নড়বড়ে: পুরনো কাঠামোর উপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে ঢাকুরিয়া সেতু । ছবি: রণজিৎ নন্দী
সেতুর বয়স ৫০ পেরিয়ে গিয়েছে অনেক দিন। সেতুটি তৈরির সময়ে যত বছর পর্যন্ত তার কার্যকারিতা বলে ভাবা হয়েছিল, সেই সময়সীমাও পেরিয়ে গিয়েছে বহু আগে। তাই শুধু সংস্কার নয়, ঢাকুরিয়া সেতু পুরোপুরি নতুন ভাবে তৈরি করতে হবে বলে সমীক্ষা করে জানিয়েছে রাইটস। ঢাকুরিয়া সেতুর পুনর্নির্মাণ নিয়ে রাইটসের সঙ্গে একমত হয়েছেন কেএমডিএ-র অধিকাংশ আধিকারিকও।
কেএমডিএ সূত্রের খবর, বছর কয়েক আগেই ঢাকুরিয়া সেতুর কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। সেতুর দেওয়াল এবং স্তম্ভে ফাটল দেখা গিয়েছিল। এর পরেই কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ জরুরি ভিত্তিতে সেতুটির মেরামতি করেন। সেই সময়ে কলকাতা পুরসভা, রেলওয়ে এবং কেএমডিএ একযোগে সমীক্ষা করে জানায় যে, ঢাকুরিয়া সেতুর কাঠামো নড়বড়ে করে দেওয়ার পিছনে ‘হাত’ রয়েছে ইঁদুর বাহিনীর। এর পরেই রাইটসকে ওই সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়োগ করেছিল রাজ্য সরকার।
রাইটস এবং কেএমডিএ সূত্রে জানানো হয়েছে, কয়েক বছর আগে এই সেতুর কাঠামোয় সমস্যা দেখা দিয়েছিল। সেই সমস্ত খুঁত মেরামত করে দেওয়ায় এখনই সেতুটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা নেই। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেটি মাটিতে বসে যেতে পারে, সেই আশঙ্কা থাকছে। তাই পুরনো কাঠামো সংস্কারের বদলে অদূর ভবিষ্যতে এই সেতু নতুন করে তৈরি করার পক্ষেই রায় দিচ্ছে সমীক্ষাকারী রাইটস সংস্থা।
ওই সংস্থা সূত্রের খবর, দেওয়াল বানিয়ে তার মধ্যে মাটি দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল এই ঢাকুরিয়া সেতু। এই সেতুর রেলওয়ে ওভারব্রিজের (আরওবি) অংশে স্তম্ভ রয়েছে, তবে তার বয়সও অনেকটাই। সংস্থার আধিকারিক তরুণ সেনগুপ্ত বলছেন, ‘‘মাটি থাকায় এই সেতু হঠাৎ করে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা নেই। তবে তা ক্রমশ বসে যাবার আশঙ্কা রয়েই গিয়েছে। তা ছাড়াও এই সেতুর কার্যকারিতার সময় যা ধার্য ছিল, তার চেয়ে অনেক বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে। ফলে, সেতুটির কাঠামোর খোলনলচে পরিবর্তন করে সেতুটি নতুন করে তৈরি করা প্রয়োজন।’’
কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, দক্ষিণ কলকাতা ও দক্ষিণ শহরতলির মধ্যে যোগাযোগের অন্যতম যোগসূত্র এই ঢাকুরিয়া সেতু। কলকাতা উন্নয়ন পর্ষদ (কেআইটি) নির্মিত এই সেতুটির মাঝখানে যে স্তম্ভ রয়েছে, তার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব রয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের উপরে। কিন্তু সেতুর কোনও অংশ বসে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে গোটা সেতুটিই। তাই সেতুর স্বার্থে ওই রেলওয়ে ওভারব্রিজটিরও পরিবর্তন করা প্রয়োজন বলে রাইটস এবং কেএমডিএ-র তরফে দাবি করা হয়েছে।
তবে তরুণবাবু জানাচ্ছেন, নতুন করে এই সেতু তৈরির পরিকল্পনা করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। কারণ এই সেতুর দু’দিকে রয়েছে বসতি, বাড়িঘর। সেতুর নীচেও বাস অনেকের। সেতুটি দিয়ে যত সংখ্যক যান চলাচল করার কথা প্রথমে ভাবা হয়েছিল, বর্তমানে তার চেয়ে অনেক বেশি যানবাহনের ভার সহ্য করে সেটি। ফলে সেতুর স্বাস্থ্যে তার প্রভাব পড়ছে। তাই নতুন করে সেতুটি ফের তৈরি করতে গেলে ট্র্যাফিকের বিষয়টি তো বটেই, সেই সঙ্গে সেতু সম্প্রসারণের দিকটিও সামগ্রিক ভাবে ভেবে দেখার প্রয়োজন আছে বলে মত তরুণবাবুর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy