Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
R G Kar Hospital Incident

ভাঙার লিখিত নির্দেশ ছিল না

প্রশ্ন হল, সরকারি মেডিক্যাল কলেজে টেন্ডার বা লিখিত নির্দেশ ছাড়া তড়িঘড়ি ভাঙার কাজ শুরু করা হল কী ভাবে? নেপথ্যে কি প্রমাণ লোপাটের কোনও অভিসন্ধি রয়েছে।

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০২৪ ১০:১২
Share: Save:

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের সেমিনার রুম (ঘটনাস্থল) সংলগ্ন এলাকায় তথাকথিত সংস্কারের কাজ শুরুর নির্দেশ দিয়েছিল কে? সেই ধোঁয়াশা এখনও কাটেনি। কেউ অভিযোগ তুললেন, ওই কাজের নির্দেশ দিয়েছিলেন সদ্য প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। কেউ আবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষ কর্তার দিকে অভিযোগের আঙুল তুললেন। তবে মোটামুটি স্পষ্ট, ওই সংস্কারের কাজের জন্য লিখিত কোনও নির্দেশ ছিল না। সেমিনার রুমের সংলগ্ন ঘর ভাঙা নিয়ে এ দিন কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বিজেপির আইনজীবী নেতা কৌস্তভ বাগচী।

প্রশ্ন হল, সরকারি মেডিক্যাল কলেজে টেন্ডার বা লিখিত নির্দেশ ছাড়া তড়িঘড়ি ভাঙার কাজ শুরু করা হল কী ভাবে? নেপথ্যে কি প্রমাণ লোপাটের কোনও অভিসন্ধি রয়েছে।

আরজি করের জরুরি বিভাগের পালমোনারি মেডিসিন বিভাগের যে ঘর থেকে তরুণীর দেহ উদ্ধার হয়েছিল, সেটি সংলগ্ন দু’-তিনটি ঘর ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে মঙ্গলবার বিকেলে। বিষয়টি জানতে পেরে সিবিআইয়ের তরফেও কলকাতা পুলিশকে ইমেল করে জানানো হয়, ঘটনাস্থল সংলগ্ন জায়গায় কোনও নির্মাণকাজ কাজ করা যাবে না।

সূত্রের খবর, ওই দিন আরজি কর হাসপাতালে এসেছিলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যেরা। প্রথমে তাঁরা নতুন অধ্যক্ষ সুহৃতা পালের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে নিরাপত্তা এবং হাসপাতালের পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তার পরে ঘটনাস্থলে যেতেই চোখে পড়ে, ভাঙার কাজ চলছে। তখন, নতুন সুপার তথা উপাধ্যক্ষ বুলবুল মুখোপাধ্যায়ের কাছে তাঁরা জানতে চান, কার নির্দেশে সেমিনার রুম সংলগ্ন জায়গায় ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে? জানা যাচ্ছে, তখন সুপার জানান, কাজ শুরু হয়েছে সদ্য বদলি হওয়া অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের নির্দেশে। এর পরেই জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য নির্দেশ দেন, অবিলম্বে কাজ বন্ধ করতে হবে। সেই খবর পৌঁছয় স্বাস্থ্য ভবনেও। এর পরেই সুহৃতা অবিলম্বে কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন।

এ দিন সুহৃতা দাবি করেছেন, জরুরি বিভাগের চারতলায় কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে মঙ্গলবার সকাল থেকেই। তিনি আরও বলেছেন যে, “কাজ করা যাবে কি না, তা কলকাতা পুলিশের কাছেও ই-মেল করে জানতে চেয়েছিলাম।” এর পরে কলকাতা পুলিশের ডিসি (উত্তর)-এর তরফেও সিবিআইয়ের নির্দেশ জানিয়ে দেওয়া হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।

এ দিন মানবাধিকার কমিশনের প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে বেরোনোর সময় পালমোনারি মেডিসিন বিভাগের প্রধান চিকিৎসক অরুণাভ দত্ত চৌধুরী জানান, সেমিনার রুম থেকে কয়েক পা দূরে থাকা ঘর ভাঙা হয়েছে। কারণ কী? তিনি বলেন, “অন ডিউটি চিকিৎসকদের বিশ্রামের জন্য ঘর তৈরি হচ্ছিল।” তাঁর বক্তব্য, “আমি তো নির্দেশ দিতে পারি না। এমন কাজের নির্দেশ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একমাত্র দিতে পারেন।”
‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টর্স’-এর দাবি, তরুণীকে খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রধান ফোনে পূর্ত দফতরকে কাজ শুরুর নির্দেশ দিয়েছিলেন। কাজ শুরু হয়নি। তার পরে, শনিবার আরজি করে গিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষ আধিকারিক তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ঘরে বিশেষ বৈঠক ডেকে কাজ শুরু করতে বলেন। তবে স্বাস্থ্য দফতরের ‘প্রধান’ এবং শীর্ষ কর্তার কোনও নাম তাদের বিবৃতিতে প্রকাশ করেনি ‘জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টর্স’।

রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, “আমি ভাঙাচোরা করে কাজ শুরুর কোনও নির্দেশ দিইনি।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy