কবি শঙ্খ ঘোষের প্রয়াণে শোকাহত অনুব্রত।
এ আবার কোন কবি? শঙ্খ ঘোষ সম্পর্কে বলেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। বুধবার কবির মৃত্যুর পর তৃণমূলের ডাকসাইটে নেতা আনন্দবাজার ডিজিটালকে বললেন, ‘‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার। বাংলার কবি ছিলেন। ওঁকে শতকোটি প্রণাম জানাই। শঙ্খ ঘোষ একটা ভাল কবি ছিলেন। ওঁর মৃত্যুতে মর্মাহত হবে বাংলা।’’ আরও বললেন, ‘‘এই মৃত্যু সব মানুষকেই ধাক্কা দেবে। আত্মার শান্তি কামনা করি।’’
বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত চার বছর আগে সদ্যপ্রয়াত কবি সম্পর্কে একটি মন্তব্য করে শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন। ২০১৮ সালের মে মাসে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারের সময় অনুব্রত বলেছিলেন, বিরোধী প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে বেরোলে দেখবেন, রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে রয়েছে। এর পর বীরভূমের ৪২টি জেলা পরিষদ আসনের মধ্যে ৪১টিতেই মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি বিরোধীরা। যে এক জন মনোনয়ন জমা দিতে পেরেছিলেন, তিনিও তা শেষমেশ প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হন।
সেই সময়েই কলম ধরেছিলেন শঙ্খ। ‘মুক্ত গণতন্ত্র’ নামের কবিতায় লিখেছিলেন, ‘যথার্থ এই বীরভূমি, উত্তাল ঢেউ পেরিয়ে এসে পেয়েছি শেষ তীরভূমি। দেখ খুলে তোর তিন নয়ন, রাস্তা জুড়ে খড়্গ হাতে দাঁড়িয়ে আছে উন্নয়ন’। সেই কবিতা প্রকাশিত হওয়ার পরেই অনুব্রত বলেন, ‘‘বড় বড় কথা বলছেন কবি? এ কোন কবি? আমরা তো কবি বলতে জানতাম রবীন্দ্রনাথ-নজরুল। এ কোন নতুন কবি উঠে এসেছেন যে, আমার উন্নয়ন নিয়ে কথা বলছেন!’’ এটুকুতেই থামেননি অনুব্রত। কবির নাম নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছিলেন, ‘‘কবির নাম শঙ্খ রাখা ঠিক হয়নি। শঙ্খ নামের অপমান করেছেন উনি। এখনও বলছি, রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে আছে।’’
অনেকে তখন অধুনাপ্রয়াত সুভাষ চক্রবর্তীর কথা বলেছিলেন। যিনি একবার ‘পাহাড় থেকে সাগর’ পদযাত্রার কর্মসূচির আয়োজন করেছিলেন। যে মিছিলে স্লোগান উঠেছিল ‘রবীন্দ্রনাথকে বিশ্বকবি করল কে? সিপিএম আবার কে!’’ তা নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা হয়েছিল বিস্তর। কিন্তু অনুব্রতের মন্তব্য নিয়ে বাংলা জুড়ে তৈরি হয়েছি তীব্র ক্ষোভ। শুরু হয়েছিল বিতর্ক এবং নিন্দার ঝড়।
কিন্তু তাতেও দমেননি অনুব্রত। সেই সময় এমনও বলেছিলেন, ‘‘যখন অনুব্রত মণ্ডল রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে, তখন শঙ্খ ঘোষ কবিতা লেখেন।’’ নাম নিয়ে ‘অসম্মাজনক’ বক্তব্যে অনড় থেকে বলেছিলেন, ‘‘শঙ্খ একটা পবিত্র জিনিস। সব পবিত্র কাজে শঙ্খ লাগে। তাই শঙ্খ ভুল করলে দেবতাদের অসম্মান হয়। সেই কারণেই বলেছি ওঁর নাম শঙ্খ রাখা উচিত হয়নি।’’ অনুব্রতের বক্তব্যের পাল্টা কোনও কথাই বলেননি স্বভাবনম্র বর্ষীয়ান কবি। বরাবরের স্বভাব বজায় রেখে নীরবতাই ছিল তাঁর উত্তর।
বুধবার পুরনো সেই কথা আনন্দবাজার ডিজিটালের তরফে মনে করানোর পরে নীরব রইলেন অনুব্রতও। বললেন, ‘‘উনি ভাল কবি ছিলেন। উনি মারা গিয়েছেন। ওঁর সম্পর্কে কিছু বলব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy