Advertisement
E-Paper

ভুয়ো নথি বানিয়ে মৃত ব্যক্তির থেকে বাড়ি কিনে প্রতারণা, ধৃত

১৯৯৭ সালের ৩ জুলাইতাঁর মামা পৃথ্বীশচন্দ্র বসুর মৃত্যু হয়েছে। মামার নামে সল্টলেকের বিএ ব্লকে একটি বাড়ি ছিল। মৃত্যুরআগে পৃথ্বীশ সেই বাড়ির দায়িত্ব আইনি ভাবে প্রিয়জিৎকে দিয়ে যান।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২২ ০৭:১৬
Share
Save

পঁচিশ বছর আগে মৃত এক ব্যক্তি সম্প্রতি তাঁর নিজের বাড়ি বিক্রি করেছেন আর এক জনকে!

সল্টলেকের এমনই ভূতুড়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন মানিকতলার বাসিন্দা এক ব্যক্তি। তাঁর দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতেশনিবার গ্রেফতার হয়েছেন অভিযুক্ত। ধৃতের নাম সিদ্ধার্থ নাগ। মৃত ব্যক্তির নামে সরকারি ভুয়ো নথিতৈরি করে সম্পত্তি হাতিয়ে দেড় কোটিরও বেশি টাকায় বাড়ি বিক্রির অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

পুলিশ সূত্রের খবর, গত ১৩ অক্টোবর মানিকতলার বাসিন্দা প্রিয়জিৎ মিত্র বিধাননগর (উত্তর) থানায় সিদ্ধার্থের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। প্রিয়জিৎ পুলিশকে জানান, ১৯৯৭ সালের ৩ জুলাইতাঁর মামা পৃথ্বীশচন্দ্র বসুর মৃত্যু হয়েছে। মামার নামে সল্টলেকের বিএ ব্লকে একটি বাড়ি ছিল। মৃত্যুরআগে পৃথ্বীশ সেই বাড়ির দায়িত্ব আইনি ভাবে প্রিয়জিৎকে দিয়ে যান। তবে ওই জমির মিউটেশন করিয়ে ওঠা হয়নি পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট প্রিয়জিতের।

এ দিকে, ২০০৭ সালের অগস্টে সিদ্ধার্থ বিএ ব্লকের ওই বাড়ির একতলায় বসবাসের জন্য সেটি দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে প্রিয়জিতের থেকে লিজ় নেন। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, জমির মিউটেশন করিয়েদেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাড়ির আসল দলিলও নিয়ে নেন সিদ্ধার্থ। কিন্তু অভিযোগ, বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও জমির মিউটেশন হয়নি। জমির দলিলও ফেরতদেননি অভিযুক্ত।

অন্য দিকে, করোনার কারণে দীর্ঘদিন একটানা প্রিয়জিৎ সল্টলেকের বাড়িতে যেতে পারেননি। চলতি বছরেসল্টলেকের ওই বাড়িতে গিয়ে তিনি দেখেন, বাড়িটি ভেঙে নতুন নির্মাণ শুরু হয়েছে। বিস্মিত প্রিয়জিৎ প্রতিবেশীদের থেকে জানতে পারেন, সিদ্ধার্থ বাড়িটি সুশীল জিন্দল এবং শশী জিন্দল নামে দু’জনকে ১ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন!

বিধাননগর পুরনিগমে খোঁজ নিয়ে অভিযোগকারী আরও জানতে পারেন,তাঁর মামা পৃথ্বীশচন্দ্র বসুর থেকে ২০২১ সালের জুলাইয়ে বাড়িটি কিনে নিয়েছেন সিদ্ধার্থ!যদিও পৃথ্বীশবাবু মারা গিয়েছেন ১৯৯৭ সালে! এমনকি, সেই ডিডেরকপিতেও মৃত ব্যক্তির নামে প্যান কার্ড ও আধার কার্ড সংযোজন করারয়েছে। এর পরেই বিধাননগর (উত্তর) থানায় অভিযোগ দায়েরকরেন প্রিয়জিৎ।

কী ভাবে ঘটল এত কিছু? প্রিয়জিৎ জানাচ্ছেন, গত কয়েক বছরেরমধ্যে ওই বাড়িতে অনেক কিছু হয়ে গিয়েছে। যেমন, বাড়িতে বার ডান্সার রাখা নিয়ে হুজ্জুতি এবংপ্রতিবেশীদের প্রতিবাদ। ভুয়ো কল সেন্টারও চলেছিল ওই বাড়িতে। তখনও পুলিশি অভিযান হয়। কিন্তু তিনি পুলিশের থেকে এ সবের কিছুই জানতে পারেননি। প্রিয়জিতের দাবি, তত দিনে গোপনে নথি বদল করে নিয়েছিলেন সিদ্ধার্থ।

দীর্ঘ দিন পরে চলতি বছরে এলাকায় গিয়ে বিষয়টি সামনে আসায় প্রিয়জিৎ পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে জমির খোঁজ নেন। দেখেন, বাড়ির মালিক, তাঁর মামা পৃথ্বীশচন্দ্রবসুর জন্মসাল সেখানে ১৯৫১ দেখানো হয়েছে। যেখানে তাঁর জন্ম ১৯১৯ সালে। তিনি মারাগিয়েছেন ১৯৯৭ সালে। এই লেনদেনের নথিতে আধার কার্ড এবং প্যান কার্ড জমা দিয়েছিলেন সিদ্ধার্থ। যার দু’টি ছবিই হুবহু এক ছিল। প্রিয়জিৎ পুলিশ এবং দফতরের কর্তাদের তাঁর মামার সচিত্রভোটার পরিচয়পত্র দেখিয়ে জানান,উনিই প্রকৃত পৃথ্বীশচন্দ্র বসু। এ-ও জানান, সিদ্ধার্থের জমা দেওয়া আধার এবং প্যান কার্ডে যে ব্যক্তির ছবি আছে, তা হুবহু এক।

এখানেই প্রিয়জিতের প্রশ্ন, সেটা কী ভাবে সম্ভব? তাঁর যুক্তি, আধার কার্ডের ছবি তোলেন ওই কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীরা। আর প্যান কার্ডের ছবি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি নিজেরাই দেন। তা হলে দুটোর ছবি এক হয় কী ভাবে? সেখানেই আরও স্পষ্ট হয় সিদ্ধার্থের প্রতারণার ছক।

Fraud Manicktala

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।