহরবাসীর দুর্ভোগ। মিছিলের ফাঁসে আটকে পড়ে অ্যাম্বুল্যান্সও। রাস্তাঘাট সচল রাখতে রীতিমতো নাকানিচোবানি খেয়ে যায় পুলিশ। বিকেলের দিকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি।

পুলিশ জানায়, ইমাম-ভাতা বাড়ানোর দাবিতে মঙ্গলবার সংখ্যালঘুদের সমাবেশ ছিল রানি রাসমণি রোডে। অন্য দিকে, বামেদের কৃষক জাঠার সূচনা উপলক্ষে জমায়েত ছিল ওয়াই চ্যানেলে। জমায়েত শেষে সেই মিছিল যায় রানি রাসমণি রোড থেকে রেড রোড হয়ে বিদ্যাসাগর সেতু পেরিয়ে হাওড়ার দিকে। এর পাশাপাশি, কলেজ স্কোয়ারে সভা করার অনুমতি চেয়েও না পেয়ে কিছুক্ষণ চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে অবস্থান করেন বিজেপি-র নেতা-কর্মীরা। গোদের উপরে বিষফোড়ার মতো শিয়ালদহ-হাওড়া থেকে মিছিল করে এসে কলেজ স্ট্রিটে জমায়েত করেন পার্শ্বশিক্ষকেরা। তাঁদের অন্যতম দাবি ছিল বেতন বৃদ্ধি।

লালবাজার সূত্রে খবর, এই পরিস্থিতিতে এ দিন পথ সচল রাখতে হিমসিম খেতে হয়েছে ট্র্যাফিককর্মীদের। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ ধর্মতলা পৌঁছে দেখা যায়, স্তব্ধ গোটা চত্বর। এক্সাইড মোড় থেকে শুরু করে যত দূর চোখ যায়, সার দিয়ে দাঁড়িয়ে গাড়ি, বাস, মোটরবাইক, ট্যাক্সি। পার্ক স্ট্রিট উড়ালপুলেও গাড়ির সারি। মেয়ো রোড থেকে রেড রোডের অবস্থাও তথৈবচ। যার জেরে যানজটে স্তব্ধ স্ট্র্যান্ড রোড। বাদ যায়নি লেনিন সরণি, এস এন ব্যানার্জি রোড, পার্ক স্ট্রিট, শেক্সপিয়র সরণি। লেনিন সরণিতে ভিড়ে আটকে ছিল স্কুলগাড়ি। চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ থেকে ধর্মতলা যাওয়ার পথে জটে আটকে যায় রোগী-সহ অ্যাম্বুল্যান্সও।

দেড়টা থেকে ধর্মতলা এলাকা একটু একটু করে সচল হতে শুরু করে। ওয়াই চ্যানেলের এক এক দিকের ব্যারিকেড খুলে গাড়ি ছাড়তে শুরু করে পুলিশ। কিন্তু গতি ছিল অত্যন্ত মন্থর। গাড়িগুলি বিভিন্ন দিকে চলতে শুরু করলে চাপ বাড়ে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের উপরেও। সেন্ট্রাল পর্যন্ত থমকে ছিল গাড়ি। ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্মীর কথায়, ‘‘একটা মিছিলেই শহরের পথঘাটের দুর্দশা সামলানো দায় হয়। আর আজ তো এতগুলো মিছিল-সমাবেশ!’’

ধর্মতলা চত্বরের এই ত্র্যহস্পর্শের পাশাপাশি এ দিন ছিল বিজেপি সমর্থকদের অবস্থান। কেন পুলিশ কলেজ স্কোয়ারে তাঁদের সভা করার অনুমতি দেয়নি, এই প্রশ্ন তুলে নিজেদের পার্টি অফিস থেকে এসে কিছুক্ষণ কলুটোলা স্ট্রিট অবস্থান করেন তাঁরা। সেখান থেকে ২৭ জনকে আটকও করে পুলিশ। তাতে আরও সঙ্গীন দশা হয় মধ্য কলকাতা হয়ে উত্তর কলকাতার দিকে যাওয়ার বিভিন্ন রাস্তার।

এই পরিস্থিতির উপরে আরও এক দফা ভোগান্তি বাড়ে কলেজ স্ট্রিটে পার্শ্ব শিক্ষকদের পথ অবরোধে। তাঁদের বেতন বৃদ্ধি নিয়ে ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে চিঠি এসেছে স্কুল শিক্ষা দফতরে। এ দিন একাধিক দাবি নিয়ে বেলা ১২টা নাগাদ শিয়ালদহ-হাওড়া থেকে মিছিল করে কলেজ স্ট্রিটে জমায়েত করেন ওই শিক্ষকেরা। তাঁদের প্রধান দাবিই ছিল বেতন বৃদ্ধি। পাশাপাশি, মাতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়ারও দাবি জানান তাঁরা।

কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রে খবর, পার্শ্বশিক্ষকদের ওই জমায়েতের জেরে দুপুর একটা থেকেই কলেজ স্ট্রিট বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে কলুটোলা লেন এবং বৌবাজারের দিক থেকে কোনও গাড়ি ওই রাস্তায় ঢুকতে পারেনি। বেলগাছিয়া, শ্যামবাজার থেকে ধর্মতলা-সহ একাধিক ট্রাম রুট রয়েছে কলেজ স্ট্রিটে। সমাবেশের জেরে এ দিন তা-ও বন্ধ ছিল বিকেল চারটে পর্যন্ত।

অন্য বিষয়গুলি:

Rally Potlitical Meeting Road Jam Kolkata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy