Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

দুর্ঘটনার পরেই রেল অবরোধ ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের

শিয়ালদহ মেন শাখার ওই লাইনের এক পাশে, অর্থাৎ নোয়াপাড়া মেট্রো স্টেশনের দিকে রয়েছে বরাহনগর পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ডাক্তারবাগান-সহ আরও কয়েকটি এলাকা। অপর প্রান্তে বি টি রোডের দিকে রয়েছে ১৭ ও ১ নম্বর ওয়ার্ডের সতীন সেন পল্লি, নিরঞ্জননগর ও শ্রীপল্লি।

অবরোধের জেরে রেললাইন ধরে হাঁটছেন যাত্রীরা। এই জায়গা দিয়ে পারাপার করেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। মঙ্গলবার, দমদম ও বেলঘরিয়া স্টেশনের মাঝে। নিজস্ব চিত্র

অবরোধের জেরে রেললাইন ধরে হাঁটছেন যাত্রীরা। এই জায়গা দিয়ে পারাপার করেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। মঙ্গলবার, দমদম ও বেলঘরিয়া স্টেশনের মাঝে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৫২
Share: Save:

বিপজ্জনক ভাবে রেললাইন পেরোতে গিয়ে দাদু ও নাতনির মৃত্যু। যার জেরে প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে রেল অবরোধে চরম ভোগান্তি পোহাতে হল নিত্যযাত্রীদের। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, তাঁদের ক্ষোভ নতুন নয়। বহু পুরনো। মঙ্গলবার সকালে দমদম ও বেলঘরিয়া স্টেশনের মাঝে সিসিআর সেতু থেকে কিছুটা দূরে দাদু ও নাতনির মর্মান্তিক মৃত্যুর পরে সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটল বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁদের বক্তব্য, ব্যস্ত সময়ে অবরোধ করায় যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হল ঠিকই, কিন্তু প্রায় কুড়ি বছর ধরে ওই রেললাইন পারাপারের জন্য তাঁরা আন্ডারপাস বা ফুট ওভারব্রিজের আবেদন করলেও কিছু হয়নি। কয়েক বছর আগে রেলের তরফে এক বার মাত্র পরিদর্শন হয়েছিল। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, ‘‘আবেদনের বিষয়টি জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

শিয়ালদহ মেন শাখার ওই লাইনের এক পাশে, অর্থাৎ নোয়াপাড়া মেট্রো স্টেশনের দিকে রয়েছে বরাহনগর পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের ডাক্তারবাগান-সহ আরও কয়েকটি এলাকা। অপর প্রান্তে বি টি রোডের দিকে রয়েছে ১৭ ও ১ নম্বর ওয়ার্ডের সতীন সেন পল্লি, নিরঞ্জননগর ও শ্রীপল্লি। দু’দিকের লোকজনই রেললাইন পেরিয়ে যাতায়াত করেন। কিন্তু বিপজ্জনক ভাবে কেন লাইন পারাপার করেন তাঁরা?

এলাকার বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডটি ত্রিভুজ আকৃতির দ্বীপের মতো। এক দিকে মেট্রো স্টেশন। অন্য দু’দিকে দু’টি শাখার রেললাইন। সেখানকার বাসিন্দাদের স্কুল, কলেজ, বাজার, হাসপাতাল সব কিছুর জন্যই আসতে হয় বি টি রোডের দিকে। সে ক্ষেত্রে নোয়াপাড়া মেট্রো স্টেশন হয়ে ৩৪-সি বাসস্ট্যান্ডের সামনের আন্ডারপাস পার করে প্রায় তিন কিলোমিটার পথ ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছতে হয়। বদলাতে হয় একটি বা দু’টি অটো। তবে রেললাইন পেরোলে খুব সহজেই শ্রীপল্লি, সতীন সেন নগর হয়ে বি টি রোডে যাওয়া যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা বুবাই কর্মকার বললেন, ‘‘গরমে বা শীতে না হয় অনেকটা পথ ঘুরে দু’পারের লোকজন যাতায়াত করবেন। কিন্তু বর্ষাকালে নোয়াপাড়া আন্ডারপাসও জলে ডুবে থাকে। তখন তো রেললাইন পেরোনো ছাড়া উপায় নেই।’’

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ওই লাইন পারাপার করতে গিয়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। তার পরেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। তাই এ দিনের দুর্ঘটনার পরে তাঁরা লাইনের উপরে গাছের গুঁড়ি ও ডালপালা ফেলে এবং লাল কাপড় উড়িয়ে অবরোধ করেন। আপ ও ডাউন লাইনে পরপর ট্রেন আটকে যায়। অধিকাংশ যাত্রী ট্রেন থেকে নেমে লাইন ধরে দমদমের দিকে হাঁটতে থাকেন। অভিযোগ, যাত্রীদের সঙ্গে বচসা বাধায় ট্রেনে উঠে কয়েক জনকে মারধরও করেন অবরোধকারীরা।

পুলিশ আসার পরেও অবরোধ না ওঠায় শেষে ঘটনাস্থলে এসে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন বরাহনগর ও কামারহাটির দুই কাউন্সিলর, দীপঙ্কর ভট্টাচার্য এবং সৌমিত্র পুততুণ্ড। দীপঙ্কর বলেন, ‘‘বাসিন্দাদের দাবি অন্যায্য নয়। আন্ডারপাস বা ফুট ওভারব্রিজ যদি করা না যায়, তা হলে অন্তত একটা লেভেল ক্রসিং করা প্রয়োজন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Railway Strike DumDum Belgharia Indian Railway
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy