Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Bidhannagar

Bidhannagar: বাসের রাস্তাতেই বিপজ্জনক ভাবে রিকশা ছুটছে বিধাননগরে

মাসকয়েক আগেই সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরে আচমকা বাসের সামনে দিয়ে পারাপার করতে গিয়ে চাপা পড়ে মৃত্যু হয় এক সাইকেল আরোহীর।

বড় রাস্তায় রিকশার দাপাদাপি ঠেকানো যাচ্ছে না।

বড় রাস্তায় রিকশার দাপাদাপি ঠেকানো যাচ্ছে না। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০২২ ০৬:২৫
Share: Save:

সল্টলেকের চার নম্বর আইল্যান্ড দিয়ে ঘুরছিল বাস। ঠিক সেই সময়ে উল্টো দিক থেকে তির বেগে ছুটে আসছিল একটি রিকশা। বাসের কন্ডাক্টর হাত দেখিয়ে রিকশাটিকে গতি কমাতে বললেন ঠিকই, কিন্তু রিকশাচালক নিজের গতিতেই পাশ কাটিয়ে অন্য দিকে বেরিয়ে গেলেন।

এই ছবি সাম্প্রতিক এক দুপুরের। এক সময়ে সল্টলেকে বড় রাস্তায় রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা ছিল। রিকশাচালকেরা শুধু এক ব্লক থেকে অন্য ব্লকে যাওয়ার সময়ে বড় রাস্তা পারাপার করতে পারতেন। কিন্তু বর্তমানে সেই নিয়মের তোয়াক্কা কেউই করেন না। উল্টে বাস রাস্তার উপর দিয়েই বিপজ্জনক গতিতে ছুটতে দেখা যায় মোটরচালিত রিকশা। এমনকি, অফিসের ব্যস্ত সময়ে রিকশার জেরে পিছনের গাড়ির গতি কমে গিয়ে রাস্তায় যানজট তৈরি হচ্ছে বলেও জানাচ্ছেন ট্র্যাফিক পুলিশের কর্মীরা। কিন্তু বড় রাস্তায় রিকশা, টোটো কিংবা সাইকেলের দাপাদাপি ঠেকানো যাচ্ছে না।

বিধাননগর কমিশনারেটের এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘কোভিডের সময়ে ছোঁয়াচ এড়াতে বড় রাস্তায় রিকশা কিংবা সাইকেল চলাচলের অনুমতি দিয়েছিল সরকার। কিন্তু তার পরে আর নতুন কোনও অর্ডার বেরোয়নি। তারই জেরে রিকশা ও সাইকেল বাস রাস্তা দিয়ে বহাল তবিয়তে চলছে। আমরা সব দেখেও ব্যবস্থা নিতে পারছি না।’’ এক সময়ে বাস রাস্তায় রিকশা দেখলে পুলিশ চাকার হাওয়া খুলে দিত।

উল্লেখ্য, মাসকয়েক আগেই সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরে আচমকা বাসের সামনে দিয়ে পারাপার করতে গিয়ে চাপা পড়ে মৃত্যু হয় এক সাইকেল আরোহীর। সল্টলেকের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, রিকশার দাপাদাপি আগের তুলনায় অনেক গুণ বেড়ে গিয়েছে। অভিযোগ, কোভিডের পরে শাসকদলের নেতারা তাঁদের নিয়ন্ত্রিত লাইনগুলিতে রিকশা নামানোর অনুমতি দিচ্ছেন অনেককেই। যার জেরে সল্টলেকের বিভিন্ন ব্লকে হয় নতুন করে রিকশার স্ট্যান্ড গজিয়ে উঠেছে, নয়তো পুরনো স্ট্যান্ডে রিকশার সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। আজকাল বহু রিকশায় মোটর থাকায় পায়ে টানার পরিশ্রম আর নেই। তাই চালকদের একটি অংশ অনেক বেশি দূরত্বেও পৌঁছে যাচ্ছেন। সিংহভাগই যাতায়াত করছেন বাস চলাচলের রাস্তা দিয়েই।

অতীতে রিকশাচালকদের লাইসেন্স ও পরিচয়পত্র দেওয়া হত বিধাননগর পুরসভা থেকেই। কিন্তু সেই ব্যবস্থা অনেক দিনই উঠে গিয়েছে পুরসভা থেকে। ফলে ক’জন বৈধ ভাবে আর ক’জন অবৈধ ভাবে রিকশা চালাচ্ছেন, তার উপরে নজরদারি নেই পুরসভার আধিকারিকদের।

বিধাননগরে রিকশাচালকদের তৃণমূল পরিচালিত একটি সংগঠনের নেতা দিলীপ ঘোষ নিজেও স্বীকার করেছেন যে, সল্টলেকে রিকশা আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। যদিও শাসকদলের নেতাদের রিকশা স্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি মানতে চাননি তিনি। দিলীপ বলেন, ‘‘আগে লাইসেন্সপ্রাপ্ত রিকশার সংখ্যা ছিল বারোশোর মতো। এখন তিন হাজার রিকশা তো চলেই। সকলের লাইসেন্স নেই। এতে বৈধ রিকশার চালকদের ব্যবসা মার খাচ্ছে। আমরা বিষয়টি দলের উপরমহলে জানিয়েছি।’’

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিধাননগরের মহকুমাশাসক বিশ্বজিৎ পাঁজা জানান, সমস্যা নিয়ন্ত্রণে তাঁরা পুরসভা ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলবেন। বিশ্বজিৎবাবুর কথায়, ‘‘কারও রোজগার বন্ধ করা প্রশাসনের উদ্দেশ্য নয়। কিন্তু সব কিছুর মধ্যেই একটা শৃঙ্খলা থাকা উচিত। পুরসভা ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে অবশ্যই পদক্ষেপ করা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bidhannagar Bidhannagar municipality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy