Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
Jadavpur University

রাস্তা নির্মাণে চটের ব্যবহার আরও নতুন উপায়ে, গবেষণায় যাদবপুর

অভিযোগ, এখন অনেক ক্ষেত্রেই প্রাকৃতিক পাটের বদলে ব্যবহার করা হচ্ছে পেট্রোলিয়ামজাত সিন্থেটিক তন্তু। যা একেবারেই পরিবেশবান্ধব নয়।

উন্নততর প্রযুক্তির সাহায্যে চটের ব্যবহার বেশি করে ছড়িয়ে দিতে গবেষণা চালাচ্ছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ।

উন্নততর প্রযুক্তির সাহায্যে চটের ব্যবহার বেশি করে ছড়িয়ে দিতে গবেষণা চালাচ্ছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। —ফাইল চিত্র।

মধুমিতা দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:২৮
Share: Save:

নতুন তৈরি করা রাস্তা যাতে মজবুত এবং টেকসই হয়, তার জন্য সাম্প্রতিক সময়ে বিটুমিন ও পাথরকুচির সঙ্গে মেশানো হয় পাটতন্তু থেকে তৈরি কাপড় অর্থাৎ চট (জিয়ো টেক্সটাইল)। কিন্তু অভিযোগ, এখন অনেক ক্ষেত্রেই প্রাকৃতিক পাটের বদলে ব্যবহার করা হচ্ছে পেট্রোলিয়ামজাত সিন্থেটিক তন্তু। যা একেবারেই পরিবেশবান্ধব নয়। এমন পরিস্থিতিতে উন্নততর প্রযুক্তির সাহায্যে চটের ব্যবহার বেশি করে ছড়িয়ে দিতে গবেষণা চালাচ্ছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। গবেষণার নেতৃত্বে আছেন ওই বিভাগের দুই সহকারী অধ্যাপক অর্ঘ্যদীপ বিশ্বাস এবং ওবায়দুর রহমান।

অর্ঘ্যদীপ জানান, বহন ক্ষমতা কম এমন মাটির সঙ্গে চট ব্যবহার করলে রাস্তার বহন ক্ষমতা যেমন বাড়েএবং পোক্ত হয়, তেমনই সেই রাস্তা টেকেও দীর্ঘদিন। শুধু রাস্তা তৈরিতে নয়, এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেমাটির ক্ষয় রোধ করাও বহুলাংশে সম্ভব। এ ছাড়া, নদী বা খালের পাড় বাঁধানোর ক্ষেত্রেও এই প্রযুক্তি অত্যন্ত কার্যকর। বর্তমানে রাস্তা তৈরির ক্ষেত্রে নরম মাটিতে চটের চাদর বিছিয়ে তার উপরে পাথর বা কংক্রিটের প্রলেপ দিয়ে তৈরি হয় রাস্তার উপরের অংশ। অর্ঘ্যদীপেরা গবেষণা চালাচ্ছেন, যাতে চটের বদলে জিয়ো সেল ব্যবহার করা যায়। যা চট বা জিয়ো টেক্সটাইল দিয়েই বানানো হবে, কিন্তু একটু অন্য ভাবে।

এ ক্ষেত্রে প্রথমে জিয়ো টেক্সটাইলকে সেলাই করে রম্বস আকৃতির সেল বা পকেটের একটি ত্রিমাত্রিক জ্যামিতিক আকার দেওয়া হবে। তার পরে সেই সেল বা পকেটগুলি একটির সঙ্গে আর একটি জুড়ে ত্রিমাত্রিক চাদরের মতো তৈরি করা হবে। কোনও রাস্তা তৈরির প্রথমে একদম নীচের অংশে (ইঞ্জিনিয়ারিং পরিভাষায় যার নাম সাবগ্রেড) এই চাদর বিছিয়ে তার উপরে মাটি দেওয়া হবে। এর পরে চলতি নিয়মে রাস্তার উপরের অংশ তৈরি হবে। গবেষকদের দাবি, শুধু রাস্তা নয়, যে সব এলাকার মাটি অপেক্ষাকৃত দুর্বল, যা সাধারণ ভাবে ভার বহনে সক্ষম নয়, সেই সব জায়গায় কোনও নির্মাণের ভিত তৈরিতেও এই প্রযুক্তি খুব কার্যকর হবে। এই গবেষণায় সম্পূর্ণ আর্থিক সাহায্য করছে ভারত সরকারের সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ বোর্ড (সার্ব)।

অর্ঘ্যদীপের বক্তব্য, ইদানীং দেখা যাচ্ছে, সিন্থেটিক তন্তু ব্যবহার করার ফলে তার থেকে মাইক্রো-প্লাস্টিক বেরিয়ে মাটির সঙ্গে মিশছে। শুধু তা-ই নয়, সিন্থেটিক তন্তুর উৎপাদন পদ্ধতি অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং তা থেকে দূষণও ছড়ায়। কিন্তু পাটপরিবেশবান্ধব হওয়ায় এর দ্বারা তৈরি জিয়ো সেলের ব্যবহারে এই সমস্যা দূর হতে পারে। এই পরিবর্তিত চটের চাদরের উপরে বানানো রাস্তা হবে অনেক মজবুত। অর্ঘ্যদীপ বলেন, ‘‘পাট উৎপাদনের নিরিখে ভারত বিশ্বে অন্যতম প্রধান দেশ। সিন্থেটিক তন্তুর বদলে আরও উন্নত প্রযুক্তিরমাধ্যমে চট ব্যবহার করলে আখেরে ভারতেরই লাভ।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Joot road Research Plastic Jute Sack Sack
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy