বিফল: বুধবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ উল্টোডাঙা মোড়ের ছবি। পুলিশের সামনেই বিধি ভেঙেছে পুজো-জনতা। নিজস্ব চিত্র।
করোনাকালে পুজোর ভিড় যাতে সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ না হয়ে ওঠে, তার জন্য কলকাতা হাই কোর্টের পাশাপাশি বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করেছিল রাজ্য সরকারও। কিন্তু সেই সব বিধি বহু ক্ষেত্রেই মানা হয়নি বলে অভিযোগ। বিধিভঙ্গের এই সমস্ত ঘটনায় সাধারণ মানুষের অসচেতনতা ও পুজো কমিটিগুলির দায়বদ্ধতার অভাবের পাশাপাশি আঙুল উঠেছে পুলিশের দিকেও।
পুজোর মণ্ডপ দর্শকশূন্য রাখা থেকে শুরু করে অঞ্জলি এবং বিসর্জন— সব কিছুই বিধি মোতাবেক হওয়ার কথা ছিল। সেই সঙ্গে এ বছর জাঁকজমক যতটা সম্ভব কম রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল পুজো কমিটিগুলিকে। কিন্তু শহরের বহু জায়গাতেই তা মানা হয়নি বলে অভিযোগ। দর্শকেরাও বিধি শিকেয় তুলে ভিড় করেছেন যথেচ্ছ ভাবে। তবে তা আটকাতে পুলিশ কি আদৌ সচেষ্ট ছিল? পুজোর ক’দিন
রাস্তায় ভিড় সামলানোর ক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও তাই প্রশ্ন উঠেছে। সচেতন নাগরিকদের একাংশের মতে, পুলিশ আরও কঠোর হলে পরিস্থিতি হয়তো এতটা লাগামছাড়া হত না!
শুক্রবার থেকেই শুরু হয়েছে প্রতিমা বিসর্জন। সরকারি বিধি মেনে ১৮ তারিখের মধ্যেই বিসর্জন-পর্ব মিটিয়ে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিসর্জনের ক্ষেত্রে পুলিশকে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গেলেও
পুজোর ক’দিন তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। ভিড় সামলানোর ক্ষেত্রে ব্যর্থতার পাশাপাশি মাস্ক না পরে রাস্তায় বেরোলেও বহু ক্ষেত্রে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। উল্টোডাঙার বাসিন্দা নিরঞ্জন ভট্টাচার্য বললেন, ‘‘কাতারে কাতারে মানুষ রাস্তায় নেমেছিলেন। অধিকাংশের মুখেই মাস্ক ছিল না। পুলিশের সামনে দিয়ে চলে গেলেও পুলিশকে কার্যত কোনও ব্যবস্থাই নিতে দেখা যায়নি।’’
পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন পুজোর উদ্যোক্তাদের একাংশও। উত্তর কলকাতার একটি পুজো কমিটির উদ্যোক্তা বলেন, ‘‘আদালত ও সরকারের নির্দেশিকা মেনে আমরা ব্যারিকেড বসানো থেকে বিধি মেনে মণ্ডপ তৈরি, সবই করেছি। কিন্তু অনেকেই ব্যারিকেড ভেঙে মণ্ডপের ভিতরে ঢুকেছেন। এটা সামলানো তো আমাদের কাজ নয়।’’
পুজোর ক’দিন মাস্ক ছাড়া যাঁরা রাস্তায় বেরিয়েছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কি পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে? এ ব্যাপারে লালবাজারের দেওয়া সংখ্যাতেই গাফিলতির প্রমাণ মিলছে বলে অভিযোগ। কারণ অনেকের মতে, যত সংখ্যক মানুষ মাস্ক না পরে বেরিয়েছেন, তার তুলনায় ব্যবস্থা নেওয়ার সংখ্যাটা বেশ কম। বহু ক্ষেত্রে সব দেখেও নাকি দেখেনি পুলিশ। ভিড় সামলানোর ক্ষেত্রেও একই অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
পুলিশ কি তা হলে ব্যর্থতার দায় মেনে নিচ্ছে?
লালবাজারের পুলিশকর্তাদের অবশ্য দাবি, ‘‘ভিড় সামলানোর ক্ষেত্রে প্রথম থেকেই সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে পুলিশ। গাড়ির গতি ঠিক রাখতে বহু রাস্তায় গাড়ির ভিড় কমানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। জায়গায় জায়গায় পরিস্থিতি বুঝে অতিরিক্ত পুলিশকর্মীও মোতায়েন করা হয়েছে। সরকারি বিধি বলবৎ করতে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধিতেও জোর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কয়েকটি পুজোকে ঘিরে সাধারণ মানুষের অত্যধিক রকমের আগ্রহ থাকায় শহরের কিছু এলাকায় ভিড় হয়েছিল। তবে পুলিশি গাফিলতি কোথাও
ছিল না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy