হেদুয়া থেকে রিকশা চালকদের মিছিল চলছে। ছবি: ভাস্কর মান্না।
আরজি করে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় সমাজের সর্বস্তরের মানুষ প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন। বাদ গেলেন না শহরের রিকশা চালকেরাও। রবিবার বিকেলে তাঁরাও আরজি কর-কাণ্ডের বিচার চেয়ে পথে নামলেন। রিকশা টেনেই স্পষ্ট করলেন অবস্থান। রিকশা চালকদের এই মিছিল শুরু হয় হেদুয়া থেকে। চলেছে কলেজস্ট্রিট পর্যন্ত। মিছিলে শামিল হয়েছেন মূলত উত্তর কলকাতার টানা রিকশা চালকেরা। কলেজস্ট্রিটে পৌঁছে রিকশা চালকেরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান।
রবিবার বিকেল পৌনে ৫টা নাগাদ রিকশা মিছিল শুরু হয় হেদুয়া থেকে। মিছিলে যাঁরা অংশ নিয়েছেন, তাঁদের গলায় ঝোলানো হয়েছে প্ল্যাকার্ড এবং পোস্টার। তাতে প্রতিবাদী স্লোগান লেখা রয়েছে। কোনও পোস্টারে লেখা ‘আর কত পথ হাঁটলে তবে ধর্ষকদের বিচার হবে?’, কোনও পোস্টারে আবার লেখা ‘যতই করবে কণ্ঠরোধ, জোরালো হবে প্রতিরোধ’। এ ছাড়া, ‘নির্যাতিতার বিচার চাই’ লেখা একাধিক পোস্টারও দেখা গিয়েছে এই মিছিলে।
হেদুয়া থেকে ট্রামলাইন ধরে হেঁটেছেন রিকশা চালকেরা। সঙ্গে চলেছে প্রতিবাদী স্লোগান। সকলের একটাই দাবি— ‘বিচার চাই’। সুকিয়া স্ট্রিটে রিকশা চালান লক্ষ্মণ যাদব। আরজি করের প্রতিবাদে এই মিছিলে পা মিলিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি অনেক বছর আগে বিহার থেকে এখানে এসেছিলাম। এখন এই শহরেই আমার সব। তবে রিকশার বাজারে মন্দা চলছে। দিনে ২০০ টাকাও আমাদের রোজগার হয় না। তবে পয়সা তো বড় কথা নয়! টাকা তো রোজই উপার্জন করা যাবে। একটি মেয়ের জীবন চলে গিয়েছে। তার প্রতিবাদে আমরা রাস্তায় নেমেছি।’’
রিকশা চালক রামসিংহ যাদব কলেজস্ট্রিট থেকে বলেন, ‘‘আমাদের সকলের ঘরে মা-বোন আছেন। আরজি করে যা হয়েছে, আমরা তার বিচার চাই। পুলিশ বিচারে বাধা দিচ্ছে। আমরা তাই পথে নেমেছি। বিচার না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের প্রতিবাদ চলবে।’’
উল্লেখ্য, সোমবার দেশের শীর্ষ আদালতে আরজি কর-কাণ্ডের শুনানি রয়েছে। সকলে সে দিকেই তাকিয়ে। তার আগে প্রতিবাদ আরও জোরালো করতে রবিবার আবার ‘রাতদখলের’ ডাক দেওয়া হয়েছে। শহরের নানা প্রান্তে বিকেল থেকেই শুরু হয়েছে বিবিধ কর্মসূচি। গড়িয়াহাট, কুমোরটুলি, দেশপ্রিয় পার্ক, শ্যামবাজার, বিভিন্ন এলাকায় জমায়েত হয়েছে। বহু সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে মিছিলে অংশ নিয়েছেন। কেউ গান গাইছেন, কেউ নীরবে হেঁটে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন, চাইছেন বিচার। রবিবারের রিকশা চালকদের মিছিল যেন সেই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে নতুন মাত্রা যোগ করল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy