Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
water project

মেলেনি অনুমতি, জল প্রকল্পের জেটি সংস্কার ঝুলে তিন মাস 

গঙ্গা থেকে পদ্মপুকুর প্রকল্পের জল তোলার জন্য বটানিক্যাল গার্ডেনের ভিতরে একটি পৃথক জেটি রয়েছে। যেটিকে বলা হয় ‘ইনটেক জেটি’। সেটির পিছনে কিছুটা দূরে রয়েছে পাম্প হাউস।

A photograph representing Jetty

পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে এক বছর আগেই জেটি মেরামতির জন্য প্রকল্প তৈরি করা হয়েছিল। ফাইল চিত্র।

দেবাশিস দাশ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:৪৩
Share: Save:

বটানিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষের তরফে সবুজ সঙ্কেত আসেনি। ফলে, যে জেটির মাধ্যমে গঙ্গা থেকে পদ্মপুকুর জল প্রকল্পে জল আসে, আটকে গিয়েছে সেটির সংস্কার এবং জেটি সংলগ্ন পাম্প হাউস তৈরির কাজ। প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই কাজ করার কথা কেএমডিএ-র। কিন্তু পুরসভার তরফে গত তিন মাস ধরে একাধিক বার আবেদন জানানো সত্ত্বেও বটানিক্যাল কর্তৃপক্ষ পরিবেশ দূষণ-সহ নানা সমস্যার যুক্তি দেখিয়ে কাজ শুরু করার অনুমতি দিচ্ছেন না। পুরসভার আশঙ্কা, গঙ্গার জলস্তর যে ভাবে কমছে, তাতে এই কাজ করতে দেওয়া না হলে আগামী দিনে গঙ্গা থেকে আর জল তোলা যাবে না। যার জেরে গোটা হাওড়া জুড়ে তীব্র জলসঙ্কট দেখা দিতে পারে।

হাওড়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গঙ্গা থেকে পদ্মপুকুর প্রকল্পের জল তোলার জন্য বটানিক্যাল গার্ডেনের ভিতরে একটি পৃথক জেটি রয়েছে। যেটিকে বলা হয় ‘ইনটেক জেটি’। সেটির পিছনে কিছুটা দূরে রয়েছে পাম্প হাউস। পাম্প হাউসে থাকা চারটি পাম্পের সাহায্যে জল তুলে পাইপলাইনের মাধ্যমে পাঠানো হয় দানেশ শেখ লেনের কাছে ১০০ ফুট রাস্তার ধারে মূল জল প্রকল্পে। সেখান থেকে জল শোধন করে সরবরাহ করা হয় হাওড়া শহরে। পুরসভা সূত্রের খবর, বছরখানেক আগে একটি জাহাজের ধাক্কায় ওই ইনটেক জেটিটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

কেএমডিএ-র এক পদস্থ ইঞ্জিনিয়ার জানান, পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে এক বছর আগেই জেটি মেরামতির জন্য প্রকল্প তৈরি করা হয়েছিল। পাশাপাশি, ভরা গ্রীষ্মে গঙ্গার জলস্তর যে ভাবে কমছে, তা দেখে নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু হয়। ওই ইঞ্জিনিয়ার জানান, পুরসভার এখনকার পাম্প হাউসটি গঙ্গা থেকে খানিকটা দূরে। কমে গিয়েছে পাম্পের ক্ষমতাও। ফলে, গঙ্গার জলস্তর কমে যাওয়ায় পাম্প চালিয়ে বেশি জল তোলা যাচ্ছে না। জলের জোগান কম হওয়ায় শহরে সরবরাহ করা জলের পরিমাণও যাচ্ছে কমে। তিনি বলেন, ‘‘এর জন্য ঠিক হয়েছে, জেটির উপরেই পাম্প হাউস তৈরি করে গঙ্গা থেকে সরাসরি জল পাঠিয়ে দেওয়া হবে মূল প্রকল্পে। এতে জলের জোগানে ঘাটতি থাকবে না।’’

কেএমডিএ সূত্রের খবর, এর জন্য ৩০ কোটি টাকা খরচ ধরে একটি প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি জানিয়ে কাজ শুরু করার জন্য চিঠিও দেওয়া হয়েছে বটানিক্যাল গার্ডেন কর্তৃপক্ষকে। এক বার বৈঠকেও বসা হয়। কেএমডিএ-র এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘‘গত তিন মাস ধরে এত কিছু হওয়া সত্ত্বেও উদ্যান কর্তৃপক্ষ কাজ শুরু করার অনুমতি দেননি।’’ হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমি নিজে বটানিক্যালের যুগ্ম-অধিকর্তার সঙ্গে কথা বলেছিলাম। উনি আশ্বাস দিয়েছিলেন, দ্রুত সমস্যা মিটে যাবে। তার পরেও কাজ এগোয়নি।’’

পানীয় জলের মতো একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কাজ করার অনুমতি না দেওয়ার পিছনে উদ্যান কর্তৃপক্ষের যুক্তি, ওই কাজ চলবে দেড় বছর ধরে। সাধারণ নাগরিকদের কথা ভেবে এত দীর্ঘ সময় দেওয়া যায় না। তা ছাড়া, এই কাজের জন্য উদ্যানে প্রচুর ভারী গাড়ি ঢুকবে। এতে সেখানকার পরিবেশের ক্ষতি হতে পারে। পাশাপাশি, কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষেরও অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন।

বটানিক্যালের যুগ্ম-অধিকর্তা দেবেন্দ্র সিংহ বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি নিয়ে আবার আলোচনা হবে। আমরাও কেএমডিএ-কে কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছি। যার মধ্যে রয়েছে, গঙ্গার ধারে প্রচুর সাধারণ মানুষ আসেন। তাই দেড় বছরের কাজের সময়সীমা কমাতে হবে। দেখতে হবে, পরিবেশের ক্ষতি যাতে না হয়। তা ছাড়া, জেটির উপরে পাম্প হাউস তৈরি করলে উদ্যানের দৃশ্যদূষণ হতে পারে। খেয়াল রাখতে হবে সে দিকটিও। সব কিছু নিয়ে সকলের মত মিললে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের অনুমতি নিয়েই কাজ শুরু করা যাবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy