আর জি কর-কাণ্ডে বার বার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ সামনে এসেছে। —ফাইল চিত্র।
আগের সমস্ত বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে পাঁচ বছর আগে, ২০১৯ সালে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, হাসপাতাল ও অন্য স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকা জারি করেছিল। ‘গাইডলাইন্স ফর হসপিটাল সিকিয়োরিটি পারপাস’
শীর্ষক ওই নির্দেশিকায় হাসপাতাল চত্বরে কোনও ঘটনা ঘটলে কর্তৃপক্ষের কী করণীয়, তা স্পষ্ট ভাবে বলা ছিল। আরও বলা ছিল, সংশ্লিষ্ট ঘটনাকে পুলিশে নথিভুক্ত করতে হলে কী কী করতে হবে।
অথচ, আর জি কর-কাণ্ডে বার বার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির অভিযোগ সামনে আসার পরে প্রশ্ন উঠেছে, এমনিতে অগুনতি সরকারি নির্দেশিকা শুধু খাতায়কলমেই থাকে। এমনও উদাহরণ রয়েছে যে, অনেক সময়ে বছরের পর বছর একই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। কিন্তু হাসপাতালের মতো স্পর্শকাতর এলাকার নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও যদি সেই নির্দেশিকা কার্যত মূল্যহীন হয়ে পড়ে, তা হলে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা যাবেন কোথায়? কোন ভরসায় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কাজ করবেন তাঁরা?
সরকারি নথি জানাচ্ছে, ২০১৯ সালের ১৯ জুন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের জারি করা
নির্দেশিকায় হাসপাতাল চত্বরে ঘটা কোনও ঘটনার পুলিশে অভিযোগ দায়েরের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নিয়মবিধি পালনের কথা বলা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ক্ষেত্রে যেখানে ঘটনা ঘটেছে, সেই বিভাগ/শাখা সংশ্লিষ্ট ঘটনা জানাবে মেডিক্যাল সুপার তথা ভাইস প্রিন্সিপালকে (এমএসভিপি)। তিনি স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করবেন। হাসপাতালের ক্ষেত্রে সেখানকার সুপারের দায়িত্ব ঘটনাটি পুলিশে জানানোর। অন্য স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সংশ্লিষ্ট ব্লক মেডিক্যাল অফিসার বা দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য আধিকারিক থানায় অভিযোগ দায়ের করবেন।
নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছিল, দেরি না করে সংশ্লিষ্ট অভিযোগের প্রতিলিপি পাঠাতে হবে স্বাস্থ্য-অধিকর্তা, স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা, সংশ্লিষ্ট জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, নগরপাল-সহ সব পক্ষের কাছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, পাঁচ বছর আগে জুনের ওই নির্দেশিকা রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল (ডিজি), ইনস্পেক্টর জেনারেল (আইজি), কলকাতার নগরপাল, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের সব শীর্ষ কর্তা, রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ, এমএসভিপি-সহ সব পক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছিল।
কিন্তু এত কিছুর পরেও আর জি কর-কাণ্ডে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উঠেছে, তাতে প্রশ্ন জেগেছে, আদৌ এই নির্দেশিকার গুরুত্ব আছে কি? না হলে হাসপাতাল চত্বরে এত বড় কাণ্ড ঘটার পরে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা যথাযথ হলে, এই নির্দেশিকা অক্ষরে-অক্ষরে মানা হলে তাঁদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠত না!
আর জি করের এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘সমস্যা হল, নির্দেশিকা জারি করা আর তা পালনের মধ্যে বিস্তর তফাত থাকে। অন্য সময়ে হয়তো সেগুলি চোখ এড়িয়ে যায়। কিন্তু এই বর্বরোচিত ঘটনায় সরকারি নির্দেশিকা, তা যতই গুরুত্বপূর্ণ হোক না কেন, তার আদতে যে কোনও গুরুত্ব নেই, সেটা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।’’ আর এক চিকিৎসক বলছেন, ‘‘সবটাই প্রহসন! না হলে এত বড় ঘটনার নিষ্পত্তি করতে এত দিন লাগে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy